জাফলং কোয়ারিতে কোটি টাকার যন্ত্রাংশ ধ্বংস

নিজস্ব প্রতিবেদক


মার্চ ২৫, ২০২১
০৬:৫৮ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মার্চ ২৫, ২০২১
০৬:৫৮ পূর্বাহ্ন



জাফলং কোয়ারিতে কোটি টাকার যন্ত্রাংশ ধ্বংস

জাফলংয়ে সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনে আদালতের অনুমতি পেয়ে যন্ত্রাংশের ব্যবহার করছেন অসাধু কিছু মানুষ। বুধবার এই অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করে প্রায় কোটি টাকার যন্ত্রাংশ ধ্বংস করা হয়েছে।

সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ এমরান হোসেনের নেতৃত্বে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-৯ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা অভিযানে অংশ নেন। পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট সূত্র জানায়, এ সময় ৭০ লাখ মূল্যের ১৭টি বার্জ, ১৫ লাখ টাকা মূল্যের একটি পে-লোডার ও ১২ লাখ টাকা মূল্যের তিনটি ক্রাশার মেশিনসহ বেশ কিছু সরঞ্জাম ধ্বংস করা হয়। এছাড়া একটি ক্রাশার মিলকে ৭০ হাজার টাকা জরিমানাও করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

পরিচালক মোহাম্মদ এমরান হোসেন জানান, উচ্চ আদালত ও খনিজ সম্পদ ব্যুরোর নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও যন্ত্রপাতির ব্যবহার করে জাফলং ও বিছনাকান্দিতে পাথর উত্তোলনের খবর পায় পরিবেশ অধিদপ্তর। গত ২ মার্চ গোয়াইনঘাটের বিছনাকান্দিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে অন্তত ৫০টি বোমা মেশিন ধ্বংস করা হয়। এরপর জাফলংয়ে অবৈধ যন্ত্রের ব্যবহার কিছুটা কমলেও সম্প্রতি আবারও তারা যন্ত্রবোমার ব্যবহার শুরু করেছে। খবর পেয়ে গতকাল বুধবার জাফলংয়ে অভিযান চালানো হয়।

বিছনাকান্দিতে অভিযানের পর এমরান হোসেন জানান, ‘অভিযানের খবর পেয়ে পাথরখেকোরা কৌশলী হয়ে উঠে। অবৈধ যন্ত্রগুলো বস্তায় মুড়িয়ে মাটির নিচে গর্তচাপা দিয়ে রেখে দেয়। এরকম গর্তচাপা দেওয়া ২০টি মেশিনের সন্ধান পায় ভ্রাম্যমাণ আদালত।’

গোয়াইনঘাট উপজেলার বিছনাকান্দি ও জাফলং, কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ ও কানাইঘাটে লোভাছড়া এলাকায় অবৈধ পাথর উত্তোলন কর্মকাণ্ড চলছে বিগত কয়েক দশক ধরে। এসব এলাকায় পাথর উত্তোলনে গত তিন বছরে অন্তত ৭৬ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে গত বছরের জানুয়ারিতে এক প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)।

গত বছরের এপ্রিল থেকে সারাদেশে পাথর উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো। এছাড়া উচ্চ আদালতেরও কিছু নির্দেশনায় পাথর উত্তোলন অনেকাংশে বন্ধ ছিল। ২০১৪ সালে বেলার একটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে সিলেটের সব পাথর কোয়ারি থেকে যান্ত্রিক উপায়ে পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ করে উচ্চ আদালত।

তবে সম্প্রতি উচ্চ আদালতের নির্দেশনা নিয়ে সনাতন পদ্ধতিতে আবারও সিলেটের জাফলং, ভোলাগঞ্জ, বিছনাকান্দি থেকে ব্যাপকভাবে পাথর উত্তোলন শুরু হয়। তবে, আদালত থেকে নিয়ে আসা নির্দেশনা নিজেরাই এখন অমান্য করছেন পাথর ব্যবসায়ীরা।

আরসি-০৮