Cinque Terre

মো. আব্দুল হাফিজ শাফি

২৭ জুলাই , ২০২০


চিকিৎসক

নাক-কান-গলা বিভাগ

বি.এস.এম.এম.ইউ (প্রেষণে), ঢাকা


হেড-নেক ক্যান্সার : চাই সচেতনতা ও প্রতিরোধ

ক্যান্সার রোগটির কথা শুনলেই আমরা এক ধরনের আতঙ্কে আক্রান্ত হই। মনে করি, বোধ হয় জীবনটা শেষ হয়ে গেল, জীবনের আলো বুঝি নিভে গেল। ক্যান্সার রোগীদের নিয়ে আমরা অনেকেই বাস্তব অভিজ্ঞতা পেয়ে থাকি, যা আমাদের জন্য অনেক বড় ধাক্কা। দেশে প্রতিনিয়ত ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। এর পরিসংখ্যান আরও ভয় পাইয়ে দিচ্ছে। একজন চিকিৎসা বিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে বলব, ক্যান্সারের চিকিৎসা জটিল হলেও সময়মতো সঠিক চিকিৎসা হলে এবং নিয়মিত চিকিৎসকের ফলোআপে থাকলে সুস্থ হওয়া সম্ভব। মনে রাখতে হবে, হেলথ কেয়ার এবং স্বাস্থ্য সচেতনতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ক্যান্সার বিষয়ে সচেতনতার ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্য থেকে শুরু করে প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া সবার অবদান রাখতে হবে।

২৭ জুলাই বিশ্ব হেড-নেক ক্যান্সার দিবস। বিশ্বব্যাপী জনসচেতনা বাড়ানো এবং একই সঙ্গে বিভিন্ন দেশের সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সবার মনোযোগ আকর্ষণের লক্ষ্যে ২০১৪ সালের ২৭ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের টাইম স্কোয়ারে হেড-নেক সার্জন এবং অনকোলজিস্টদের এক সম্মেলনে প্রতি বছরের ২৭ জুলাই বিশ্বব্যাপী হেড-নেক ক্যান্সার দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

মাথার খুলির মুখের অঞ্চল এবং গলার ভিতরে অনেক গুলি স্ট্রাকচার বা অঙ্গ আছে যেমনÑনাক, মুখ, মুখগহ্বর, জিহবা, গলার টনসিল, শ্বাসনালী, খাদ্যনালী, থাইরয়েড গ্রন্থি, লালাগ্রন্থি সেইগুলোর সমষ্টিগত ক্যান্সারকে হেড-নেক ক্যান্সার বলা হয়। নাকের পাশে সাইনাস থাকে এবং নাকের পিছনে যেটাকে আমরা ‘নেজোফেরিংক্স’ বলি সেখানেও ক্যান্সার দানা বাঁধতে পারে। এদিকে থ্রোট (Throat) একদম মাথার ঠিক নিচে বেইস অব স্কাল (Skull base) থেকে ক্ল্যাভিক্যাল (কলার বোন) নামক হাড় অর্থাৎ রুট অব দ্যা নেক পর্যন্ত যতগুলি ক্যান্সার হয় সবগুলিকে হেড-নেক ক্যান্সার ধরা হয় । আমাদের গলার ভিতরের দিকে একটা আবরণ দিয়ে ঢাকা (Covered) থাকে যেটাকে আমরা মিউকাস মেমব্রেন বলি। এই মিউকাস মেমব্রেনের আবরণে ক্যান্সারই বেশি হয় এবং যেটাকে আমরা চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় Squamous Cell ক্যান্সার বলে থাকি। তবে একে বিশেষজ্ঞরা প্রতিরোধযোগ্য মরণব্যাধি বলে থাকেন, যদি প্রাথমিক অবস্থায় রোগ নির্ণয় করা যায়।

