মা-বাবা বোনকে হত্যা করে ৯৯৯-এ ফোন!

সিলেট মিরর ডেস্ক


জুন ২০, ২০২১
০৬:৫৯ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জুন ২০, ২০২১
০৬:৫৯ পূর্বাহ্ন



মা-বাবা বোনকে হত্যা করে ৯৯৯-এ ফোন!

পুরান ঢাকার কদমতলীর একটি বাসায় একই পরিবারের তিনজনকে খুন করা হয়েছে। শনিবার (১৯ জুন) সকালে তাঁদের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মেহজাবিন ইসলাম মুন নামের এক নারীকে আটক করা হয়েছে।

প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশের ভাষ্য, আটক মেহজাবিন নিহত দম্পতির মেয়ে। পারিবারিক বিরোধের জেরে বাবা, মা ও বোনকে চায়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করার পর শ্বাস রোধ করে মেহজাবিনই হত্যা করেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।

শুধু হত্যাই নয়, পরিবারের তিনজনকে হত্যার পর ৯৯৯-এ ফোন দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর খবরের ভিত্তিতেই পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। অন্যথায় স্বামী ও সন্তানকেও মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিলেন তিনি।  

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল ১০টার দিকে কদমতলী থানা এলাকার মুরাদপুরের ২৮ নম্বর লালমিয়া সরকার রোডের ছয়তলা বাড়ির দ্বিতীয় তলা থেকে মেহজাবিনের মা মৌসুমী ইসলাম (৪০), বাবা মাসুদ রানা (৫০) এবং বোন জান্নাতুলের (২০) লাশ উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে নিহত মাসুদ-মৌসুমী দম্পতির আরেক মেয়ের জামাইকে।

কেন এই হত্যাকাণ্ড, জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) ইফতেখারুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক তদন্তে এ ঘটনার পেছনে বিভিন্ন ধরনের তথ্য পাওয়া গেছে। তা বিশ্লেষণ করে মনে হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরে এ হত্যার ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে মেহজাবিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। 

আটক মেহজাবিনের চাচাতো বোন শিলা বলেন, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে মেহজাবিনের প্রথম বিয়ে হয়েছিল। প্রথম স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ির পর ফের মেহজাবিনের বিয়ে হয়। তাঁর পরের স্বামীরও আগে বিয়ে হিয়েছিল। সেই ঘরের এক সন্তান নিয়ে দুই দিন আগে স্বামীর সঙ্গে মায়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন মেহজাবিন। এসেই তাঁর ছোট বোন জান্নাতুলের সঙ্গে তাঁর স্বামীর পরকীয়া প্রেম রয়েছে বলে মা-বাবার কাছে অভিযোগ করেন। এ নিয়ে অনেক কথা-কাটাকাটি হয়। এমন আরো অনেক ঘটনার জেরেই হয়তো এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন তিনি।

প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পরিবারের সঙ্গে মেহজাবিনের বিরোধ চলছিল। বিশেষ করে জায়গা-সম্পত্তি নিয়েও পরিবারের সঙ্গে বিরোধ ছিল তাঁর। সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য মা-বাবাকে অনেক চাপ দিতেন তিনি। এ নিয়ে এর আগে সালিসও হয়েছে, তবে বিরোধের নিষ্পত্তি হয়নি। এক প্রতিবেশী পুলিশকে জানান, নানা কারণে মেহজাবিন মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত ছিলেন। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে তাঁর মানসিক দূরত্ব চলছিল।

জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) ইফতেখারুল ইসলাম বলেন, মা-বাবা ও বোনকে মেহজাবিনই হত্যা করেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। ঘটনার পর ঘটনাস্থল থেকে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে মেহজাবিন পুলিশকে বলেছিলেন, ওই বাসায় দ্রুত না গেলে তিনি তাঁর স্বামী ও সন্তানকেও মেরে ফেলবেন। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে তিনটি লাশ উদ্ধার করে। সেই সঙ্গে অন্যদের উদ্ধার করে। মেহজাবিনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। 

আরসি-০৪