নতুন যুদ্ধে আসিফ

সিলেট মিরর ডেস্ক


জানুয়ারি ১১, ২০২১
০১:৪৬ অপরাহ্ন


আপডেট : জানুয়ারি ১১, ২০২১
০১:৪৬ অপরাহ্ন



নতুন যুদ্ধে আসিফ

২০০১ সালে প্রকাশ হয় আসিফ আকবরের অ্যালবাম ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’। যা বাংলা মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম সফল অ্যালবাম। এর পর শিরোনাম গান ব্যবহার করে নির্মিত হয় একই নামের হিট সিনেমা। তবে আসিফ জানান, সেই গানের স্বত্ব তিনি সিনেমার অডিও-ভিডিও পরিবেশনা প্রতিষ্ঠানের কাছে ছাড়েননি।

চলমান কপিরাইট বিতর্কের মাঝে দেড় যুগ আগের সেই ঘটনা তুলে ধরলেন আসিফ। এ প্রসঙ্গে গায়ক উল্লেখ না করলেও ন্যানসির নতুন কিছু গানের বিষয় চলে আসে।

ফেইসবুকে নিজের গানের বিষয়ে বিস্তারিত লেখেন আসিফ। শুরুতেই বলেন, “বাংলা সংগীতকে সমৃদ্ধশালী করেছে সিনেমার গান। স্বর্ণালী সময়ের রূপকারগণ শুধুমাত্র সৃষ্টিশীলতায় নিমগ্ন ছিলেন। কপিরাইট আইন অনুযায়ী সিনেমার সমস্ত অধিকার প্রযোজকের। সমস্যা হলো জেনুইন প্রযোজকেরা তৃতীয় পক্ষের কাছে রাইট বিক্রি করে দিয়েছেন যেকোনো কারণে। তৃতীয় পক্ষ গানগুলোর মালিক হয়েছে অত্যন্ত স্বল্প বিনিয়োগে। অনেকটা ওৎ পেতে থাকা সুযোগসন্ধানীর মতো। কামাই করছে কোটি কোটি টাকা। এখন তারাই পুরোনো সিনেমার সমস্ত স্বত্বের মালিক, যারা কখনোই মূল পরিকল্পনায় ছিল না।”

শিল্পীদের দুর্দশা প্রসঙ্গে বলেন, “শেষ সময়ে অনেক প্রথিতযশা শিল্পীরা অভাবগ্রস্থ হয়েছেন। সংখ্যায় কম হলেও ব্যাপারটা দৃষ্টিকটু। মানুষের মনে প্রশ্ন আছে এই দারিদ্র্যের কারণ কী! আগের সময়ে শুধুমাত্র প্লেব্যাক কিংবা ষ্টেজ শো করে কোন শিল্পী সারভাইভ করতে পারতেন না। গীতিকার-সুরকার-শিল্পীর সমস্ত অধিকার কুক্ষিগত নতুন বেনিয়া প্রযোজকদের কাছে। শুধু গান গেয়ে এদেশে বেঁচে থাকা মুশকিল, পাশাপাশি অন্য পেশা বা পুরোনো জমিদারি থাকলেই অভাবের হাত থেকে বাঁচা যায়। প্রযোজকপন্থী কালাকানুনে আটক এ দেশের শিল্পীদের নিরাপত্তা, কোন মাধ্যম থেকে কোন রয়্যালিটি পাবার সুযোগই নেই। বরং আসল শিল্পী-সুরকার-গীতিকারদের জীবিত অবস্থায় অন্য শিল্পীদের দিয়ে গাইয়ে নিচ্ছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো। এখানে আসল স্রষ্টারা অসহায়... অনুমতি নেওয়ার কোন প্রয়োজনই বোধ করছে না তথাকথিত নব্য প্রযোজক নামের আইটেমগুলো।”

এর পর আসিফ ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’ গান প্রসঙ্গে মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, “ও প্রিয়া তুমি কোথায়’ গানটি একটি সিনেমায় ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। মূল প্রযোজক সিনেমাটি বিক্রি করে দেয় অনুপম রেকর্ডিং নামের একটি কোম্পানির কাছে। অনুপম গিলে ফেলতে চেয়েছিল সাউন্ডটেকের প্রযোজনায় সৃষ্ট এই ব্যবসাসফল গানটি। পরে এই গানের গীতিকার সুরকার ইথুন বাবু ভাই কপিরাইট অফিস থেকে গানটির মালিকানা যুদ্ধ করে ফিরে পান। পঁচাত্তর হাজার টাকায় সিনেমাটি কিনে ‘ও প্রিয়া’ গানের মালিকানার আবদার করে আইনগতভাবে ব্যর্থ হয় অনুপম রেকর্ডিং। পরে অনুপম রেকর্ডিং ফোন করে গানটির সিনেমা ভার্সন প্রচারের অনুমতি চায় আমার কাছে, কিছু টাকাও ধরিয়ে দিতে চেয়েছিল। সরাসরি না করে দিয়েছি। এদের যথেষ্ট প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে, এ ধরনের প্রযোজকদের খপ্পর থেকে বাঁচতে পারলেই গীতিকার-সুরকার-শিল্পীদের মুক্তি মিলবে। নানান সঙ্ঘ হচ্ছে চারদিকে, সবার লক্ষ্য হওয়া উচিত নব্য ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীগুলোর বিরুদ্ধে সুষ্পষ্ট যুদ্ধ ঘোষণা করা। তবে সঙ্ঘগুলোর মধ্যে কিছু মীরজাফরের প্রাধান্য দেখতে পাচ্ছি। বাংলা সিনেমার সব ভূঁইফোঁড় প্রযোজক নিপাত যাক, সংশ্লিষ্ট সবার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক। তথাকথিত কপট প্রযোজকদের একচ্ছত্র মালিকানা বিষয়ক কালাকানুন বাতিল চাই... নিজেদের অধিকারে দারিদ্র্যমুক্ত হোক দেশের সংগীতাঙ্গন।”

অগ্রজদের অধিকারের জন্য তিনি যুদ্ধ ঘোষণা করলেন বলেও জানান।

এ দিকে গত বছর আসিফের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন আরেক জনপ্রিয় গায়িকা নাজমুন মুনিরা ন্যানসি। সে খবর চাউর হয় কয়েক দিন আগে। কাছাকাছি সময়ে জানা যায়, অনুপম রেকর্ডিং-এর ব্যানারে পুরোনো কিছু গানের রিমেকে কণ্ঠ দিয়েছেন ন্যানসি। এর পর এলো গায়কের নতুন যুদ্ধের ঘোষণা।

বিএ-০৩