সেবায়েতকে বাঁচাতে ‌‘যৌন হেনস্তা’র ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক


এপ্রিল ২১, ২০২১
১১:৪৮ অপরাহ্ন


আপডেট : এপ্রিল ২১, ২০২১
১১:৪৮ অপরাহ্ন



সেবায়েতকে বাঁচাতে ‌‘যৌন হেনস্তা’র ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টা
সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ

গোলাপগঞ্জের কালাকোনায় স্কুল পড়–য়া মেয়েকে ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহের ও সেবায়েতকে বাঁচাতে একটি চক্র অপচেষ্টা চালাচ্ছে- এমনটা দাবি করেছে মেয়েটির পরিবার। মামলার প্রধান আসামি পরেশ চৌহানকে গ্রেপ্তার করা হলেও তার সহযোগী দীপঙ্কর দেব তপন গ্রামে গিয়ে ওই মেয়ের জীবন নষ্ট করার হুমকিও দিচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন তারা।

বুধবার (২১ এপ্রিল) সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন পরিবারের সদস্য তুলি রানী দেব। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘প্রায় দুই বছর ধরে পরেশ চৌহান ও দীপঙ্কর দেব স্কুল পড়ুয়া বোনকে দফায় দফায় যৌন হেনস্তা করে আসছিল। কিন্তু, এই ঘটনা শুরু থেকেই পরিবার লজ্জার কারণে গোপনে রেখেছিল। গত ১৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় ঘর থেকে বের হয়ে বাথরুমে যাবার সময় তারা দুজন মিলে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় বোনের চিৎকারে পরিবারের সদস্যরা এগিয়ে গেলে ওই দুই ব্যক্তি পালিয়ে যায়। এরপরই থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘পরদিন দুপুরে নির্মাণাধীন মন্দিরের সেবায়েত দাবিদার পরেশকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু এরপরই ধর্মকে পুজি করে একটি মহল সত্য বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে আসামিদের রক্ষার চেষ্টা করছে।’

লিখিত বক্তব্যে তুলি রানী বলেন, ‘পরেশ চৌহান ও তপনকে রক্ষা করতে তার সহযোগী লিংকন দেবসহ কয়েকজন নিকটাত্মীয় নিজেদের ‘ভক্ত’ পরিচয় দিয়ে নানা মিথ্যাচার করে গেছেন।’ তিনি প্রশ্ন রাখেন, যেখানে মন্দির নির্মানাধীন সেখানে ‘ভক্ত’ কোথা থেকে আসে?

তিনি দাবি করেন, ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে পরেশ চৌহানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখানে জমি সংক্রান্ত কোনো বিরোধ নেই। পরেশ চৌহান তাদের এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাও নন। 

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘কয়েক বছর আগে সিলেট শহরতলীর মেজরটিলার দেবপুর এলাকার একটি মন্দিরে থাকাকালে নারী কেলেঙ্কারীর ঘটনায় তাকে এলাকার মানুষ তাড়িয়ে দেন। এরপরই সে গোলাপগঞ্জের কান্দিগাঁওয়ের একটি মন্দিরে যায়, সেখান থেকেও একই অভিযোগে তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।’

তুলি দেব জানান, কান্দিগাঁও থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর পরেশ চৌহানের পরামর্শে তপন দেব গত  ২০১৯ সালের আগস্ট মাস থেকে মন্দির নির্মাণকাজ  শুরু করেন এবং এই মন্দিরের দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয় পরেশ চৌহানকে। মন্দিরটি ব্যক্তি মালিকানাধীন। এখানে এলাকার সনাতনীর সবার সম্পৃক্ততা নেই। কেউ মন্দিরের বিরোধীতাও করেননি। মন্দির নির্মাণ কাজ শুরুর পর থেকে বিভিন্ন সময়ে পরেশ তাদের বাড়িতে আসত, এ সময়ই তার বোনের দিকে কুনজর পড়ে।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়েছে। তবে দীপঙ্কর দেব তপন গ্রেপ্তার না হওয়ায় তারা এখনও আতঙ্কে আছেন। তার বোনও মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছে। ওই দিনের ঘটনার পর থেকে সে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। তার স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হচ্ছে। ভয়ে সে ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না।’ তপনকে গ্রেপ্তারের তিনি দাবি জানান এবং এই ঘটনার ন্যায় বিচারও দাবি করেন।

বিএ-১১