নাক-কান-গলার ক্যান্সারের কারণ : ১. তামাক ও মদ্যপান মূল কারণ বিবেচ্য হলেও আমাদের দেশের জন্য পান-সুপারি-জর্দা অনেকাংশে দায়ী। বলা হয়ে থাকে নাক-কান-গলার ক্যান্সারের মধ্যে ৭৫ শতাংশই তামাক ও তামাকজাত দ্রব্যের কারণে হয়। বেশিরভাগ ‘ওরোফ্যারেনজিয়াল’ ক্যান্সারের প্রধান ঝুঁকিপূর্ণ কারণ হল তামাকের ব্যবহার। মদ্যপানের সঙ্গে ধূমপান যৌথভাবে ওরোফ্যারেনজিয়াল ক্যান্সারের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়াতে পারে। ২. অতিরিক্ত রেডিয়েশনের সংস্পর্শে আসার ইতিহাস। ৩. সুপারি চিবানোর অভ্যাস। দীর্ঘক্ষণ সুপারি পাতা গালের চিপায় রেখে চিবানো থেকে এই ধরণের ক্যান্সার হতে পারে। ৪. অতিরিক্ত ঝাল এবং মসলা জাতীয় খাবার (spicy food) নিয়মিতভাবে খাওয়ার অভ্যাস থেকে হতে পারে মুখ এবং মুখ গহ্বরের ক্যান্সার। ৫. হিউম্যান প্যাপিলমা ভাইরাস (HPV-16) নামে এক ধরনের ভাইরাস এর সংক্রমণকে ইদানিং ওরোফ্যারেনজিয়াল ক্যান্সারের জন্য দায়ী বলে ধরা হচ্ছে। এই ভাইরাস গলা ছাড়াও মহিলাদের জরায়ু ক্যান্সারের কারণ হতে পারে । ৬. এছাড়া কিছু নির্দিষ্ট প্যাকেটজাত লবনাক্ত খাবার, এবং যারা বিভিন্ন ফার্নিচার কারখানায় কাঠ ও রং এর কাজ করেন তাদের ক্ষেত্রে নাক এবং নাকের পিছনের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভবনা বা ঝুঁকি থাকে। ৭. জেনেটিকস বা বংশগত কারণ থেকে হতে পারে তবে খুব কম। ৮. GERD (Gastro oesophsgul Reflex Disorder) অর্থাৎ এসিডিটি সমস্যা হতে খাবার পাকস্থলী থেকে বেরিয়ে আসার রোগে দীর্ঘদিন ভুগলে গলার ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে । ৯. সবুজ শাক-সবজি এবং ভিটামিন সি জনিত পুষ্টিকারক খাবার নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্রহন না করলে। ১০. Bad oral hygiene অর্থাৎ মুখের ভিতর অপরিষ্কার রাখলে এবং দাঁতের ক্রনিক ইনফেকশন। ১১. মহিলাদের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে রক্তশূন্যতায় (Iron defficiency) ভুগলে। নাক, কান ও গলার ক্যান্সারের উপসর্গগুলো : আমার ট্রেনিং পিরিয়ডের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি সাধারণত নাক-কান-গলার ক্যান্সার রোগীর প্রাথমিক পর্যায়ে নজরে পড়ে না অথবা গুরুত্ব দেন না। শরীরে দেখা দেওয়া নিরীহ টিউমারকে গুরুত্ব না দিয়ে অনেকেই পরবর্তীতে খুব ভোগেন। দেখা যায়, যাকে সামান্য টিউমার ভেবে গুরুত্ব দেননি, সেটিই বহুদিন ধরে বয়ে চলেছে প্রাণঘাতি ক্যান্সারের জীবাণু। কারণ এটি বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ব্যথাহীন, এতে সামান্য কিছু শারীরিক পরিবর্তন দেখা যায় তা প্রায়শই উপেক্ষা করা হয়। তাই রোগীরা দেরি করে আসে। ঘাড়ের গোটা বা লিম্ফ নোড এবং আসল জায়গা থেকে অন্যান্য অঙ্গে ক্যান্সারের বিস্তারের ভিত্তিতে ক্যান্সারকে ৪ টি পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। এই ক্যান্সারের সাধারণ উপসর্গ বা লক্ষণকে সহজভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করলাম। ১. মুখের এবং গলার ভিতরে বা বাইরে ঘা,ক্ষত, আলসার যা প্রাথমিক চিকিৎসা সত্ত্বেও সহজে শুকায় না,বরং দিনে দিনে বেড়ে যায়। এই ক্ষতের কারণে খাবার চিবাতে বা গিলতে কষ্ট হয় এবং জলপান করতেও অসুবিধা হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে মনে হয় গলায় কিছু আটকে আছে। ২. গলা বা হেড-নেক আক্রান্ত অঞ্চলে ফোলাভাব অর্থাৎ লাম্প যাকে টিউমার বলে থাকি। মুখ-গলা এবং ঘাড়ের পিছনে ফোলা অংশ সৃষ্টি। ৩. এক পাশে গলা ব্যাথা যা স্বাভাবিক খাবার গ্রহন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে। ৪. জিহ্বা নাড়াতে অসুবিধা। ৫. দাঁত নড়ে যাওয়া বা দাঁতে ব্যথা এবং ফোলা।

