Cinque Terre

পার্থ প্রতিম নাথ

২৪ মে , ২০২০


রম্যলেখক


করোনাকাল ও আম্বরআলীর বই পড়া

হাতেগোনা কয়েকটা দিন বাকি। আম্বরআলীর ঊনষাট বছর পূর্ণ হবে। বাংলাদেশ সরকারের চাকরি থেকে বিদায় হবেন। নিজে না গেলে তাড়িয়ে দেবে। এটাই সিস্টেম। তাই তিনমাস আগে পি আর এল এর আবেদন করতে হয়। রাজি আছেন আম্বরআলী। অনেক হয়েছে। না কেরাণি, না অফিসার গোছের চাকরি একখান। বড় ত্যাঁদড়ামি করে সারাটি চাকরিজীবন পার করে এসেছেন। আর কয়টা দিন পার করলেই বাঁচেন। কিন্তু দিন যত যাচ্ছে মায়া কেন যে বাড়ছে ওর প্রতি? পঁয়ত্রিশ বছরের চাকরিটা। মায়াতো একটু লাগবেই। এই সাইনবোর্ডের আড়ালেই এতদিন নিজে খেলেন, বউ-বাচ্চা খাওয়ালেন। 

আম্বরআলীর নিজের মোটা শরীরটার দিকে তাকান। ভাবেন। পঁয়ত্রিশটা বছর চাকরিটাকে বাঁচিয়েছেন তিনি। সরকারি চাকরি করতে হয় না। বাঁচাতে হয়। বিশাল বিশাল সরকারি দপ্তরের দিকে তাকালে আম্বরআলী বুঝতে পারেন, তিনি একা নন। বড় বাবু ,ছোট বাবু সবাই চাকরি করার জন্য নয়, বাঁচানোর ধান্ধাতেই দৌঁড়াচ্ছেন। বাইরে ভাব দেখান, করিৎকর্মা; ফেসবুকে বিশ্বকর্মা। আসলে চক্রাকারে সবাই গা বাঁচানোতে ব্যস্ত। কেউ গতরে তেল মেখে নাদুস হচ্ছেন, আবার কেউ উপর-নিচের চাপায় পিষ্ট হয়ে চ্যাপ্টা হয়ে টিকে আছেন। তাই আম্বরআলীর শরীরটা এত চ্যাপ্টা হয়েছে! দেয়ালের মত।

আম্বরআলীর চায়ের নেশা। ভরা এককাপ দুধ চা,(খাসিয়া পান+মজা সুপারি+হাকিমপুরী জর্দা) পানের খিলি দিনে-রাতে অন্তত পনের পিস। প্রতিবারেই নিয়ম করে একটা স্টারফিল্টার সিগারেট। জলহস্তীর মত জাবর কাটেন আম্বরআলী। অফিসের বিভাগীয় মিটিং, কিংবা ঢাকা শহরের ট্রেনিং কোনটাই আম্বরআলীর নেশায় আজ পর্যন্ত বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। ইদানিং নতুন একটি নেশা তার হয়েছে। একলা থাকার নেশা। নিজেকে নিজের করে পাওয়ার নেশা। অবশ্য এতে কেউ বাঁধ সাধছে না। সবাই তার নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত। আম্বরআলীর এ পরিবর্তন কারোর কছে ধরাই পড়ছেনা।

দুই

দেশে করোনা রোগী ধরা পড়েছে। সবাই সামাজিক বিচ্ছিন্নতা মেনে চলছে। আম্বরআলী হাসেন। বড় মূল্যবান হাসি। কবেই যে আমরা সামাজিক ছিলাম! তার ভালোই হয়েছে। এটাইতো তিনি চেয়েছিলেন। কিন্তু অফিসটা করতে হচ্ছে। এটা একটা ঝামেলা। এতে একাকীত্ব হারানোর পাশাপাশি কোভিড-১৯ এ মরার ভয়। এতদিন মরার চিন্তা মাথায় ছিল না। এখন মরার প্রতীক মুখে, মুখে। সবাই মাস্ক পরে করোনাকে কলা দেখাবার চেষ্টা করছে। পারছে কই? সারাবিশ্বে মরছে লাখে-লাখ।

