Cinque Terre

অপূর্ব দাস

২৫ জুন , ২০২০


প্রাবন্ধিক 


কোভিড-১৯ : শনাক্তকরণ পরীক্ষা

কোভিড-১৯ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বময়। গত পাঁচমাস ধরে করোনা ভাইরাস হচ্ছে টক অব দ্য ওয়ার্ল্ড। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখন রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে। এখনো পর্যন্ত ভ্যাকসিন আবিস্কার না হওয়ার কারণে করোনার চিকিৎসা নিয়ে গোটা বিশ্বের মানুষ আতঙ্কে আছে। 

তবে ওষুধ বা ভ্যাকসিন আবিস্কার না হলেও স্বাভাবিক চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে এমন পরিস্থিতি বিশ্বের খুব কম দেশেই আছে। তবে বলতে দ্বিধা নেই, আমাদের দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত সাধারণ রোগীদের স্বাভাবিক চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি হচ্ছে, রোগ শনাক্তকরণ পরীক্ষা নিয়ে। অথচ যত দ্রুত যত বেশিসংখ্যক মানুষকে পরীক্ষা করা হবে, তত তাড়াতাড়ি মহামারির প্রকৃত পরিস্থিতি, সংক্রমণের প্রবণতা ও গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে। তাছাড়া পরীক্ষার মাধ্যমে চিকিৎসা এগিয়ে নেওয়াও সম্ভব। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, সরকারের ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও কাজটি হচ্ছে না।

এর কারণ খুঁজতে গেলে প্রথমেই বলতে হয় সংক্রমণের বিষয়টি। প্রথম সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পাঁচ মাস পরও আমাদের গড় দৈনিক পরীক্ষার সংখ্যা ১৫ হাজার পার হয়নি। পত্রিকার ভাষ্যমতে, এ ক্ষেত্রে আমরা দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশের পেছনে পড়ে রয়েছি। বাংলাদেশে প্রতি ৫ দশমিক ৫টি নমুনার পরীক্ষাতেই একজন রোগী শনাক্ত হচ্ছে। অর্থাৎ, এ দেশে প্রকৃত করোনা রোগীর সংখ্যা সরকারি পরিসংখ্যানের কয়েক গুণ বেশি হতে পারে। এই সহজ বিষয়টি বুঝতে কোনো বিশেষজ্ঞ হওয়ারও প্রয়োজন নেই।

এ ব্যাপারে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে প্রতিদিন যে বিশ্লেষণধর্মী আলোচনা হয় তা থেকে স্পষ্ট হয়ে ওঠে রোগী শনাক্তের বিষয়টি। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, পরিকল্পনার ঘাটতি এবং তা থেকে সৃষ্ট অব্যবস্থাপনাই এর জন্য দায়ী। 

আমাদের দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা যে গতিতে বাড়ছে, সে তুলনায় পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ছে না। তা ছাড়া মানুষ পরীক্ষা করাতে গিয়ে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে, পরীক্ষার ফল পেতে বিলম্ব হচ্ছে। ফলে আক্রান্ত ব্যক্তিদের আইসোলেশনে নেওয়াসহ অনেক কাজে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। গণমাধ্যমের সংবাদ অনুযায়ী, প্রতিদিনই অনেক নমুনা অপরীক্ষিত  থেকে যাচ্ছে। বিশেষ করে প্রতিদিন আরও নতুন নতুন নমুনা এসে জড়ো হওয়ায় পরীক্ষার চাপ বাড়ছে। 

এ ক্ষেত্রে একটিই সমাধান-পরীক্ষাগারের সংখ্যা, যন্ত্রপাতি ও  লোকবল বাড়াতে হবে। মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। মনে রাখা দরকারÑএই মুহূর্তে, মানুষকে সাহস আর চিকিৎসা সহায়তা দিয়ে পাশে থাকতে হবে। কেবল কথায় মানুষ বিশ্বাস করে না। প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন আর বাস্তবধর্মী সেবা চায়।