সিলেট মিরর ডেস্ক
জুন ১৮, ২০২১
০৫:০২ পূর্বাহ্ন
আপডেট : জুন ১৮, ২০২১
০৫:০২ পূর্বাহ্ন
ভবিষ্যতে কোনো মামলায় আসামির বয়স লেখার ক্ষেত্রে পুলিশকে আরও সতর্ক থাকতে বলেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, বয়সের বিষয়ে অকাট্য প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত যেন পুলিশ নিজ থেকে আসামির বয়স উল্লেখ না করে বা বয়স নির্ধারণের ক্ষেত্রে কোনো সিদ্ধান্ত না নেয়।
খুলনার হরিনটানা থানার জয়খালী গ্রামে প্রদীপ দে ওরফে পাদু মামলার এক আসামির জামিন আবেদনের ওপর শুনানিকালে এ পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত ওই আসামির সত্যিকারের বয়স কত সে বিষয়ে আদালতে লিখিত প্রতিবেদন দিতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহষ্পতিবার এক আদেশে পুলিশকে পহেলা জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন। আর ওইদিন (পহেলা জুরাই) পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন। এই শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মনিরুল ইসলাম। আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান সিরাজ।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, খুলনার হরিনটানা থানার জয়খালী গ্রামের একটি হাসের খামারে ২০১৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর প্রদীপ দে ওরফে পাদুকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। ওই খামারের হাস চুরি করতে যেয়ে নিরাপত্তা কর্মী পাদুকে হত্যা করে আসামিরা।
এ ঘটনায় করা মামলায় পুলিশ কয়েকদিনের মধ্যেই শাকিব হাওলাদার ও শামীম মোড়লকে গ্রেপ্তার করে। এরপর ওই দুই আসামি ৩০ সেপ্টেম্বর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়। তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। ৫ আসামির মধ্যে চারজনের বয়স দেখানো হয়েছে ১৮ বছরের নীচে।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মনিরুল ইসলাম আরো বলেন, ওই মামলার আসামি শাকিব হাওলাদারের জামিন আবেদন করা হয় হাইকোর্টে। ওই আবেদনের ওপর শুনানিকালে আদালত নথিপত্রে দেখতে পান যে, ওই আসামির বয়স দুই রকম লেখা হয়েছে। ওই আসামিকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ যে ফরোয়ার্ডিং দেয় তাতে আসামির বয়স উল্লেখ করে ২০ বছর। আর অভিযোগপত্রে (চার্জশিট) উল্লেখ করা হয়েছে ১৬ বছর। এই ১৬ বছর প্রমান করতে সংশ্লিস্ট ইউনিয়ন পরিষদের একটি জন্মসনদ দেওয়া হয়েছে।
শুধুই এই এক আসামি নয়, মামলার ৫ আসামির মধ্যে চার আসামির বয়সই পরিবর্তন করে ১৬ এর নীচে দেখানো হয়েছে। এটা দেখার পর আদালত মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের এসআই রাসেল হোসেনকে তলব করা হয়। এ আদেশে আজ (বৃহষ্পতিবার) এসআই রাসেল হোসেন আদালতে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে আসামির বয়সের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন। তিনি (তদন্ত কর্মকর্তা) আদালতকে জানান, আসামি শাকিব হাওলাদারের জন্ম ২০০৪ সালের ২ মার্চ। সেই হিসেবে (জন্মসনদ অনুযায়ী) তার বয়স ১৬ বছর দেখানো হয়।
তদন্ত কর্মকর্তার এই বক্তব্যের পর আদালত পুলিশ ফরেয়ার্ডিং ও জবানবন্দী দেওয়ার সময় ২০ বছর উল্লেখ করার কথা তুলে ধরে বলেন, অকাট্য প্রমাণ ছাড়া বা ভালভাবে যাচাই-বাছাই না করে ইচ্ছেমত বয়স লিখতে পারেন না। ভবিষ্যতে জন্মসনদ, শিক্ষাসনদসহ সংশ্লিষ্ট সব সনদ যাচাইবাছাই করেই যেন বয়স উল্লেখ করা হয়।
আরসি-০১