সিলেটসহ ১৪টি ফল্টে যেকোনো সময় ভূমিকম্প হতে পারে

সিলেট মিরর ডেস্ক


জুন ২২, ২০২১
০২:১৪ অপরাহ্ন


আপডেট : জুন ২২, ২০২১
০২:১৪ অপরাহ্ন



সিলেটসহ ১৪টি ফল্টে যেকোনো সময় ভূমিকম্প হতে পারে

সিলেটসহ দেশের ১৪টি ভূতাত্ত্বিক ফল্ট (ফাটল রেখা) থেকে যেকোনো সময় মাঝারি ধরনের ভূমিকম্প হতে পারে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।

সম্প্রতি ‘ভূমিকম্পের ঝুঁকি ও প্রস্তুতি’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ মন্তব্য করেন তিনি। 

তিনি বলেন, সামগ্রিক বিবেচনায় বাংলাদেশ ভূমিকম্পপ্রবণ একটি দেশ। এখানে মাঝারি আকারের ভূমিকম্প হওয়ার মতো অবস্থা তৈরি হয়ে আছে। কারণ ভূমিকম্প হওয়ার মতো শক্তি ভূ-অভ্যন্তরে সঞ্চিত হয়েছে। ১৪টি স্থানে যেকোনো সময় ভূমিকম্প হতে পারে।

বিল্ডিং, রাস্তা ও অন্যান্য অবকাঠামো বিল্ডিং কোড মেনে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তৈরি না করার কারণে মাঝারি ধরনের ভূমিকম্প হলেও আমাদের অবকাঠামোগুলো ঝুঁকিপূর্ণ। জেলাভিত্তিক যদি হিসাব করা হয় তাহলে সবচেয়ে আপদপ্রবণ ও ঝুঁকি এলাকা সিলেট ও চট্টগ্রাম। চট্টগ্রামে ভূমিকম্প হলে ভূমিধস হওয়ার ব্যাপক আশঙ্কা আছে। অন্যদিকে ঢাকা শহরে আপদ কম হলেও অবকাঠামোর কারণে ঢাকার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।

ড. মাকসুদ কামাল বলেন, কোনো ভূখণ্ডে একবার ভূমিকম্প হলে পরবর্তীতে ওই ভূখণ্ডে ভূমিকম্পের আশঙ্কা থেকে যায়। আমাদের দেশে ১৫৫৮ সালে একটি বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়েছে। ১৮৯৭ সালে অনুরূপ আরেকটি বড় ভূমিকম্প হয়। এই ভূমিকম্পকে ‘গ্রেট ইন্ডিয়ান আর্থকুয়েক’ হিসেবে অভিহিত করা হয়, রিখটার স্কেলে যেটির মাত্রা ছিল ৮.৩। পৃথিবীতে যত ধ্বংসাত্মক ভূমিকম্প হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এই ভারতের ভূমিকম্প। এই ভূমিকম্পে সিলেট ও ঢাকায়ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল।

পরে ১৯১৮ সালে সিলেটের শ্রীমঙ্গলে আরেকটি ভূমিকম্প সংঘটিত হয়, রিখটার স্কেলে মাত্রা ছিল ৭.৪। তারও আগে ১৮২২ সালে আরেকটি অনুরূপ ভূমিকম্প সংঘটিত হয়, মাত্রা ছিল ৭.১। এই দুটিরই উৎপত্তিস্থল ছিল বাংলাদেশে।

বাংলাদেশ ভূমিকম্প ঝুঁকিতে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৮৯৭ সালের ধ্বংসাত্মক ভূমিকম্পের পর ১২৫ বছর পার হয়েছে, যা পুনঃসংঘটিত হতে ৩৫০ থেকে ৫০০ বছর সময় লাগতে পারে। ১৮২২ ও ১৯১৮ সালের মধ্যে পার্থক্য প্রায় ১০০ বছর। এই বিবেচনায় একটি ধ্বংসাত্মক ভূমিকম্প হওয়ার ১০০ বছর পর আরো একটি বড় ধরনের ভূমিকম্প সংঘটিত হতে পারে। একটি ভূমিকম্প হওয়ার পর আরেকটি ভূমিকম্পের শক্তি সঞ্চিত হতে থাকে।

বাংলাদেশে ৬ থেকে ৭.৫ রিখটার স্কেলে ভূমিকম্প হওয়ার উপযোগী ভূতাত্ত্বিক ফল্ট সংবলিত ১৪টি স্থান রয়েছে জানিয়ে অধ্যাপক কামাল বলেন, এই ফল্টগুলো থেকে মাঝারি আকারের ভূমিকম্প হতে পারে। সিলেটেই আছে এ রকম পাঁচটি ফল্ট। এই ১৪টি ফল্ট থেকে যেকোনো সময় মাঝারি ধরনের ভূমিকম্প হতে পারে। ১৭৬২ সালে রাখাইন ফল্টে একটি ভূমিকম্প সংঘটিত হয়। এই ভূমিকম্প নিয়েও গবেষণা করা হয়। অনেক গবেষক বলেছেন, এই ভূমিকম্পটি পুনঃসংঘটিত হতে ৩০০ থেকে ৯০০ বছর লাগতে পারে।

আরসি-১৪

সূত্র: কালের কণ্ঠ