কথা রাখেননি পাথর ব্যবসায়ীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক


মার্চ ০৩, ২০২১
০২:৫৮ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মার্চ ০৩, ২০২১
০৩:১০ পূর্বাহ্ন



কথা রাখেননি পাথর ব্যবসায়ীরা
# বিছনাকান্দিতে ৫০ বোমা মেশিন ধ্বংস

পাথর উত্তোলনের সুযোগ দিতে একের পর এক আন্দোলন করেছেন পাথর শ্রমিক, পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। পরে, ৬ মাসের জন্য সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনের অনুমতি দেন উচ্চ আদালত। কিন্তু কথা রাখেননি, সুযোগ পেয়েই পরিবেশ বিধ্বংসী বোমা মেশিনের ব্যবহার শুরু করেছেন তারা।

বোমা মেশিনের ব্যবহারের খবর পেয়ে মঙ্গলবার বিছনাকান্দিতে যৌথ অভিযান পরিচালনা করেছে সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তর, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-৯ (র‌্যাব) ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। অভিযানে ৫০টি বোমা মেশিন জব্দ করে তা ধ্বংস করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মোহাম্মদ এমরান হোসেন।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত টানা ৬ ঘণ্টা সেখানে অভিযান চালানো হয় বলে জানিয়েছেন মোহাম্মদ এমরান হোসেন। তিনি বলেন, পাথরখেকোদের থাবায় বিছনাকান্দির অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। পরিবেশ সুরক্ষার স্বার্থে মন্ত্রণালয় সবধরণের পাথর উত্তোলন বন্ধ করে দিয়েছিল। তারা আদালত থেকে সনাতন পদ্ধতিতে ৬ মাস পাথর উত্তোলনের অনুমতি নেয়। কিন্তু কথা রখেনি, এখন বোমা মেশিন ব্যবহার করছে। কোনো কোনো স্থানে দেড় থেকে দুইশ ফুট গভীর গর্ত করে পাথর উত্তোলন চলছে।
এমরান হোসেন আরও বলেন, ‘আমরা খেয়াল করেছি আমাদের অভিযানের খবর পেয়ে পাথর উত্তোলনকারীরা বস্তায় মুড়িয়ে বোমা মেশিন মাটির নিচে গর্তচাপা দিয়ে রেখে দিয়েছে। পরে এরকম গর্তচাপা দেওয়া ২০টি মেশিনসহ মোট ৫০টি মেশিন জব্দ করে তা ধ্বংস করেছি।’

বোমা মেশিন ব্যবহার করে পাথর উত্তোলনের ঘটনায় পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার বিছনাকান্দি ও জাফলং, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ ও কানাইঘাটে লোভাছড়া এলাকায় অবৈধ পাথর উত্তোলন কর্মকাণ্ড চলছে বিগত কয়েক দশক ধরে। এসব এলাকায় পাথর উত্তোলনে গত তিন বছরে অন্তত ৭৬ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে গত বছরের জানুয়ারিতে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)।

প্রসঙ্গত, গত বছরের এপ্রিলে খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো দেশের সব কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এছাড়া উচ্চ আদালতেরও কিছু নির্দেশনা ছিল। ২০১৪ সালে বেলার একটি রিটের প্রেক্ষিতে ২০১৫ সালে সিলেটের সব পাথর কোয়ারি থেকে যান্ত্রিক উপায়ে পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ করে উচ্চ আদালত।

আরসি-১০