সিলেট মিরর ডেস্ক
মে ৩০, ২০২১
১১:২৪ অপরাহ্ন
আপডেট : মে ৩০, ২০২১
১১:৫৫ অপরাহ্ন
বিদেশ থেকে মাদরাসা, এতিমখানা ও রোহিঙ্গা ফান্ডের জন্য আসা বিপুল পরিমাণ টাকা তসরুফ হয়েছে বলে জানা গেছে। হেফাজতের সিনিয়র কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তারের পর বেশ কিছু মামলার তদন্তে এসব তথ্য উঠে আসে। শুধু মামুনুল হকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এক বছরে ৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। আরও বেশ কিছু অ্যাকাউন্ট পাওয়া গেছে। গভীরভাবে মামলাগুলো তদন্ত ও পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
রবিবার (৩০ মে) বিকেল সাড়ে ৫টায় নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের একথা বলেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) বিভাগের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম।
তিনি বলেন, হেফাজতের অর্থ সম্পাদক মনির হোসেন কাসেমী গ্রেপ্তারের পর তদন্ত পর্যায়ে লক্ষ্য করেছি- হেফাজতের যে অর্থায়ন করা হয় তার সিংহভাগ বিদেশি। মূলত, রোহিঙ্গা, মাদরাসা ও এতিমদের জন্য এ টাকা আসে। কিছু টাকা শুধু হেফাজতের দলীয় কার্যক্রম পরিচালনার জন্যও আসে। তবে এসব টাকার হিসেবে সঠিকভাবে রাখা হয় না। হিসেবে স্বচ্ছতা পাইনি। ক্ষেত্র বিশেষে দেখা যায়, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বা হেফাজতের নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে ওই টাকা ব্যবহার করা হচ্ছে।
যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মাহবুব বলেন, তদন্তে বিপুল পরিমাণ টাকা তসরুফের তথ্য মিলেছে। যে টাকায় তারা শান-শওকত, বাড়ি-গাড়িসহ আভিজাত্যের সাথে চলতে ব্যবহার করেছেন। যারা এ অর্থ ব্যবহার ও তসরুফ করছেন তারা কিন্তু নিজেরা যেমন টাকার মালিক হচ্ছেন, তেমনই সিন্ডিকেট গড়ে অন্যদের কোণঠাসা করছেন।
মাহবুব আলম আরও বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি, বেফাক ও হায়াতুল উলিয়া কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। যদিও সংগঠনগুলো গুরুত্বপূর্ণ। এই সংগঠনগুলো জিম্মি ও ব্যবহার করা হচ্ছে নিজেদের স্বার্থে। অনেক ভালো বুজুর্গ ও মাওলানা সেখানে সুযোগও পাচ্ছেন না। হেফাজতের পাশাপাশি মাদরাসা ও মাদরাসার সংগঠনগুলো ব্যবহার করা হয়েছে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকার পাশাপাশি হেফাজতকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য।
মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা ২০১৩ সালের ঘটনায় ১৪টা মামলা তদন্ত করছি। পাশাপাশি নতুন মামলাও তদন্ত করছি। অন্য সংস্থাও তদন্ত করছে। আমরা সমন্বিতভাবে তথ্য শেয়ারিং করে কাজ করছি। সুনির্দিষ্টভাবে সময় বলা না গেলেও দ্রুত সময়ের মধ্যে মামলাগুলো চার্জশিট দাখিল করা হবে।
রোহিঙ্গাদের টাকা কীভাবে তসরুফ হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদেশ থেকে আসা টাকার হিসেবে নেই গ্রেফতার হওয়া হেফাজত নেতাদের কাছে। আমরা বিদেশি অর্থের হিসেবের স্বচ্ছতা পাইনি। মধ্যপ্রাচ্য থেকে বেশি টাকা আসছে। টাকাগুলো কীভাবে আসছে তা আমরা খতিয়ে দেখছি। রোহিঙ্গা ক্রাইসিসের পর রোহিঙ্গাদের জন্য ফান্ড কালেকশন করা হয়েছে। অনেকে টাকা দিয়েছেন। কী পরিমাণ টাকা আসছে তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। তবে বিপুল পরিমাণ টাকা। শুধু মামুনুল হকের একাউন্টেই ৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে কত টাকা আসছে তা আমরা খতিয়ে দেখছি।
তিনি বলেন, হেফাজতের মূল টাকাটা মনির হোসেন কাসেমীর কাছেই আসত। তার সেটার হিসেব রাখার কথা। তবে আমরা স্বচ্ছতা পাইনি তদন্তে।
বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা টাকা দিয়ে হেফাজতকে উস্কে দিয়েছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত তদন্তে আমরা এমন কোনো আলামত বা তথ্য পাইনি।
বিএ-০৬