মাছ ও হাঁসের খামার করে স্বাবলম্বী ওসমানীনগরের লাকি

উজ্জ্বল ধর, ওসমানীনগর


জুন ০৫, ২০২১
০৭:১২ অপরাহ্ন


আপডেট : জুন ০৫, ২০২১
০৭:১২ অপরাহ্ন



মাছ ও হাঁসের খামার করে স্বাবলম্বী ওসমানীনগরের লাকি

সমাজে কিছু কিছু মানুষ থাকে যারা গৎ বাঁধা জীবনের বাইরে গিয়ে ব্যতিক্রম কিছু করতে চায়। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় স্বমহিমায়। সিলেটের ওসমানীনগরের মিজানুর রহমান লাকি তেমনই এক উদ্যমী যুবক। সিলেটের অন্য আট-দশজন যুবকের মতো বিদেশ-বিভূঁইয়ে যাওয়ার চিন্তা না করে তিনি নিজ বাড়িতে গড়ে তুলেছেন গরু ও মাছের খামার। আর এর মাধ্যমে আয়ের পাশাপাশি একাধিক যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করেছেন।

উপজেলার উসমানপুর ইউনিয়নের কবুলপুর গ্রামের রইছ আলীর পুত্র মিজানুর রহমান লাকি ৩০ বছরের এক সামর্থবান যুবক। তার বাবা-চাচাসহ পরিবারের একাধিক ব্যক্তি প্রবাসে থাকলে তিনি ছোটবেলা থেকেই প্রবাসবিমুখ। দেশে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করাই ছিল তার স্বপ্ন। আর সে চিন্তাধারায় উৎপাদনমুখী ব্যবসায় আগ্রহী হয়ে ওঠেন তিনি।

বর্তমানে তিনি একজন সফল খামারী। সাড়ে ৩ একর জমিতে গড়ে তুলেছেন মাছের খামার। ৩টি পুকুরে রয়েছে রুই, কাতলা, বাউশ, তেলাপিয়াসহ বিভিন্ন কার্প জাতীয় মাছ। মাছের খামার থেকে মাসিক আয় প্রায় ৫০ হাজার টাকা। গোয়ালে রয়েছে ১২টি ফ্রিজিয়ান প্রজাতির গরু। লাকি আশা করছেন আগামী ঈদে গরুগুলো প্রায় ১৫ লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন।

লাকির সফলতার গল্প শুরু হয় ২০১৩ সালে হাঁসের খামার দিয়ে। এক হাজার হাঁস নিয়ে খামার গড়ে সফলতার দেখা পান তিনি। ডিম ও হাঁস বিক্রি করে তিন লক্ষাধিক টাকা আয় করেন। এরপর খামারের পরিসর বড় করে প্রায় ৩ হাজার হাঁস নিয়ে গড়ে তোলা খামারের ডিম বিক্রি করে দৈনিক ৫ হাজার টাকা আয় করেন। হাঁসের খামারে সফলতা পেয়ে মনোযোগী হন মাছ ও মাংস উৎপাদনে। প্রথমদিকে ছোট পরিসরে মাছের খামার গড়লেও এখন খামারে রয়েছে প্রায় ৪ লাখ টাকার মাছ, সঙ্গে গোয়ালে আছে ১২টি গরু।

কথা হয় উদ্যমী তরুণ মিজানুর রহমান লাকির সাথে। তিনি জানান, ফ্রিজিয়ান গরু তিনি প্রতিপালন করছেন মাংস উৎপাদনের জন্য। আগামী ঈদে এগুলো একেকটি আড়াই থেকে তিন মণ ওজনের হবে। গরুগুলো ঈদের বাজারে কমপক্ষে ১৫ লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশা করছেন। এছাড়া মাছের চাষ করে তিনি মাসে অর্ধলক্ষাধিক টাকা আয় করছেন। তার দেখাদেখি এলাকার অনেক শিক্ষিত যুবক খামার ব্যবসায় উৎসাহী হয়ে উঠেছেন।

নিজের সাফল্যের কথা ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকেই ব্যতিক্রম কিছু করার স্বপ্ন দেখতাম। সেই ভাবনা থেকেই খামার গড়ার কথা আসে মাথায়। পরিবার থেকে প্রবাসে যাওয়ার জন্য চাপ থাকলেও তা সামাল দিয়ে ২০১৩ সালে কোনো প্রকার প্রশিক্ষণ ছাড়াই হাঁসের খামার গড়ে তুলেছিলাম। ওই ব্যবসার পুঁজিতে বর্তমানে মাছ ও গরুর খামার গড়ে সফলতা পাচ্ছি। আমার খামারে স্থানীয় আরও ৭ জন বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হয়েছে।  


ইউডি/আরআর-০২