মাত্র ক‘দিন আগেই ভাবছিলেন, কীভাবে অবসর কাটাবেন। কোথায় যাবেন? গ্রামে বাড়ি আছে। কিন্তু যাওয়ার উপায় নেই। অনেক আগেই ঘুড়ির সূতো কেটে গেছে, চাহিদামতো সূতা যোগানের অভাবে। স্বল্প শিক্ষা পুঁজি করে শহরে এসেছিলেন আম্বরআলী। স্বপ্ন ছুঁই ছুঁই করে, হল না। কোনরকমে হাফ কেরাণি কাম হাফ অফিসার হয়ে জীবন কাটিয়ে এসেছেন। বিনিময়ে হারাতে হয়েছে আত্মীয়-স্বজন। জীবনের শেষ সময় কোথায় কাটবে এটাই ছিল একমাত্র ভাবনা। কোত্থেকে এসে জুটল করোনা। এখন সবকিছু ফেলে রাত-দিন মৃত্যুচিন্তা করতে হচ্ছে। আসলে মৃত্যুচিন্তা নয়। মরার পর মোটা শরীরটার কি হবে ? শেয়াল কুকুর খাবলে খাবে, ভাবতেই পারছেন না আম্বরআলী। করোনায় না মরলেও সমাজ মানবে না। করোনার রোগী না হয়েও করোনার লাশ হতে হবে। কেউ ছোঁবে না। প্রাণের চেয়ে শরীরের মায়াটা বেশি আম্বরআলীর। সার্টিফিকেটের জোর কম থাকলেও ,মোটা শরীরখানার বদৌলতে অনেক জায়গায় চেয়ার পেয়েছেন প্রথম সারিতে।

নিজের গ্রামের ভিটেতে, প্রিয় শরীরটা ডুবে থাক। এ ই ইচ্ছা আম্বরআলীর। কিন্তু ভাই ভাতিজা তা হতে দিবে কী ? মনে হয় না। জীবন্ত আম্বরআলী কে যারা ত্যাগ করেছে, আম্বরআলীর লাশকে তারা ঠাঁই দেবে কেন ? স্ত্রীর সক্সেগ আলাপ করলেন। তেমন ভালো ফল পেলেন না। ‘কী আহামরি একখান শরীর ,তার জন্যে ভাবনা। দৈত্য যেমন। বড় সাইজের লাক্স সাবানে একদিনও পার হয় না।’ গোসলে এইবেলা সাবান পাননি ,তাই স্ত্রী একহাত নিলেন। পরে অবশ্য সান্ত¦না দিলেন। ‘এত ভেবোনাতো। একটা কিছু হবে। আমি আছি, তোমার ছেলে-মেয়ে আছে। তাদের একটা মান সম্মান আছে না। তোমার শরীরের হিল্লে একটা হবেই। পেনশনের নমিনি ঠিক করেছ? ভুল যেন না হয়। এ করোনা সময়ে মরলে, তোমার লাশ নিয়ে ভাবতে হবে না। সরকারই ব্যবস্থা করে দিবে। ভাই ভাতিজা, বাঁধা দেওয়াতো দূরের কথা, লাশ দেখতেই আসবে না।’

আর লাশ নিয়ে ভাববেন না আম্বরআলী। তওবা করলেন। স্ত্রীর হাতে অলরেডি তার মরণ হয়েছে। আর কী বাসায় থাকা যায়?

