গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি
সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২১
১২:৫৪ পূর্বাহ্ন
আপডেট : সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২১
১২:৫৯ পূর্বাহ্ন
সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ এলাকায় ডাকাত সন্দেহে গ্রামবাসীর পিটুনিতে নিহত অজ্ঞাত ব্যক্তির পরিচয় মিলেছে। তিনি গোয়াইনঘাট উপজেলার নগর ডেংরী গ্রামের আরিফ আহমদ (২৭)। গতকাল রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে নিহত ব্যক্তির পরিচয় পেয়ে পুলিশের একটি দল ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে সুহেল আহমদ (২২) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃত সুহেল গোয়াইনঘাট উপজেলার ডৌবাড়ী ইউনিয়নের নগর ডেংরী গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে, ডাকাতি, অস্ত্র উদ্ধার ও গণপিটুনিতে ডাকাত নিহতের ঘটনায় পৃথক ৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ডাকাতির ঘটনায় উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের মিশ্রপাড়া গ্রামের জ্ঞান সেনের ছেলে দুলাল সেন বাদী হয়ে ৪-৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় মামলা (নম্বর-১৩/১২.০৯.২০২১) দায়ের করেছেন। এছাড়া গণপিটুনিতে ডাকাত আরিফ নিহতের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ৩০০-৪০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা (নম্বর-১৫/১৩.০৯.২০২১) দায়ের করেছে এবং আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে আরও একটি মামলা (নম্বর-১৪/১৩.০৯.২০২১) দায়ের করেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত বাকিদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
আর ডাকাতদের গুলিতে আহত ৬ জনের অবস্থা কিছুটা আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য রেজাউল করিম রাজু।
এদিকে, গণপিটুনিতে নিহত আরিফের লাশ আইনি প্রক্রিয়া শেষে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি গোয়াইনঘাট উপজেলার ডৌবাড়ী ইউনিয়নের নগর ডেংরী গ্রামের মইন উদ্দিনের ছেলে।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতে গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের দত্তরাইল গ্রামের মিশ্রপাড়ায় জ্ঞান সেনের বাড়িতে হানা দেয় একদল ডাকাত। ডাকাতরা দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে জ্ঞান সেন ও তার স্ত্রী শক্তি রাণী সেনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বেঁধে ফেলে। এ সময় বাধা দিলে ডাকাতরা জ্ঞান সেনের ছেলে দুলাল সেনকে মারধর করে আহত করে। ডাকাতরা জ্ঞান সেনের ঘর থেকে নগদ ২ লাখ টাকা, ৬ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও মূল্যবান জিনিসপত্রসহ কয়েক লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। ডাকাতি শেষে সংঘবদ্ধ ডাকাতদল ভোররাতের দিকে পশ্চিম দত্তরাইল জামে মসজিদে আশ্রয় নেয়। মসজিদের ইমাম বিষয়টি স্থানীয় মহল্লাবাসীকে অবগত করলে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে ডাকাতদলকে ঘিরে ফেলেন। তখন ডাকাতরা পালানোর চেষ্টা করে। গ্রামের লোকজন ডাকাতদের ধাওয়া করলে তারা এলোপাতাড়ি গুলি ছোঁড়ে। এতে ৬ জন গ্রামবাসী আহত হন। এ সময় অন্য ডাকাতরা পালিয়ে গেলেও স্থানীয় লোকজন ডাকাত আরিফ আহমদকে ধরে গণধোলাই দেন। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।
এফএম/আরআর-০৫