আফছর আহমদ
৩১ মে , ২০২০
আইনজীবী ও চেয়ারম্যান ৪ নম্বর খাদিমপাড়া ইউনিয়ন, সিলেট সদর
করোনাকালে মানুষের পাশে যারা ছিলেন, তাঁদের অনেকেই আজ আক্রান্ত। তবে কোথায় জানি একটু প্রশান্তি রয়েছে। বিশেষ করে আমরা যারা জনপ্রতিনিধি, আমরা তো মানুষের কাছে থাকব অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়া চিকিৎসক ও প্রশাসনের লোকজনতো সরাসরি মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকার কথা। তাঁরা আছেনও। তাই আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যায় ওই মানুষগুলোই এগিয়ে।
গর্বের সঙ্গে বলছি, সরকারি লিষ্টের বাইরে, সরকারি প্রণোদনার বাইরে নিজের সব কিছু উজাড় করে দেশের মানুষের সেবায় নিজের জীবন বাজি রেখে অগ্রদূত হয়ে আছেন তাঁরা। দেশের মানুষও বলছেন, করোনাকালীন সময়ে করোনার বিরুদ্ধে ডাক্তার, নার্স, পুলিশ, সেনাবাহিনীর পাশাপাশি যুদ্ধে লিপ্ত আছেন রাজনীতিবিদ ও জনপ্রতিনিধিরা। কোনো কিছু পাওয়ার আশায় সেবা করা যায় না। তবু এই সেবার পরিধি বাড়ানোর জন্য শংশার বিকল্প নেই। প্রয়োজন স্বীকৃতিরও। তাহলেই রাজনীতির অশুভ শক্তির ক্ষয় হবে।
এবার মূল কথায় আসি। যা বলা অধিক গুরুত্ব মনে করি। জনপ্রতিনিধিদের কেউ যখন অন্যায় বা ভুল করেন, আমরা প্রতিবাদমুখর হই। এটি উচিত বলেও আমি মনে করি। পাশাপাশি তাদের ভালো কাজের প্রশংসাও চাই। কিন্তু আমার মনে হয়, আমরা প্রায়ই প্রাপ্য অধিকার পেতে বঞ্চিত হই। এই করোনাকালেই ধরেন, রাজনীতিবিদ ও জনপ্রতিনিধিরা তাঁরা সরকারি কোন প্রণোদনার আওতায়ও নয়, নয় সরকারি কোন বিশেষ সুযোগ সুবিধার আওতায়। এ বিষয়টি ভাবার সময় এসেছে।
আমরা যাঁরা রাজনীতি করি, রাজপথে মিছিল মিটিংয়ে আন্দোলন সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ি, যারা প্রতিনিয়ত সমাজের মানুষের জন্য সমাজের জন্য কাজ করি। সরকারের যে কোন নির্দেশনা সব সময় স্মরণ করি এবং সেই অনুযায়ী কাজ করি। দলের নির্দেশনা মেনে কাজ করি আমাদের কোন প্রণোদনা নেই। আমরা সরকারি কোন আর্থিক সাহায্য পাবো না। আসলে আমরা তা চাইও না।
আমাদের মত যাঁরা করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সময় মানুষের সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছে, ঘরে ঘরে গিয়ে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছে, সমাজ সেবায় এগিয়ে এসেছে তারা আজ অনেকেই করোনা ভাইরাস আক্রান্ত। আজ অনেক নেতৃবৃন্দ, সমাজসেবক, অনেক জনপ্রতিনিধি মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। আমাদের তো কোন কিছু চাওয়ার নেই। আমাদের চাওয়া আমরা জনগণের সেবায় কাজ করতে চাই। দল ও দেশের জন্য কাজ করতে চাই। তাই যারা এই করোনাকালীন সময়ে অসুস্থ হয়ে, করোনা আক্রান্ত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন সেই সকল নেতাকর্মীদের যাদের উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন বলে মনে করি। তাদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য আমাদের মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি স্যারসহ সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন জানাচ্ছি। আমাদের গণতন্ত্রের মানসকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমাদের আবেদন, যাঁরা আপনার নির্দেশে সব সময় মাঠে কাজ করেছে, জনগণের সেবায় কাজ করেছে, অসহায় মানুষের কাছে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে এবং এই কাজ করতে গিয়ে আজ তাঁরা করোনা আক্রান্ত হয়েছে তাদের মধ্যে যাদের উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন তাদেরকে দয়া করে আপনারা উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।
নিজের জীবন দিয়েই বিচার করছি। করোনা শুরু হওয়ার পর থেকেই সার্বক্ষনিক মাঠে ছিলাম, এখনও আছি। মধ্যে ১২-১৫ দিন খুব বেশি অসুস্থ ছিলাম। আমি কিছুদিন আগে করোনা পরীক্ষা করেছি। আলহামদুলিল্লাহ নেগেটিভ এসেছে। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, আবার পরীক্ষা করতে হবে। তাই বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছি। আল্লাহর রহমতে এখন একটু ভালো আছি। সবাই ফোন করছেন, খোঁজ নিচ্ছেন। তাই সবার উদ্দেশ্যে বলছি, বাসায় আমার চিকিৎসা চলছে এবং আগে থেকে অনেক ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। আমি সুস্থ হওয়ার পর আগের মতো মাঠের মানুষ মাঠে ফিরছি।
একই সঙ্গে মানবিক এই সরকারের কাছে বিনীতভাবে কিছু অনুরোধও রাখছি।
আমাদের সিলেটের সন্তান কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সিলেট মহানগর আওয়ামীলীগের সাবেক শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক সিলেট সিটি কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, সিলেট মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আছমা কামরান ভাবী, সিলেট মহানগর শ্রমিক লীগের সভাপতি এম শাহরিয়ার কবির সেলিম ভাইসহ যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে যাদের উন্নত চিকিৎসার খুবই প্রয়োজন তাদের উন্নত চিকিৎসা করানোর জন্য আবেদন জানাচ্ছি। আমার মনে হয়, এই মুহূর্তে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ২০নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ এর উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। তাঁর মতো জনপ্রতিনিধির আমাদের প্রয়োজন। সমাজের জন্য প্রয়োজন, দেশের জন্য প্রয়োজন।
মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সকলের নিকট আবেদন জানাচ্ছি কাউন্সিলর আজাদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করানোর জন্য। আমাদের জনপ্রতিনিধিদের বাড়তি কোনো চাওয়া নেই। মানুষের ভালোবাসাই আমাদের প্রেরণা।