আম্বরআলী এখন ডরমেটরীতে থাকেন। অফুরন্ত সময়, অনন্ত ভাবনা। বইপড়ে সময় কাটাতে চাইলেন। কিন্তু লকডাউনে দোকানতো বন্ধ। বইয়ের দোকান খোলার কথা কেউ ভাবতেই পারে না। বাঙালির কাছে বই তেমন জরুরি বিষয়ই না। অবশ্য ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবই হলে অন্যকথা। অফিসের কম্পিউটারে অনলাইনে, বইয়ের হাটে বইয়ের সন্ধান পেলেন। শুরু হল পড়া। কতদিন বই পড়েন না। বাঙালি চাকরি পাওয়ার পর আর বই পড়ে না। যদিও পড়ে তবে তা প্রশিক্ষণের বই। চাকরির নিয়ম কানুনের বই। শেয়ার বাজারে টাকা খাটানোর বই। আর চরম দুর্দিনে ধর্মের বই। আম্বরআলী ব্যতিক্রম না। তবুও বই পড়তেই চাইলেন আম্বরআলী। প্রথম প্রথম তেমন সুবিধে করতে পারলেন না। তাই প্রথম দিন বইয়ের নাম পড়েই কাটালেন। 

সাধারণ ছুটির মধ্যে সীমিত পরিসরে কাজ করেন। আর বই পড়েন আম্বরআলী। ছাপা বইয়ের স্বাধ মিটে না কম্পিউটার বইয়ে। তবু কয়েকদিনে মানিয়ে নিয়েছেন। ত্রিশ-বত্রিশ দিনে অনেকগুলো বই পড়ে ফেলেছেন। এর মধ্যে দু একটা বই আগে পাঠ্যসূিচতে পড়েছেন। তবে আগের চেয়ে এবারের পড়া ভিন্ন রকম। বঙ্কিম থেকে রবীন্দ্রনাথ, মীর মোশাররফ থেকে আহমদ ছফা। গল্প, গদ্য, পদ্য, উপন্যাস, নাটক, কাব্য, রসরচনা কিছুই বাদ দিচ্ছেন না আম্বরআলী। দেশী-বিদেশী, খ্যাত-অখ্যাত কেউ বাদ পড়ছেন না। আম্বরআলী খাওয়া-দাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন। এখন তার সামনে পড়া আর পড়া। পড়তে পড়তে আম্বরআলী নিশ্চিত হলেন, তিনিও বিশ্ব সাহিত্যের একটি চরিত্র। তবে কোথাও নিজেকে খোঁজে পাচ্ছেন না। দাবি তুলছেন, হে মহৎ লেখকগণ, আমি কোথায়? আপনাদের রচনায় আমি কেন নিজেকে পাচ্ছি না ? সাহিত্যে জায়গা পাওয়া আমার মানবিক অধিকার। এ অধিকার থেকে আপনারা আমাকে বঞ্চিত করতে পারেন না। কবরের জায়গা না পেতে পারি, কিন্তু সাহিত্যে আমার জায়গা দিতেই হবে। আম্বরআলী ছাড়া আপনাদের সাহিত্যকর্ম বিফল।

ডরমেটরির সামনের পুকুর পাড়ে দুর্বাঘাসের নরম কার্পেটের ওপর বসে আছেন আম্বরআলী। তার কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম। তার মনে হচ্ছে তিনি ঘেমে নেয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তা হচ্ছে না। ঘাম শুধু কপালেই। কেন এমন হচ্ছে বুঝতে পারছেন না। অনেক চিন্তার পরে বুঝতে পেরেছেন। মাথা মু-ন হলে আর কিছু বাকি থাকে না। মাথা ঘামলে শরীরের প্রত্যেক অঙ্গই ঘামে। সে ঘাম দেখা যায় না , বুঝা যায়। আম্বরআলীর চিন্তার দিগন্ত খোলে যাচ্ছে। লেখকদের ওপর বিশ্বাস ফিরে আসছে তার। বাংলার সাহিত্যেকেরা গল্প, উপন্যাসে তার কথা না লিখলেও পৃথিবীর অন্যপ্রান্তে আফ্রিকা কিংবা আমেরিকায় কেউ হয়তো তার কথা লিখছে। একশ বছর পরে, কেউ হয়তোবা তা বাংলায় অনুবাদ করে নিবে। সাহিত্য আর নদী কেনোটাই সীমা মানে না। বান ডাকলে পানি আপনাতেই ছুটে আসে, নিমন্ত্রণ করতে হয় না। কেউ আটকাতেও পারে না। যে আটকাবে সেই ভেসে যাবে। করেনানাকালে আম্বরআলী সবাইকে বই পড়ে আত্মশুদ্ধির পরামর্শ দিবেন বলে স্থির করছেন। সাবান দিয়ে দেহ আর বই পড়ে মন পরিষ্কার করতে হবে। বাঁচতে হলে দেহ মন দুই ই পরিষ্কার রাখা চাই। আম্বরআলী ঠিক করলেন এখন থেকে গল্প শোনাবেন সবাইকে। বই পড়ার গল্প। প্রেমের গল্প, দ্রোহের গল্প, কষ্টের গল্প, সুখের গল্প, শোকের গল্প, মানুষের গল্প -অমানুষের গল্প। বাঁচার গল্প , মরার গল্প। যেখানেই বাঁচা –মরা সেখানেই সাহিত্য। সেখানেই নতুন গল্প। আম্বরআলীর বেঁচে ওঠার গল্প। কেরাণি আম্বরআলীর গল্প, অফিসার আম্বরআলীর গল্প, মোটা শরীরের আম্বরআলীর গল্প।

