শিপার আহমেদ, বিয়ানীবাজার
মার্চ ১৮, ২০২১
০১:৪৯ পূর্বাহ্ন
আপডেট : মার্চ ১৮, ২০২১
০১:৪৯ পূর্বাহ্ন
সিলেটের বিয়ানীবাজারের শেওলা ইউনিয়নের বালিঙ্গা গ্রামে বসতঘরের ঢুকে স্কুলছাত্রী নাজনিন আক্তারকে (১৮) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত একমাত্র অভিযুক্ত নাজিম উদ্দিন (২১) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (১৭ মার্চ) সকালে নাজিম উদ্দিনকে সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতের বিচারক লায়লা মেহের বানুর কাছে নেওয়া হলে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। জবানবন্দিতে নাজিম খুনের কথা স্বীকার করেন।
বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিল্লোল রায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, নাজনিন আক্তারের সঙ্গে দুই বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল বখাটে নাজিম উদ্দিনের। তবে মাস তিনেক পূর্বে তাদের সেই সম্পর্কে ফাটল ধরে। সম্প্রতি বেশ কিছুদিন ধরে নাজনিনের পরিবারে তার বিয়ে নিয়ে কথাবার্তা চলছিল। এ নিয়ে নাজনিন আক্তার ও নাজিম উদ্দিনের মধ্যে এক ধরনের দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। পরে পারিবারিকভাবে বিষয়টি নিষ্পত্তির চেষ্টা করা হলে নাজনিন উত্তেজিত হয়ে সকলের সামনে নাজিম উদ্দিনকে উদ্দেশ্য করে বর্ণবাদী মন্তব্যের মাধ্যমে কটাক্ষ করেন। এতে অপমানিত বোধ করেন নাজিম উদ্দিন। এছাড়া সম্প্রতি নাজিম উদ্দিনকে দেখে প্রায়ই ব্যাঙ্গ করে কথাবার্তা বলতেন ও উপহাস করতেন নাজনিন। এ নিয়েই মূলত নাজিম উদ্দিনের মধ্যে ক্ষোভ জন্মে এবং মঙ্গলবার সকালে বাড়ির বাসিন্দাদের অগোচরে নাজনিনকে একা পেয়ে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান তিনি।
পুলিশ ও নাজনিনের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে নিজের বসতঘরে বসে টেলিভিশন দেখছিলেন নাজনিন আক্তার। বাড়ির সকলের অগোচরে সেই ঘরে ঢুকে পেছন থেকে হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে দা দিয়ে গলায় কোপ দিয়ে তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করেন নাজিম উদ্দিন। খুন করার পর পালিয়ে যান নাজিম। টানা ৯ ঘন্টাব্যাপী বিরামহীন অভিযান চালানোর পর স্থানীয়দের সহযোগিতায় ওইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কুড়ারবাজার ইউনিয়নের আঙ্গারজুর এলাকা থেকে নাজিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
নিহত নাজনিন আক্তার বিয়ানীবাজারের শেওলা ইউনিয়নের বালিঙ্গা গ্রামের সামসুল হক চৌধুরী পালিত কন্যা। আর ঘাতক নাজিম উদ্দিনের বাড়ি মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার নিজ বাহাদুরপুর এলাকায় হলেও তিনি পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বালিঙ্গায় তার নানাবাড়িতে বসবাস করছেন। তার পিতা মৃত আব্দুল খালিক।
এসএ/আরআর-০৪