আলী আহমদ, জগন্নাথপুর
এপ্রিল ২০, ২০২০
০২:৪৮ পূর্বাহ্ন
আপডেট : এপ্রিল ২০, ২০২০
০২:৪৮ পূর্বাহ্ন
মুহুর্মুহু বিকট বজ্রধ্বনি, সেই সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া আর গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। এমন বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে পাকা ফসল গোলায় ৎলতে ষাটোর্ধ্ব কৃষক তাঁর তিন ছেলেকে নিয়ে ধান কাটতে মাঠে লড়ছেন।
গতকাল শনিবার (১৮ এপ্রিল) বেলা ১টার দিকে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের পাঠার হাওরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
হাওরে কথা হয় ওই কৃষক সমসের আলীর সঙ্গে। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, করোনাভাইরাসের কারণে বাইরের এলাকা থেকে এবার ধান কাটার শ্রমিক আসেনি। দুই/তিন আগে জমির বোরো ধান পেকেছে। কিন্তু কাটার লোক নেই। এর মধ্যে শুরু হয়েছে ঝড় আর শিলাবৃষ্টি। ফসল হারানোর ভয়ে শ্রমিক না পেয়ে নিজের তিন ছেলেকে নিয়ে ধান কাটতে শুরু করেছেন। এবার তিনি ২৫ কেদার জমিতে ফলন করেছেন বলে জানান। এর মধ্যে তিন কেদার জমির ধান কেটেছেন।
সমসের আলীর সঙ্গে তার কলেজপড়ুয়া ছেলে নবী হোসেন ধান কাটছিল। নবী হোসেন জানায়, শ্রমিকের অভাবে আমার বাবার কষ্টার্জিত ফসল হারানোর শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাই বাবার কষ্টের ফসল গোলায় তুলতে ধান কাটছি।
কৃষক সমসের আলীর মতো শত শত কৃষক এখনও প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে ধান তুলতে লড়ছেন। এই লড়াইয়ে কৃষককে সাহায্য করতে মাঠে নেমেছে অনেক পরিবার।
গত শুক্রবার মধ্যরাত থেকে দুপুর পর্যন্ত ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে ভারী বর্ষণ বয়ে যায় উপজেলার ওপর দিয়ে। গতকাল শনিবার দুপুরে নলুয়ার হাওরে শিপন মিয়া নামের এক রাখাল বজ্রপাতে মারা যান। এছাড়াও বজ্রপাতে নুরুল হক নামে আরেক কৃষকের একটি গবাদি পশু ঝলসে গিয়ে মারা যায়।
জগন্নাথপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা শওকত ওসমান মজুমদার বলেন, শ্রমিক সংকটে ধান কাটা কিছুটা বিঘ্নিত হচ্ছে। এর মধ্যে বৈরী আবহাওয়ার কারণে আগাম বন্যার শঙ্কায় আছেন কৃষকরা। জমির পাকা ধান দ্রুত সময়ের মধ্যে কাটার জন্য আমরা কৃষকদের তাগিদ দিচ্ছি।
এএ/আরআর