সিলেট মিরর ডেস্ক
সেপ্টেম্বর ২১, ২০২১
১২:২১ পূর্বাহ্ন
আপডেট : সেপ্টেম্বর ২১, ২০২১
১২:২১ পূর্বাহ্ন
কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও এনএটিপি-২ প্রকল্পের পরিচালক মো. মতিউর রহমান বলেছেন, ‘এলাকা ভিত্তিক উৎপাদন বৃদ্ধি করে আমরা কৃষি ও মৎস্য খাতে মডেল তৈরী করতে চাই। সিলেটকে হাওর সমৃদ্ধ এলাকা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এখানে মাছের ব্যাপক উৎপাদন বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে।’
সোমবার (২০ সেপ্টম্বর) সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে সিলেট অঞ্চলের চার জেলার ১৮টি উপজেলার এনএটিপি-২ প্রকল্পের আঞ্চলিক বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তি ও রিসার্চ উন্নয়নের ফলে দেশ কৃষিতে ব্যাপক সফলতা লাভ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় এক ইঞ্চি জমিও পতিত রাখা যাবেনা এই নীতি অনুসরণ করে দেশের ৫৭টি জেলার ২৭০টি উপজেলায় এনএটিপি-২ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। রিসার্চ ও সম্প্রসারণ কর্মীর সমন্বয়ে কৃষিকে এগিয়ে নিতে হবে। তবে শুধু টেকনোলজির উন্নয়ন করলেই হয়না। মাঠে তা সম্প্রসারন করতে হবে।’
সিলেট কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক দিলীপ কুমার অধিকারীর সভাপতিত্বে দিন ব্যাপী এ কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সিলেট জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা দেবজিৎ সিংহ। এছাড়া অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন মৎস্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবদুল মোতালেব, বিভাগীয় প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ড. অমলেন্দু ঘোষ, সিএসও আরএআরএস বারি ড. জুলফিকার আলী ফিরোজ।
এ সময় সচিব দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘দেশে তিনশত প্রজাতির আম থাকার পরও ব্রান্ডিং নেই। অথচ পাকিস্থান বিপুল পরিমান আম রপ্তানী করে থাকে, তারা আমের ব্র্যান্ডিং করতে সক্ষম হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘নিরাপদ খাদ্য তৈরী করতে পারলে মানুষের মধ্যে বিশ্বস্ততা তৈরী হবে। এক সময় মানুষ মনে করত মোটা চাল হলে চলবে কিন্তু এখন মানুষ মানসম্পন্ন খাদ্য চায়। মার্কেটিংকে কৃষক পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে, তাহলে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব।’ এ ক্ষেত্রে কৃষিবিদদের এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।
ট্রেনিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন স্পেশিয়ালিষ্ট এম হারুনূর রশীদের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে রিসার্চ পেপার উপস্থাপন করেন ড. হালিমা খাতুন, ড. নওশের আলী, ড. জিপি দাস, ড. মাহমুদুল ইসলাম নজরুল, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবদুর রকিব, রফিকুল ইসলাম ও আশরাফুল আলম প্রমুখ।
কর্মশালায় সিলেট অঞ্চলের বিভিন্ন জাতের শস্যের উৎপাদন সমস্যা ও সম্ভবনার চিত্র তুলে ধরা হয়। এছাড়া এই অঞ্চলে দাজিলিং কমলা, সূর্যমুখী, তরমুজ, সরিষা চাষ বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করা হয়। কর্মশালায় সিলেট অঞ্চলের ১৪০ জন কৃষি ও প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা অংশ নেন।
কৃষি সেক্টরের কার্যক্রম তরান্বিত করার লক্ষ্যে ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল টেকনোলজিপ্রজেক্ট (এনএটিপি) নামক একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মসূচি শুরু করেছে। এ প্রকল্পের আওতায় ১৫ বছরে মোট তিনটি পর্ব বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পের প্রথম ফেইজ (এনএটিপি-১) ২০০৭-২০১৪ সময়ে বিশ্বব্যাংক, ইফাদ ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে বাস্তবায়িত হয়। প্রথম ফেইজ সফলভাবে বাস্তায়ন হওয়ায় পরে ‘ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল টেকনোলজি প্রোগ্রাম-ফেইজ ও প্রজেক্ট (এনএটিপি-২)’ প্রকল্পটি বিশ্বব্যাংক, ইফাদ, ইউএসএআইডি ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ২০১৫ সাল থেকে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে যা জুন ২০২৩ সাল পর্যন্ত চলবে। প্রকল্পটি দুটি মন্ত্রণালয়ের তত্ত¡াবধানে (কৃষিমন্ত্রণালয়-লীড মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়) বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পের উদ্দেশ্য কৃষি প্রযুক্তি উদ্ভাবন, সম্প্রসারন এবং পণ্য সরবরাহ ও বাজার ব্যবস্থা উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের ক্ষুদ্র, প্রান্তিক ও মহিলা কৃষকের কৃষি উৎপাদন ও আয় বৃদ্ধি এবং সর্বোপরি কৃষকের সামগ্রিক আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন করা ইত্যাদি।
বিএ-০৫