৬. এই অঞ্চলের টিউমার এর সঙ্গে কানে ব্যথা। ৭. কর্কশ কণ্ঠ। অর্থাৎ কোন কোন সময় গলার স্বরভঙ্গ নিয়েও রোগী আসতে পারেন। তবে স্বরভঙ্গ হলেই যে ক্যান্সার মনে করে আতংকিত হয়ে পরবেন তা কিন্তু নয়। গলার কন্ঠের পরিবর্তন বা গলা ভাঙা যেকোন কারণে হতে পারে। প্রাথমিক ওষুধ খাওয়ার পরও তিন সপ্তাহের অধিক স্বরভঙ্গ থাকলে সেক্ষেত্রে অবশ্যই দেরি না করে একজন নাক-কান-গলা এবং হেড-নেক বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে। এই গলা ভাঙা থেকে হঠাৎ করে শ্বাস কষ্ট দেখা দেওয়া। ৮. অস্বাভাবিকভাবে ওজন হ্রাস। সঙ্গে অরুচি এবং ক্ষুধামান্দা। ৯. জিহ্বা অথবা মুখের ভিতরের উপরিত্বকে সাদা-লাল ছোপ বা প্যাচ। ১০. নাকের ক্যান্সার এর ক্ষেত্রে নাক দিয়ে রক্ত আসা। হঠাৎ মুখের গঠনগত পরিবর্তন। ১১. মুখ দিয়ে অস্বাভাবিক রক্তপাত। কাশির সঙ্গে রক্ত। ১২. চোয়াল শক্ত হয়ে যাওয়া এবং মুখ খুলতে অসুবিধা। ১৩. থাইরয়েড গ্রন্থি যেটা গলার সামনের দিকে থাকে, সেটা দীর্ঘদিন ফুলে শক্ত হয়ে থাকা। অনেক সময় এই থাইরয়েড গ্রন্থির ফুলার সঙ্গে গলার কণ্ঠস্বর ভেঙ্গে যেতে পারে। ১৪. মুখের উভয় পাশে কানের ঠিক নিচে যে লালা গ্রন্থি আছে সেটা ধীরে ধীরে বড় হয়ে শক্ত হয়ে গিয়ে যদি মুখ বেঁকে যায় এবং সঙ্গে এই লালা গ্রন্থির ফোলায় ব্যথা থাকতে পারে। এসব লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে অবশ্যই খোঁজ-খবর নিয়ে একজন নাক-কান-গলা এবং হেড-নেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দেখানো উচিত। মনে রাখবেন সজাগ দৃষ্টিতে সচেতন ভাবে বিবেক-বুদ্ধি দিয়ে আমাদেরকে এই ধরণের সমস্যা দেখা দিলে শ্রদ্ধেয় নাক-কান-গলা এবং হেড-নেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এর উপর ভরসা রাখতে হবে। নাক-কান-গলার ক্যান্সারের সুচিকিৎসা আমাদের দেশেই সম্ভব। নাক-কান-গলার ক্যান্সার এর চিকিৎসা পদ্ধতি : ক্যান্সার চিকিৎসায় সার্জারি, রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি, টারগেটেড থেরাপি এবং কম্বাইন্ড থেরাপি প্রচলিত আছে এবং এসবের ফলে ক্যান্সারমুক্তির হার দিন দিন বাড়ছে। জনসচেতনতা ও চিকিৎসা পদ্ধতির প্রসারই এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তারপরও যে হারে ক্যান্সার বাড়ছে সেই তুলনায় আমাদের দেশে চিকিৎসা সুবিধা অপ্রতুল। অবশ্য খুশির খবর হচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সকল বিভাগীয় হাসপাতালে ক্যান্সার হাসপাতাল স্থাপনের যুগোপযোগী প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ সার্জন দেখিয়ে ক্যান্সার ধরা পড়লে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা করানো উচিত। 

