‘সেন্ডমার্ক এগ্রো ফার্ম দখলের ষড়যন্ত্র চলছে’

সিলেট মিরর ডেস্ক


মার্চ ০৩, ২০২১
০২:৩১ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মার্চ ০৩, ২০২১
০২:৩১ পূর্বাহ্ন



‘সেন্ডমার্ক এগ্রো ফার্ম দখলের ষড়যন্ত্র চলছে’
সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন

সিলেটের জৈন্তাপুরের চারিকাটা ইউনিয়নের ভিত্তিখেলে সেন্ডমার্ক অ্যাগ্রো ফার্ম এককভাবে দখলে নিতে পুলিশ কর্মকর্তার নাম ব্যবহার করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছেন ওই কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়াসমিন আক্তার। তার নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে কোম্পানি দেউলিয়া হওয়ার উপক্রম হয়েছে বলে দাবি করেছেন কোম্পানির চেয়ারম্যান সুনীল নাথ।

মঙ্গলবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি করেন তিনি। লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, ২০০৬ সালে জৈন্তিয়ার ভিত্তিখেল এলাকায় খাদিমনগরের বাবু লাল নাথের ছেলে বিবেকানন্দ এবং তিনি ও তার ভাই বাবুল নাথ ‘বনফুল ভাই ভাই মৎস্য খামার’ নামে মৎস্য চাষ প্রকল্প শুরু করেন। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে ইইএফ (ইকুয়িটি ইন্টারপিনারশীফ ফান্ড) এর সহায়তা পাওয়ার লক্ষ্যে সেন্ডমার্ক অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেড কোম্পানি গঠন করা হয়। প্রথমে কোম্পানির ৫জন শেয়ার হোল্ডার ছিলেন। যার মধ্যে চেয়ারম্যান আকমল উল্লা কবিরী’র ৫০০ শেয়ার, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়াসমিন আক্তারের ২৫০ শেয়ার, নিজাম উদ্দিন, রানা নাথ ও হালিমা আক্তারেরও ২৫০টি করে শেয়ার ছিল। তখন ওই কোম্পানির স্থায়ী সম্পদ বলতে কিছু ছিল না।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ২০১০ সালে আইসিবি কর্তৃক ইইএফ সংক্রান্ত কৃষি বিষয়ক মঞ্জুরি বোর্ড ২১ জুন শর্তসাপেক্ষে সমমূলধন সহায়তায় এক কোটি আট লাখ তিন হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়। এতে কোম্পানির মৎস্য চাষ প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয় দুই কোটি বিশ লাখ সাতচল্লিশ হাজার টাকা। যার মধ্যে উদ্যোক্তাদের এ্যকুইটির পরিমাণ ৫১ ভাগ। অর্থাৎ এক কোটি বার লাখ চুয়াল্লিশ হাজার টাকা এবং অবশিষ্ট ৪৯ ভাগ এক কোটি আট লাখ তিন হাজার টাকা ইইএফ সহায়তা বাবদ মঞ্জুরি প্রদান করা হয়। এতে কোম্পানিটির অবস্থান উল্লেখ করা হয় সিলেট জেলার জৈন্তাপুর উপজেলার চতুলবাজারের ভিত্তিখেল গ্রামে। পরবর্তী জমি ক্রয় নিয়ে সমস্যার কারণে আকমল কবিরী ও নিজাম উদ্দিন কোম্পানি থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নেন। তখন নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে সুনীল নাথ ও পরিচালক হিসেবে বিবেকানান্দ নাথ অন্তুর্ভুক্ত হন। এরপরই ইয়াসমিন আক্তারের স্বামী ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুছ ছাত্তার কোম্পানির নিজস্ব এ্যকুইটি ৫১ ভাগ দেখানোর জন্য প্রতারণার আশ্রয় নেন।’

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘মূলত তখন থেকেই কোম্পানির বিভিন্ন হিসাব ও শেয়ারের মূল্য পরিশোধে গড়িমসি শুরু হয়। সকল শেয়ার হোল্ডারের সমূদয় টাকা পরিশোধ হলেও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের শেয়ারের বিপরীতে কোনো টাকা পরিশোধ হয়নি। ইয়াসমিন আক্তার মিটিংয়ে না থেকে তার স্বামী আব্দুস ছাত্তারকে দিয়ে কোম্পানির কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এসে জৈন্তাপুর মডেল থানায় ইয়াসমিন আক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা দেয়া হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ইয়াসমিন আক্তার মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগে পাল্টা মামলা দায়েরের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে রাতের আঁধারে প্রকল্পের সকল মাছ নিয়ে যেতে চাইলে এলাকাবাসীর বাধার মুখে পারেনি। তার একক স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে এলাকায় একটি সালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতেও কোনো সমাধান আসেনি।’

সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, কোম্পানির পরিচালকদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে ৫ বছরের জন্য ব্যবস্থাপনা পরিচালক করা হলেও তিনি ১১ বছর ধরে পদটি আকড়ে রেখেছেন। কোম্পানির বৈঠক ডাকার জন্য বললে তিনি কর্ণপাত না করে হয়রানির হুমকি দেন এবং শেয়ারহোল্ডারদের কোম্পানি থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করেন। ইয়াসমিন আক্তার বিভিন্ন সময়ে নানা কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে থাকেন। বর্তমানে তিনি সিলেটের পুলিশ সুপারের গ্রামের পাশের বাড়ির এবং সম্পর্কে চাচাতো ভাই বলে প্রচার চালিয়ে মামলা দিয়ে হয়রানির হুমকি দিচ্ছেন বলেও দাবি করেন তিনি।

আরসি-০৬