এখন মোটা শরীর নিয়ে চিন্তা করেন না আম্বরআলী। তিনি এখন শরীর ও মনের গল্প শোনান। একবার তার বসের সঙ্গে এক বড় সম্মেলনে গিয়েছিলেন আম্বরআলী। আয়োজকরা তার বিশাল শরীর দেখে, ভাবল তিনিই বস্। তাই তাকে অভ্যর্থনা করে, চেয়ারে বসার অহ্বান করল। তিনি জিব কেটে তা প্রত্যাখান করে, বস্ কে ওই চেয়ারে বসালেন। অফিসে ফিরে বস্ আম্বরআলীকে আচ্ছামত ধোলাই দিলেন। আর কোনদিন কোন সম্মেলনে বা কোথাও তার সফরসঙ্গী হতে নিষেধ করলেন। এই গল্প আজ তিনি নিজেকে তিনবার শোনালেন। তিনবার শোনানো মিথ্যে গল্পও সত্যি হয়ে যায়। আজ তিনি নিজেই বস তার অফিসের, তার নিজের রুমের, নিজের মনের।

করোনাকালে প্রকৃতি মুক্তির শ্বাস নিচ্ছে। শিমুল,পলাশ রঙিন করে তুলেছে প্রকৃতিকে। মানুষেরা রাস্তা, বন, সমুদ্র থেকে ভাগছে আর প্রকৃতি ইচ্ছেমত জাগছে। মানুষের ওপর প্রকৃতির এ এক অপরূপ প্রতিশোধ। পুরাতন আম্বরআলীর ওপর প্রতিশোধ নিচ্ছে নতুন আম্বরআলী। চা, পান , সিগারেটের নেশা ত্যাগ করেছেন। গোগ্রাসে গিলছেন হুমায়ুন আজাদ, আহমদ ছফা,শামসুর রাহমান, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, আরজ আলী, শীর্ষেন্দু, সুনীল ,শওকত ওসমান। সব মানুষ যখন ডরমেটরি, অফিস ছেড়ে পালাচ্ছে, আম্বরআলী তখন ঘাঁটি পেতে বসেছেন, অমৃতের সন্ধানে। অবসরের আগে নবজন্ম হয়েছে আম্বরআলীর।

