শাবিপ্রবি প্রতিনিধি
মে ০৬, ২০২১
০৮:৩৮ অপরাহ্ন
আপডেট : মে ০৬, ২০২১
০৮:৩৯ অপরাহ্ন
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি)রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সাব্বিরের দুর্ঘটনাকে হত্যাকণ্ড উল্লেখ করে হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট শাবি শাখা।
আজ বৃহস্পতিবার (৬ মে) সকালে সংগঠনটির দপ্তর সম্পাদক মো. তানভীর রহমান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় ,গত বুধবার রাত নয়টায় শাবির রসায়ন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী সাব্বির আহমেদ সিলেটের সুবিদবাজার এলাকায় ট্রাক-চাপায় নিহত হন। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, শাবিপ্রবি শাখা তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করছে।
পাশাপাশি সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তৌহিদুজ্জামান জুয়েল এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইউশা রশিদ এক যৌথ বিবৃতিতে জানান, সিলেট শহরে ও শহরের আশেপাশে ট্রাক চালকদের বেপরোয়া যান চলাচলের ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলছে। একই সড়কের ফাজিলচিস্ত এলাকায় গত ১১ জানুয়ারি রাত ১০টায় লুৎফর রহমান এবং সজীব মিয়া নামের দুই মোটরসাইকেল আরোহী ট্রাক চাপায় নিহত হন। গত মঙ্গলবার সিলেটের ওসমানী নগরে ভোলাগঞ্জ হতে পাথর বোঝাই ট্রাকের চাপায় নিহত হন মান্নান হাওলাদার।
তাছাড়া, গত ৩ মে জৈন্তাপুরে সিলেট থেকে জাফলংগামী একটি ট্রাকের চাপায় ৩ জন নিহত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটার মাত্র ২ দিনের ব্যবধানে সিলেট শহরের কেন্দ্রে সাব্বিরের উপর ট্রাক চালিয়ে দেয়া হয়। নেতৃবৃন্দ সাব্বির আহমেদ এর ঘাতক ট্রাকের মালিক-পক্ষকে এবং চালককে দ্রুত বিচারের আওতায় এনে তাদের শাস্তি দাবি করেন।
বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, সিলেট নগরীতে সন্ধ্যা ৭টা হতেই শহরের ছোট সড়ক-গুলোয় পাথরবাহী ট্রাক এবং অন্যান্য ভারী যানবাহন চলাচল শুরু করে। সিলেট নগরীর কিছু সড়কের রয়েছে ৪ লেন এবং এবং অধিকাংশই ভারী যান চলাচলের উপযুক্ত নয়। এমতাবস্থায় সিলেট শহরের ভিতরে ভারী যান চলাচলের কোন যৌক্তিকতা নেই। এবং ভারী যানবাহন যদি চলেও তা সন্ধ্যা ৭টা কিংবা ৮টা নয় রাত ১২টার পর চলা যুক্তিসংগত। অন্যান্য শহরের মত শহরের বাইরে দিয়ে বাইপাস না থাকার পরও কেন সিলেট শহরের সড়কে ভারী যানবাহন অনির্দিষ্ট সময়ে চলাচল করছে এবং গতিরও সীমা নেই কেন - সেটারও কোন সঠিক জবাব নেই !
এছাড়া, শহরের মানুষের যাতায়াতের প্রধান বাহন সি.এন.জি , রিক্সা, সাইকেল, এবং মোটরসাইকেল। যার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও সাইকেল , মোটরসাইকেল ও সি.এন.জির উপর অনেকটাই নির্ভরশীল। ৭টা থেকে গাড়ি ভারী যান প্রবেশের অধিকার দেয়ায় সিটি কর্পোরেশন ও সড়ক-জনপথের দায়িত্বরতদের এরূপ কাজ দন্ডনীয় অবহেলা ও অপরাধ । সাথে, ভারী-যান চালকদের বেপরোয়া গাড়ী চালানো, সিলেট নগর বাসীর জন্য ও শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর জন্যও হুমকি স্বরূপ।
এসব বিষয় বিবেচনা করে আমরা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সাব্বির হত্যার প্রতিবাদে এবং সিলেটে ভারী যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের জন্যে ৫ দফা দাবি উত্থাপন করছি এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আহ্বান করছি উক্ত দায়ী ব্যক্তিদের নামে মামলা করে ও নির্দিষ্ট প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে দ্রুত সমস্যা সমাধানের জন্য ।
দাবিগুলো হলো:
১. ভারী যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণে অবহেলায় জড়িত সিটি কর্পোরেশন ও সড়ক জনপথের দায়িত্ব প্রাপ্ত দের বিচারের আওতায় আনতে হবে ।
২. ঘাতক ট্রাক ড্রাইভার এবং ট্রাক মালিককে দ্রুত বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে ।
৩. দ্রুততম সময়ের মধ্যে সিলেটে প্রয়োজনীয় সকল বাইপাস তৈরি করা যেন সিলেট শহরে দূরপাল্লার ভারী-যানবাহন প্রবেশ করে জনজীবনের ক্ষতি না করে।
৪. সকল ভারী যানবাহনের সর্বোচ্চ গতি সীমা ২০কিমি/ঘণ্টা তে নিয়ে আসতে হবে ।
৫. বাইপাস যতদিন তৈরি না হচ্ছে সিলেট শহরে সকল প্রকার ভারী যানবাহন চলাচলে নির্দিষ্ট সময় রাত ১২টা থেকে ভোর ৬টা করা এবং ওভারটেকিং এ কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে।
এইচএন/আরসি-০৬