Cinque Terre

ফাহাদ মোহাম্মদ

০২ সেপ্টেম্বর , ২০২০


প্রাবন্ধিক


যোগ্যরাই টিকে থাকে

আগেকার রাজা বাদশারাও সাজসজ্জা করতেন নিজেদের সুন্দর করার জন্য। কিন্তু বর্তমানে মানব সমাজে সাজসজ্জা নারীর কর্তৃত্বে চলে গেছে। তবে আফ্রিকার অনেক অঞ্চলে এখনো নারী থেকে পুরুষরাই বেশি সাজগোজ করে। 

লক্ষ লক্ষ বছর ধরে চলতে চলতে মানব সভ্যতা আজকের অবস্থানে এসে পৌঁছেছে। অঞ্চল ভেদে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য জাতিগোষ্ঠীর। প্রতিটি জাতিগোষ্ঠীর রয়েছে স্বতন্ত্র ভাষা ও সংস্কৃতি। খাদ্যাভ্যাস, পোশাক পরিচ্ছেদ, পরিবার প্রথা, শিক্ষা ব্যবস্থা, আচার আচরণের মাধ্যমেই প্রকাশ পায় জাতিগত ভিন্নতা। সংস্কৃতি আর ভাষার ভিন্নতাই সৃষ্টি করেছে আলাদা আলাদা সভ্যতা। 

সভ্যতা একেক অঞ্চলে একেকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ভারতবর্ষে একরকম সভ্যতা আরবে আরেক রকম, আফ্রিকায় একরকম ইউরোপে আমেরিকায় অন্যরকম সভ্যতার সৃষ্টি হয়েছে। যেহেতু আধুনিক যুগের আগে যোগাযোগ ব্যবস্থা এতটা সহজ ছিল তাই একটি সভ্যতার সঙ্গে আরেকটি সভ্যতার খুব একটা মিল খুঁজে পাওয়া যায় না।

বিজ্ঞানের আশীর্বাদে মানব সভ্যতা আজ বিশ্বায়নের রূপ নিয়েছে। এক অঞ্চলের সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে যাচ্ছে অন্য অঞ্চলের সংস্কৃতি। এক ভাষার সঙ্গে অন্য ভাষা মিশে সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন শব্দ। সভ্যতা সংস্কৃতি একটি চলমান নদীর মতো। গতি পথে সে যা পায় তাই সে নিজের মধ্যে ধারণ করে নেয়।

ইউরোপীয় সংস্কৃতির দ্রুত বিকাশের অন্যতম কারণ হলো তথ্যপ্রযুক্তির সহজলভ্যতা। যেকোনো জাতিগোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে সবার আগে দরকার পড়ে তার সংস্কৃতির ওপর নিয়ন্ত্রণের। সাংস্কৃতিক আগ্রাসন এক জাতিকে অন্য জাতির অনুসারীতে রূপান্তর করে। গত ৩০ বছরে আমাদের পোশাক পরিচ্ছেদ, খাদ্যাভাসের যে পরিবর্তন হয়েছে সেটা হয়তো গত দুইশো বছরে হয়নি। আবার গত দুইশো বছরে যেটা হয়েছো সেটা হয়তো গত এক হাজার বছরেও হয়। বিশ্বটা যখন হাতের মুঠোয় তখন আগামী দুইশো বছরে হয়তো বিশ্বে সংস্কৃতির বৈচিত্র্য খুব একটা থাকবে না। 

আর হয়তো নতুন সংস্কৃতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া ছাড়া অন্য কোনো রাস্তাও খোলা থাকবে না। প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে পৃথিবীতে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীরা টিকে থাকে। | Survival of the fittestÕ যোগ্যরাই টিকে থাকবে। অযোগ্যরা অতীতে যেমন হারিয়ে গেছে ভবিষ্যতেও হারিয়ে যাবে।