করোনাকালে বই পড়ে আম্বরআলী নতুন মানুষ। আটান্ন বছর ছয় মাসের পূর্ব জীবন আর তাকে স্পর্শ করতে পারছে না। বঙ্গোপসাগরের নির্মল জলে ডলফিনরা যেভাবে নাচছে সমুদ্রকে একান্তভাবে কাছে পেয়ে , আম্বরআলীও সেভাবে নেচে যাচ্ছেন, নিজেকে একা পেয়ে। এটা মনের ভিতরের নাচন। বাইরে থেকে দেখা যায় না। তবে গভীরভাবে তাকালে, মুখে আনন্দের রেখা দেখা যায়। যদি দেখার মত চোখ থাকে। এখন সবাইকে ভালোবাসতে ভালোলাগে আম্বরআলীর। তিনি আর সাধারণ মানুষের মত জীবাণু আক্রান্ত নন। ক্রোধ, লোভ মোহ দূর হয়ে গেছে তার। কী অপূর্ব সুন্দর আম্বরআলী! কেউ তার সৌন্দর্য দেখতে পাচ্ছে না। শুধু তিনিই দেখতে পাচ্ছেন নিজেকে। কোন ময়লা নেই মনে। শুধু নির্মল বায়ু। এ তল্লাটের সবচে খারাপ লোক, জয়নাল মিয়া তার সামনে দিয়ে যাচ্ছিল। আগে হলে তাকে ডাকতেন না,ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নিতেন। এই জয়নালের সঙ্গে দেখা হওযার পর থেকে, জয়নাল নামের যেকোন মানুষকেই বিশ্রি লাগত তার কাছে। সেই জয়নালকেই আজ ভালো লাগল আম্বরআলীর। অফিসে ডাকলেন। বসালেন। চা অফার করলেন,যদিও নেই তবুও। জয়নালতো অবাক, তার মত খবিশ লোককে এত আদও যতœ কেন?

আম্বরআলী বলেন, ভাই আপনিতো আমার এদিকে তেমন আসেন না। আসবেন, গল্প করবেন। ভালো লাগবে। আপনার প্রতি আমার কোন ক্ষোভ নেই। আমি এখন আপনাকে ভালোবাসি। কেন জানেন? কারণ আমি এখন বই পড়ি। বই মানুষের অন্তরকে নির্মল করে। ভালো বই মানুষকে মানুষ-অমানুষ, জানোয়ার, ইতর-ভদ্র সবাইকে ভালোবাসতে শেখায়। এইতো দেখুন না আপনার মতো ইতরকে আজ আমার ইতর মনে হচ্ছে না। মনে হচ্ছে এইমাত্র পৃথিবীতে পা রাখা কোন দেবদূত।

জয়নাল ভাই, জানেন, আপনি যে মন্দ কাজ করেন, তা কিন্তু আপনার দোষে নয়। সক্রেটিস কি বলেছেন জানেন ? সক্রেটিস বলতে চান, মানুষ ইচ্ছাকৃতভাবে মন্দ করে না, করে অজ্ঞানতা, থেকে। এমনকি তিনি এও পর্যন্ত বলতে চান যে ভালোত্বের জ্ঞান থাকা সত্ত্বেও যে মানুষ ইচ্ছাকৃতভাবে মন্দ করে, সে মানুষ অনিচ্ছাকৃত মন্দকারীর চেয়ে ভালো। কেননা প্রথম ব্যক্তি জ্ঞানী না হলেও অসম্পূর্ণ জ্ঞানের অধিকারী, কিন্তু দ্বিতীয় ব্যক্তি সম্পূর্ণতো অজ্ঞান, তার কোন আশাই নেই। যে মানুষ ভালো এবং মন্দ কি তা জানে, সে ইচ্ছে করে মন্দকে পছন্দ করতে পারে না। সক্রেটিস এ বিষয়ে পুরোদস্তুর নিশ্চিত ছিলেন যে, প্রকৃত দুর্ভাগ্য একটি মন্দ করা এবং প্রকৃত সুখও একটি-ভালো করা। কোন মানুষেরই মন্দ করা উচিত নয়, শত্রুর প্রতিও নয়। হাসান আজিজুল হকের ‘সক্রেটিস’ বইটি পড়বেন জয়নাল ভাই , আরো জানতে পারবেন। চলেন, আপনাকে এগিয়ে দিয়ে আসি। ডরমেটরিতে যাব। অনেকগুলো বই ডাউনলোড দেওয়া হয়েছে, পড়তে হবে, সময় খুব কম, বড় দেরি হয়েছে শুরু করতে।

পাতলা শরীরের জয়নালের যেন দম বন্ধ হয়ে আসছিল। তার মনে হচ্ছিল, সে শয়তান, যে স্বর্গ থেকে সে বিতাড়িত হয়ে এসেছিল, সেই স্বর্গেই তাকে পৌঁছে দিতে চায় আম্বরআলী। সক্রেটিস এর কথা বহানা মাত্র।