চারমাস ধরে ভাতাবঞ্চিত সিলেটের ৫০ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক


মে ২৬, ২০২১
০৭:০৬ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মে ২৬, ২০২১
০৭:০৬ পূর্বাহ্ন



চারমাস ধরে ভাতাবঞ্চিত সিলেটের ৫০ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার

চার মাস ধরে ভাতা পাচ্ছেন না সিলেট মহানগরের অন্তত ৫০ এর অধিক মুক্তিযোদ্ধা ও পরিবার। নিয়মিত ভাতার পাশাপাশি বৈশাখী ও ঈদ বোনাস থেকেও বঞ্চিত তারা। করোনাকালীন সংকটে ভাতা না পেয়ে অসহায় পরিবারগুলো মারাত্মক সংকটে পড়েছে। 

ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, বারবার ব্যাংকে গিয়ে তারা শূন্য হাতে ফিরে আসছেন। কী কারণে তাদের ভাতা আটকে আছে তারও কোনো কারণও জানানো হচ্ছে না একাত্তরের বীর সেনানীরা। 

এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সিলেট মহানগর ইউনিটের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ভবতোষ রায় বর্মণ জানান, তিনি বিষয়টি জেনেছেন। যারা ভাতা পাচ্ছেন না তারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা এবং অনেকেই তাঁর পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে তারা ভাতা ভোগ করছিলেন। ভারতীয় তালিকায় তাদের নাম রয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি অমানবিক। ঈদ-বৈশাখ গেছে অথচ তাদের ঘরে আনন্দ নেই। ভাতার জন্য ব্যাংকে বারবার গিয়ে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে।’

ভবতোষ রায় বর্মণ জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি ব্যক্তিগতভাবে সমাজসেবা অফিসের কর্মকর্তার সঙ্গেও কথা বলেছেন। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো সুরাহা হয়নি। ভাতা মূলত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ইস্যু করে। তবে, মাঝে-মধ্যে ভাতা এভাবে অনিয়মিত হয় বলেও জানান তিনি। 

এ বিষয়ে সিলেট মিরর এর পক্ষ থেকে সিলেট জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মোবাইল ফোনে সংযুক্ত হওয়া যায়নি। 

এদিকে, ভাতা না পাওয়ায় ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করা কয়েকটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সুদের বেড়াজালে পড়েছেন। ব্যাংকের সুদ ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর অভাবে মানবেতর জীবন-যাপন করতে হচ্ছে তাদের। 

মুক্তিযোদ্ধা আরও জানান, মহামারি করোনাকালে মুক্তিযোদ্ধা এই পরিবারগুলো কোনো ধরণের ত্রাণ সামগ্রী পায়নি। বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে ও ব্যাংকে বারবার দ্বারস্থ হলেও কোনো প্রতিকার মিলছে না। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা। 

চারমাস ধরে ভাতা না পাওয়াদের মধ্যে রয়েছেনÑ বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা নীল বাবু সিংহের সহধর্মিনী আনন্দিনী সিনহা, বীর মুক্তিযোদ্ধা বিপুল চন্দ্র দাশের সহধর্মিনী শিপ্রা দাশ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত দিলীপ কুমার সিংহের সহধর্মিনী সীমা কাংজিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত দেবাশিষ মজুমদারের সহধর্মিনী কৃষ্ণ মুজমদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত দিপেন্দ্র মোহন দাশের সহধর্মিনী ছায়া রানী দাশ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত সেকান্দর আলীর সহধর্মিনী শাহিদা বেগম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত অজয় কুমার শর্ম্মার সহধর্মিনী সবিতা শর্ম্মা, বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত করুণাময় পালের সহধর্মিনী জবা পাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত আব্দুল মনাফের সহধর্মিনী রোকেয়া বেগম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত খলিল উল্লাহ সহধর্মিনী মাহমুদা খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত মুসলিম আলীর ছেলে মো. লাল মিয়া, মৃত আমির হোসেনের সহধর্মিনী অহিদা বেগম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত অনিল সিংহ বর্মনের সহধর্মিনী অধীর সিংহ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত অনিল সিংহ বর্মনের ছেলে অধীর সিংহ বর্মন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত বদর উদ্দিন আহমদের সহধর্মিনী নুরজাহান বেগম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত আব্বাস উদ্দিন মনু মিয়ার সহধর্মিনী ফুলবান বিবি, মরহুম মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশারের স্ত্রী শাহারা বেগম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত দেওয়ান আবরার হোসেন চৌধুরীর সহধর্মিনী শিরিন চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বামী মৃত আবুল কালামের সহধর্মিনী সান্তা কালাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত স্বামী শ্রী চন্দ তালুকদারের সহধর্মিনী খেলা রানি তালুকদার প্রমুখ। 

এসএইচ/আরসি-০৮