চিকিৎসাপদ্ধতি নির্বাচন বিভিন্ন বিষয়ের ওপর নির্ভর করে-ক্যান্সারের ধরন এবং পর্যায়, টিউমার এর অবস্থা, সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং রোগীর সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যের অবস্থার ওপর। হেড-নেক ক্যান্সারের চিকিৎসা রোগের এবং রোগীর ফ্যাক্টর বিবেচনা করে নিম্নে উল্লিখিত এক বা একাধিক প্রক্রিয়ার সাহায্যে করা হতে পারে-১. সার্জারী-অপারেশন : প্রাথমিক টিউমারের অস্ত্রোপচার যেমন-জিহ্বার ক্যান্সার ক্ষত অপসারণ (গ্লসেকটমি)/চোয়ালের আক্রান্ত একটি অংশের অপসারণ (ম্যানডিবুল্যাকটমি)/মুখের শক্ত উপরিতলের একটি বা সমগ্র অংশের অপসারণ (ম্যাক্সিল্যাকটমি)/ঘাড়ের ব্যবচ্ছেদ এবং আংশিক বা গোটা ল্যারিংক্সের বা স্বরযন্ত্রের অপসারণ( ল্যারিংজ্যাকটমি)/ ঘাড়ের গোটা অপসারণ(নেক ডিসেকশন)/ক্যান্সার আক্রান্ত থাইরয়েড গ্রন্থির টিউমার অপসারণ (থাইরয়েডেকটমি)/ ক্যান্সার আক্রান্ত লালাগ্রন্থি প্যারোটিড টিউমার এর অপসারণ (প্যারোটিডেক্টমি) করে থাকেন আমাদের শ্রদ্ধেয় ইএনটি এবং হেড-নেক ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ সার্জনরা। 

