সিলেট মিরর ডেস্ক
জুন ০৩, ২০২১
০৮:৩৬ পূর্বাহ্ন
আপডেট : জুন ০৩, ২০২১
০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন
বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে ৩২ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা। এটি মোট বাজেটের ৭.৪ শতাংশ। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে ২৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকার বরাদ্দ রয়েছে।
তবে এই বরাদ্দের সুফল নিয়ে বিশেষজ্ঞরা সংশয় প্রকাশ করেছেন। কারণ, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ভঙ্গুর চিত্র চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। দুর্নীতি, অনিয়ম আর নড়বড়ে স্বাস্থ্য খাতের প্রভাব পড়ছে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবায়।
স্বাস্থ্য খাতের বিনিয়োগ বাড়াতে আগামী বাজেটে নতুন করে কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ এবং বিভাগীয় শহরের বাইরে হাসপাতাল-ক্লিনিক নির্মাণে বিনিয়োগ করলে ১০ বছরের কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া হতে পারে।
২০৩১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত এ সুযোগ মিলবে। পাশাপাশি সরকারি সব হাসপাতালকে অত্যাধুনিক করা হবে। আইসিইউ, ভেন্টিলেটরসহ করোনা মোকাবেলার পর্যাপ্ত সামগ্রী কেনা হবে। এ ছাড়া নতুন দুই হাজার চিকিৎসক, দুই হাজার নার্স এবং ৭৩২ জন স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ দেওয়া হবে। তাঁদের জন্য বাজেটে ৫০০ কোটি টাকা রাখা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বরাদ্দ বাড়ানো হলেও খরচের দক্ষতা নেই স্বাস্থ্য বিভাগের। যা কিছু খরচ হয়, সেখানে দুর্নীতি আছেই। সবমিলিয়ে জরুরি স্বাস্থ্য সেবা থেকে জনগণ বঞ্চিত হচ্ছে। নতুন করে বরাদ্দ হলে সাধারণ জনগণ কী পরিমাণ সুফল পাবেন, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় থেকে যাচ্ছে। এ অবস্থায় এ খাতে বরাদ্দের সঙ্গে সুশাসনও নিশ্চিত করতে হবে।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, সরকারি হাসপাতালগুলোর প্রায় প্রতিটিতে চিকিৎসক-নার্সসহ জনবলের ঘাটতি রয়েছে। ফলে জরুরি চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। রোগ নির্ণয়ে পরীক্ষা করাতে গেলেও যন্ত্রপাতি না থাকার দোহাই দিয়ে রোগীর পকেট কাটছে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক আর ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো। এমনকি জ্বর-সর্দি আর গুটিকয়েক ওষুধ ছাড়া হাসপাতালগুলোতে মেলে না তেমন কোনো ওষুধ। অভিযোগ রয়েছে, সরকারি হাসপাতালেও টাকা ছাড়া মেলে না সিট, ওষুধ, অপারেশনসহ চিকিৎসার সিরিয়াল।
এসব বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, ‘বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দের পরিমাণ অবশ্যই বাড়ানো দরকার। আমরা চাই আমাদের মূল বাজেটের ১২ শতাংশের বেশি এ খাতে বরাদ্দ হোক। জানতে পেরেছি এবার স্বাস্থ্য খাতে মোট বাজেটের সাত শতাংশের মতো বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। যা গত বছর পাঁচ শতাংশের মতো ছিল। আমরা মনে করি বরাদ্দের অর্থ যেখানে অব্যয়িত থাকে, সেখানে সাত শতাংশ বরাদ্দ আপাতত কম নয়। এখন এই টাকাগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খরচ করাও একটা বড় বিষয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘জনগণের পকেট থেকে যেসব উদ্দেশ্যে এই টাকাগুলো বেরিয়ে আসে, সেই চিন্তাটা মাথায় রেখেই খরচ করতে হবে। আমরা জানি এই টাকাগুলো জনগণের কল্যাণে ব্যয় করার জন্যই তাদের পকেট থেকে বের করে আনা হয়। অর্থাৎ জনগণ যেন হাসপাতালে গিয়ে যথাযথভাবে স্বাস্থ্য সেবা, আন্তরিক সহযোগিতা ও ওষুধ পায়। কিন্তু কোনো সরকারি হাসপাতালেই এর কোনোটা যথাযথভাবে মেলে না।’
আরসি-০৩