Cinque Terre

মিনার খান মুহিম

০২ জুলাই , ২০২০


ব্যাংক কর্মকর্তা


নতুন প্রজন্ম বিশ্বকে পথ দেখাবে

করোনা ভাইরাসের মহামারির কারণে সারা বিশ্ব আজ নাজেহাল। বিশ্বের প্রত্যেক মানুষ আজ নিজের অস্তিত্ব বিলীনের দিকে ঝুঁকি নিয়েছে। সারা বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ পর্যায়ে চলে গেছে। করোনা ভাইরাসের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, গার্মেন্টস-ফ্যাক্টরি ও ইন্ডাস্ট্রিগুলো বন্ধ থাকার কারণে অনেকেই তাদের চাকরি হারিয়েছেন। ব্যাংক সেক্টরগুলো যেখানে ভালো একটা চাকরিবাজার ছিল সেখানেও নাজেহাল অবস্থা। এমতাবস্থায় তাদের নিজস্ব চাকরিজীবীদের অবস্থাও টালমাটাল। এই অবস্থায় নতুন কোন চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার চিন্তা করাটা অবাস্তব মনে হওয়া অস্বাভাবিক কিছু না। করোনা ভাইরাসের মহামারির কারণে সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে চাকরির নিয়োগ ব্যবস্থা বন্ধ আছে। তাছাড়া কতোদিন থাকবে বা এই অবস্থার, অবসান ঘটবে কোথায়, তা কারো জানা নেই। দিন দিন বেকারত্ব বাড়ছে। নেই কোন আশার বাণী। এই অবস্থায় অনেকের চাকরির বয়সসীমার শেষের বছর চলে আসছে। একদিকে যেমন চাকরির বয়স চলে যাচ্ছে অন্যদিকে এই ইয়্যাং জেনারেশন ডিপ্রেশনেও পড়বে। এটি খুব অস্বাভাবিক কিছু নয়। এ থেকে বের হওয়ার উপায় কী? তাহলে কী এই প্রজন্ম ঝুঁকিতে পড়ল এই মহামারিতে। 

এখন ভাবতে হবে নতুন কিছু করা। নিজেকে নতুন বিশ্বে নতুন উদ্যোক্তা অথবা রাজনীতির এই অবস্থানকে নতুন এক মাত্রা তৈরি করে নেওয়া। নিজেকে নিয়ে আগের চেয়ে নতুন করে ভাবা, পেছনের গ্লানিকে মুছে ফেলতে হবে। নিজেকে তৈরি করতে হবে নতুনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ।

শিক্ষিতদের একটা অংশ রাজনীতিতে যাবে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা চলাকালীন সময়ে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকে। পড়াশোনা শেষ হলে রাজনীতি না করে তাদের অনেকেই চাকরির পড়াশোনার দিকে চলে যেতেন। অনেকের মাঝে আগের রাজনীতির ছবি হয়তো পাল্টেও যেতে পারে। আবার অনেকেই এক, দুই বছর পড়াশোনা করে চাকরিও হয়ে যায় অনেকের। কিন্তু বর্তমানে এই করোনা ভাইরাসের মহামারির কারণে চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ থাকায় অনেকের চাকরির বয়স চলে যাবে। ফলে চাকরি না পেয়ে তারা আবার রাজনীতিতে আসতে পারে। জনগণ বিশ্বাস করে গণতন্ত্রের মহান দোহাই দিয়ে যে কেউ নেতৃত্বে আসতে পারে। কিন্তু অশিক্ষিত আর চরিত্রহীন কেউ যদি টাকা আর পেশির জোরে নেতৃত্বে বসে যায়, তার ফল আর যাই হোক শুভ হয় না। তাই জনগণ এখন আর রাজনৈতিক সেক্টরে শিক্ষা ছাড়া কাউকে দেখতে চায় না। চায় না  কোনো নোংরা রাজনীতির পরিচর্যা। তারা শিক্ষিত ও মার্জিতদেরকেই রাজনৈতিক সেক্টরে দেখতে চায়। ফলে শিক্ষিতদের একটা অংশ আলোর প্রতীক হয়ে রাজনীতিতে আসবে। অন্যদিকে শিক্ষিতদের একটা অংশ উদ্যোক্তা হবে। কারণ বিশ্বে শিক্ষিত বেকারই বেশি। 

বাড়ছে শিক্ষার হার। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা। প্রতিযোগিতামূলক এই বিশ্বে মোকাবিলা করতে প্রধান অস্ত্র হচ্ছে জ্ঞান, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, স্মার্ট কর্মপরিকল্পনা। সুস্থ মস্তিষ্কের ভাবনাই একমাত্র পৌঁছে দিতে পারে মূল লক্ষ্যে। চাকরি না পেয়ে দেশের অনেক জায়গায় এমনিতেই শিক্ষিতরা উদ্যোক্তা হতে ইচ্ছা প্রকাশ করছে। উদ্যোক্তা হতে যাচ্ছে এবং উদ্যোক্তা হচ্ছে। শিক্ষিত অনেক উদ্যোক্তা ইতিমধ্যে সফলও হয়েছে। করোনা ভাইরাসের মহামারির কারণে শিক্ষিতরা আরও বেশি উদ্যোক্তার দিকে ঝুঁকবে। কারণ চাকরির বয়স না থাকায় উচ্চ শিক্ষিত হয়ে তারা বেকার থাকবে না। শিক্ষিতদের কাছে পরিবার, সমাজ, দেশ, জাতি অনেককিছু প্রত্যাশা করে। তাদেরকে তাদের পরিবারের হাল ধরতে হবে। সে জন্য তারা কর্মসংস্থানের জন্য উদ্যোক্তার পথ বেছে নেবে। ইতিমধ্যে অনলাইন প্লাটফর্ম নতুন প্রজন্মের জন্য আশার-আলো দেখাচ্ছে। আমরা দেখছি, আমাদের ইউনিভার্সিটির অনেক ছোট ভাই-বোন অনেক অনলাইন পেইজের ইনভাইটেশন পাঠাচ্ছে। দেখে ভালো লাগে। কিছু যে করতে চাই আমরা, এই মনোভাবটা ইতিমধ্যেই আমাদের কড়া নাড়ছে। তাই মন খারাপ করে বসে থেকে কোন লাভ নেই।

নতুন বিশ্বে নতুন একটা শিশু জন্মানোর মতো মনোভাব থাকতে হবে নিজের মধ্যে। সর্বোপরি পরিস্থিতিকে মেনে নিয়ে নতুন প্রজন্ম নতুন বিশ্ব গড়তে পথ  দেখাবে।