নিজস্ব প্রতিবেদক
মে ২০, ২০২১
০৭:২৮ পূর্বাহ্ন
আপডেট : মে ২০, ২০২১
০৭:২৮ পূর্বাহ্ন
সিলেটে ভারতফেরত আরও ৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। দেশে ফেরার পর ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষ হওয়ার আগে রুটিন পরীক্ষায় তাদের করোনা শনাক্ত হয়। এ নিয়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে মোট ৪ জন ভারতফেরত হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এছাড়া আরও ৯ জন ভার ফেরত প্রতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ভারত থেকে এ পর্যন্ত সিলেটে এসেছেন ২৬ জন। এদের মধ্যে ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন শেষে বাড়ি ফিরেছেন ১৫ জন। বাকি ১১ জন খাদিমপাড়া ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে কোয়ারেন্টিনে আছেন। তবে খামিদপাড়া হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত ৪ জনসহ ভারতফেরত ১৩ জন কোয়ারেন্টিনে আছেন।
এ বিষয়ে গতকাল বুধবার বেলা ২টায় সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত সিলেট মিররকে বলেন, ‘ভারত থেকে যারাই আসবেন তাদের আমরা ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখছি। এ পর্যন্ত জেলায় ২৬ জন ভারত থেকে এসেছেন। সিলেটের বর্ডার বন্ধ থাকলেও দেশের অন্যান্য বর্ডার হয়ে তারা সিলেটে আসেন। এদের মধ্যে ৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তারা খাদিমপাড়া হাসপাতালে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন।’
সিলেটের স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সিলেটে আসা ভারত ফেরত সবাইকে ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখতে হবে। এদের মধ্যে কারো চিকিৎসার প্রয়োজন হলে তাকে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কোয়ারেন্টিনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হবে। যারা সুস্থ থাকবেন তাদের খাদিমপাড়া হাসপাতালে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে। এর মধ্যে গত ১২ মে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত আসমা বেগম নামের ভারতফেরত নারীর মৃত্যু হয়। তিনি ওই দিনই যশোর থেকে সিলেটে আসেন।
এ বিষয়ে খাদিমপাড়া ৩১ শষ্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মো. মাহমুদ হাসান সিলেট মিররকে বলেন, ‘বর্তমানে হাসপাতালে ভারত ফেরত ১৩ জন কোয়ারেন্টিনে আছেন। এদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত আছেন ৪ জন। তারা সবাই পুরুষ। তারা ঈদের আগে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এদের মধ্যে ৩ জনের ১৪ কোয়ারেন্টিন পূর্ণ হওয়ার আগে যে রুটিন করোনা পরীক্ষা হয় সেখানে করোনা শনাক্ত হয়েছিল। আর বাকি একজন করোনা আক্রান্ত হয়েই হাসপাতালে ভতি হন।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাদের সবার শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে। তাদের আলাদাভাবে হাসপাতালে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।’
করোনাভাইরাসের মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে নাকাল অবস্থা ভারতে। দিনে দিনে বাড়ছে রোগী, বাড়ছে মৃত্যু। এর মধ্যেই উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে ভারতে পরিবর্তিত হয়ে তৈরি হওয়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরন (স্ট্রেইন)। ফলে করোনার নতুন ভারতীয় ভ্যারিয়্যান্ট রোধে গত ২৫ এপ্রিল ভারতের সঙ্গে স্থলপথে যাত্রী চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। তবে যাত্রী যাতায়াত বন্ধ ঘোষণা করলেও আটকেপড়া যাত্রীরা দূতাবাসের অনুমতি নিয়ে নিজ নিজ দেশে ফিরতে পারবেন বলে জানানো হয়। তবে যারাই ফিরবেন তাদের করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিয়ে আসতে হবে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশেও ভারতফেরত কয়েক জনের শরীরে করোনার ভারতীয় ধরন শনাক্ত হয়েছে।
সিলেটে ফেরা ব্যক্তিদের শরীরে ভারতীয় করোনা ধরন রয়েছে কি না তা আইইডিসিআর পরীক্ষা নিরীক্ষা করবে জানিয়ে খাদিমপাড়া হাসপাতালের আরএমও ডা. মো. মাহমুদ হাসান বলেন, ‘ভারতফেরত করোনা আক্রান্ত যেসব রোগী আছেন তাদের বিষয়ে আইইডিসিআর আমাদের কাছ থেকে সবসময় তথ্য নিয়ে থাকে। তাদের প্রটোকলের মধ্যে যেসব নমুনা জিনোম সিকুয়েন্স করার কথা তা তারাই সংগ্রহ করেন। আর সিলেটে ভারতফেরত যারা আসেন তাদের নমুনা পরীক্ষা হয় শাবিপ্রবির ল্যাবে। ফলে আইইডিসিআরের সঙ্গে শাবিপ্রবির ল্যাবের যোগাযোগ রয়েছে।’
এনএইচ/আরসি-০২