সিলেট মিরর ডেস্ক
আগস্ট ১০, ২০২১
০১:১৫ পূর্বাহ্ন
আপডেট : আগস্ট ১০, ২০২১
০১:১৮ পূর্বাহ্ন
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের উদ্ভাবিত টিকা বঙ্গভ্যাক্সের ট্রায়াল শুরু হয়েছে। গত ১ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া ট্রায়াল চলবে সেপ্টেম্বরের শেষ পর্যন্ত। গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক থেকে ধরে আনা সেই ৫৬টি বানরের ওপরই এ ট্রায়াল শুরু হয়েছে। ট্রায়ালে প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে মানবদেহে টিকার কার্যকারিতা প্রয়োগের (হিউম্যান ট্রায়াল) জন্য বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের (বিএমআরসি) কাছে আবেদন করবে গ্লোব।
আজ সোমবার (৯ আগস্ট) দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে এসব তথ্য জানিয়েছেন গ্লোব বায়োটেকের কোয়ালিটি অ্যান্ড রেগুলেটরি অপারেশনসের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন।
গত ২২ জুন গ্লোব বায়োটেককে চিঠি দিয়ে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আগে বানর অথবা শিম্পাঞ্জির ওপর টিকার ট্রায়াল করতে বলে বিএমআরসি। বানরগুলো ধরতে গিয়ে স্থানীয় ব্যক্তিদের তোপের মুখে পড়েছিলেন গ্লোব বায়োটেকের কর্মকর্তারা। সেই সঙ্গে বন্য প্রাণী গবেষণার কাজে ব্যবহারের সমালোচনাও হয়েছে।
গ্লোব বায়োটেকের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, বানরের ওপর টিকার পরীক্ষার জন্য বিদেশে চেষ্টা করেছেন তাঁরা। ভারত বলেছে, জিটুজি পদ্ধতিতে আবেদন করার জন্য। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগে চিঠি দেওয়া হয়েছে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য, কিন্তু কোনো আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি। উন্নত বিশ্বের দেশগুলো বলছে, এমআরএনএ টিকার বানরের ওপর পরীক্ষার দরকার নেই, কিন্তু বিএমআরসি বলছে, করা লাগবে। এ অবস্থায় বাধ্য হয়ে আন্তর্জাতিক প্রটোকল অনুসরণ করে বন বিভাগের অনুমোদন নিয়ে বানর সংগ্রহ এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষ করে ট্রায়াল শুরু করা হচ্ছে।
মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ‘ভারতে কোভ্যাক্সিনের ট্রায়াল হয়েছিল বানরের ওপর। বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে মহারাষ্ট্রের জঙ্গল থেকে বানর ধরে তাঁরা ট্রায়াল করেছিল। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে আমরা ৩০ জুন বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক থেকে ৫৬টি বানর সংগ্রহ করেছি। সেগুলো আমাদের অ্যানিমেল সেন্টারে রেখে এক মাস অভিযোজন করিয়েছি। তারপর ১ আগস্ট থেকে বানরগুলোর ওপর ট্রায়ালের কাজ শুরু করেছি। যারা আমাদের সমালোচনা করেছিল, তাদের অনেকের এ–সংক্রান্ত কাজের অভিজ্ঞতা ছিল না। আর তাদের মধ্যে এখন অনেকেই বঙ্গভ্যাক্সের ট্রায়ালের সঙ্গে যুক্ত।’
গ্লোব বায়োটেকের তথ্যমতে, ইথিক্যাল ক্লিয়ারেন্সের জন্য বিএমআরসির কাছে টিকার ফেজ-১ ও ফেজ-২ ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রটোকল গত ১৭ জানুয়ারি জমা দেওয়া হয়।
ইথিক্যাল কমিটি প্রটোকল পর্যালোচনা করে শতাধিক বিষয়ে পর্যবেক্ষণ দেয়। পরে ৯ ফেব্রুয়ারি বিএমআরসি এ বিষয়ে একটি চিঠি দেয়। পরে সেসব প্রশ্নের জবাবসহ সংশোধিত প্রটোকল ও প্রয়োজনীয় তথ্য–উপাত্ত গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বিএমআরসিতে জমা দেয় গ্লোব। তার চার মাস পর গত ২২ জুন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আগে বানর অথবা শিম্পাঞ্জির ওপর টিকাটির ট্রায়াল করতে বলে বিএমআরসি।
এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ‘আমরা বিএমআরসির সহযোগিতা পাইনি। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের নৈতিক অনুমোদন না দিয়ে বানরের শরীরে ট্রায়ালের জন্য শর্ত জুড়ে দেওয়ার অর্থ হচ্ছে, এই টিকা যাতে উৎপাদন করতে বা অনুমোদন পেতে আরও অনেক সময় লাগে। এটি যেন আলোর মুখ না দেখে। যদি বানরের শরীরে প্রয়োগের প্রয়োজন হতো, তবে বিএমআরসি আরও চার মাস আগে এসব জানাতে পারত।’ সূত্র : প্রথম আলো
এএফ/০২