জৈন্তাপুরে ব্রিজ নির্মাণে অনিয়ম, কাজ না দেখেই বিল ছাড়

রেজওয়ান করিম সাব্বির, জৈন্তাপুর


আগস্ট ২৬, ২০২১
০৯:৫১ অপরাহ্ন


আপডেট : আগস্ট ২৬, ২০২১
০৯:৫১ অপরাহ্ন



জৈন্তাপুরে ব্রিজ নির্মাণে অনিয়ম, কাজ না দেখেই বিল ছাড়

সিলেটের জৈন্তাপুরে রিং ব্রিজ নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের তীর এলজিইডি’র কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে। জানা গেছে, রিং ব্রিজে জনচলাচলের জন্য মাটি না ফেলে ব্রিজের পূর্ণ বিল উত্তোলন করে নিয়েছেন ঠিকাদার। 

সরেজমিনে জৈন্তাপুর উপজেলার চারিকাটা ইউনিয়নের লালা-গৌরী রাস্তার বড়বাড়ী ভাঙ্গায় রিং ব্রিজ ঘুরে দেখা যায়, এলজিইডি’র ২০২০-২১ সালের ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণের আওতায় ২ লাখ টাকায় রিং ব্রিজ নির্মাণের জন্য টেন্ডার পায় সঞ্জিত এন্টারপ্রাইজ। ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করে কাজ করেছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি দায়সারাভাবে ব্রিজের সিসি ঢালাই, রিং স্থাপন, গার্ডওয়াল নির্মাণের মাধ্যমে কাজ সম্পন্ন করে। ব্রিজের ৫ হাজার টাকার মাটি ভরাটের কাজ থাকলেও মাটি ভরাট করা হয়নি। রিং ব্রিজ নির্মাণ হলেও এক মুহূর্তের জন্য চলাচলের সুযোগ পাননি এলাকাবাসী। মাটি ভরাট না থাকা এবং নিম্নমানের কাজ হওয়ায় সামান্য বৃষ্টির পানিতে ভেসে যায় সিসি ঢালাই ও উভয়পাশের রিং ধরে রাখার গার্ডওয়াল।

স্থানীয় বাসিন্দা ইজ্জত আলী, রুবেল আহমদ, নূর উদ্দিন, সমসির আহমদ ও সাজু মিয়াসহ প্রায় ২০/২৫ জন ব্যক্তি বলেন, রিং ব্রিজের কাজ শুরু হতেই অনিয়মের প্রশ্ন ওঠে। কিন্তু উপজেলা প্রকৌশলী কোনো প্রকার তদন্ত কিংবা পরিদর্শন ছাড়াই রহস্যজনক কারণে প্রতিষ্ঠানের কাজ সঠিক হয়েছে মর্মে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে পুরো বিল ছাড় দেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঠিকাদার বলেন, আমরা একটি কাজ পেলে উপজেলা এলজিইডি কিংবা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস যে পরিমাণ তদারকি করে এবং বিল ছাড় পেতে হলে দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হয়, যা বলে শেষ করা যাবে না। উপজেলার কোনো ঠিকাদার এ রকম কাজ করবে না। তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখার এবং প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেন।

ঠিকাদার সঞ্জিত বলেন, আমি কাজটি সঠিক নিয়ম মেনে করেছি। আমার কাজ সঠিক হওয়ায় এলজিইডি বিল পরিশোধ করে। দুর্ভাগ্যজনক কারণে কাজটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আমি পুনরায় কাজটি সঠিকভাবে করে দিচ্ছি।

এ বিষয়ে চারিকাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ আলম চৌধুরী তোফায়েল বলেন, এলাকাবাসীর নিকট থেকে বিষয়টি জানার পর সরেজমিনে কাজ দেখে এলজিইডি অফিসে জানাই এবং কাজটি সঠিকভাবে ও টেকসইভাবে করে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

উপজেলা এলজিইডি ইঞ্জিনিয়ার এ জেড এম তানভীর বলেন, বিল ছাড়ে কোনো অনিয়ম হয়নি। কাজটি সঠিক দেখে কাজের বিল ছাড় করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি দেখে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে মেরামত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত আজমেরী হক বলেন, বিষয়টি জানলাম। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এলজিইডিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


আরকে/আরআর-০২