২. রেডিওথেরাপি-বহিরাগত বিম রেডিয়েশন বা আভা বিকিরণ এবং অভ্যন্তরীণ রেডিয়েশন বা বিকিরণ থেরাপি মিলে রেডিয়েশন থেরাপি সৃষ্টি হয়। রেডিওথেরাপি নিয়ে সমাজে ভ্রান্ত ধারণা আছে যে অনেকে মনে করে থাকেন রেডিওথেরাপিতে ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়, এটা পুরোপুরি একটা কুসংস্কার। আসলে এক্সরেতে যেভাবে রেডিয়েশন দেওয়া হয় ঠিক তেমনি রেডিওথেরাপিতে নির্দিষ্ট ক্যান্সার আক্রান্ত স্থানে বিকিরণ দেওয়া হয়। ৩. কেমোথেরাপি দেওয়া যেতে পারে কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে। ৪. এডভান্সড ক্ষেত্রে মিলিতভাবে সার্জারী এবং রেডিওথেরাপি। ক্যান্সারের চিকিৎসায় প্রায়ই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তাই বলে আতংকিত না হয়ে ক্যান্সার মোকাবেলার জন্য আল্লাহর উপর ভরসা করে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করে দিতে হবে। কারণ আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের যুগে সকল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সমাধান রয়েছে। ভয়কে করতে হবে জয়। রোগীকে চিকিৎসার ব্যাপারে আগ্রহী হতে হবে, ইচ্ছাশক্তি থাকতে হবে। হেড-নেক ক্যান্সার প্রতিরোধে করণীয় : প্রতিরোধের উপায় একেকটা ক্যান্সারের জন্য একেক ধরনের। যদিও পুরোপুরি প্রতিরোধ অসম্ভব, তবুও ঝুঁকি কমানোর জন্য আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারি। ১. তামাক পাতা-জর্দাকে না বলুন। তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য যেমন-কাঁচা তামাক, জর্দা, মুখের ভিতরে পান পাতা রেখে দেওয়া এবং অতিরিক্ত সুপারি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে অবশ্যই ত্যাগ করতে হবে এবং মুখের ভিতর পরিষ্কার রাখতে এসব থেকে দূরে থাকতে হবে। প্রতিদিন উন্নতমানের টুথপেস্ট দিয়ে সঠিক নিয়মে দাঁত ব্রাশ করতে হবে। ২. ধূমপান থেকে দূরে থাকুন। ধূমপানের সঙ্গে ক্যান্সারের সম্পর্ক অঙ্গাঅঙ্গি ভাবে জড়িত। বিশ্বে যত ধরনের ক্যান্সার আছে তার মধ্যে ৯০ শতাংশ ক্যান্সারই ধূমপানের কারণে হয়। এমনটাই জানাছেন চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা। প্রতিদিন ধূমপানের ফলে ধীরে ধীরে শরীরে বাসা বাঁধে ক্যান্সার। আমেরিকান ক্যান্সার-বিশেষজ্ঞ রিচার্ড ডেল ও রিচার্ড পেটোর মতে, মানবদেহে যত ধরনের ক্যান্সার হতে পারে তার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ধূমপান ও তামাকের সরাসরি ভূমিকা রয়েছে। ৩. দীর্ঘ সময় সূর্যের ক্ষতিকর আলো থেকে রক্ষা করুন ত্বককে। সূর্যের তাপ নির্গত অতিবেগুনী রশ্মি আমাদের স্বাস্থ্য এবং ত্বকের ওপর মারাত্বক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এছাড়াও মুঠোফোন থেকে নির্গত রেডিয়েশন ক্যান্সারের অন্যতম কারণ হতে পারে। ৪. স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস করা উচিত। শরীরের নানা রোগের পিছনে খাদ্যভাসের প্রত্যক্ষ প্রভাব রয়েছে। প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় প্রচুর পরিমানে সবুজ শাকসবজি এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল রাখুন। এছাড়াও খাদ্য তালিকায় রাখুন আঁশ জাতীয় খাবার। ৫. অবাঞ্চিত যৌন সংসর্গেও ছড়াতে পারে ক্যান্সার। সুতরাং সুরক্ষিত উপায়ে সহবাস করুন। ৬. প্রতিদিন হালকা ব্যায়াম করুন। ব্যায়াম ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। কারণ, যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন দেখা গেছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাঁরা সুস্থ জীবনাচারী। এছাড়াও নিয়মিত ব্যায়ামে শরীরের হরমোন প্রবাহ, কোষবৃদ্ধির হার থাকে স্বাভাবিক। সেইসঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ে। ৭. পরিহার করুন অতিরিক্ত মসলা জাতীয় ঝাল খাবার। সবসময় কম আঁচে খাবার রান্না করুন। গবেষকরা বলেন, যারা নিয়মিত অতিরিক্ত ভাজা-পোড়া এবং অতিরিক্ত ঝাল মসলা জাতীয় খাবারে অভ্যস্ত তাঁদের ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে। ৮. জানুন পরিবারের মেডিকেল ইতিহাস। ক্যান্সারের লক্ষণ সম্পর্কে প্রকৃত তথ্য পেতে আপনার পারিবারিক চিকিৎসকের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করুন। এছাড়াও পরিবারের সদস্যদের পুরনো এই ধরণের কোনও রোগ আছে কি না সেই সম্বন্ধে আগে জানুন। ৯. মুখে কৃত্রিম দাঁত থাকলে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, যেন দাঁত ভালো মতো ফিট থাকে। সচেতন থাকি, নিরাপদে রাখি।