নিজস্ব প্রতিবেদক
সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২১
০২:১৭ পূর্বাহ্ন
আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২১
০২:২০ পূর্বাহ্ন
সিলেটের গোলাপগঞ্জ কৈলাশটিলা এলপি গ্যাস লিমিটেড ও রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানী লিমিটেড- আরপিজিসিএল একটি বেসরকারি লুটেরা গোষ্ঠির হাতে তুলে দেওয়ার গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে দাবি করে এটি প্রতিহত ও বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন সিলেটের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা।
বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে সিলেটের গুরুত্বপূর্ণ দুটি প্রতিষ্ঠান নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে দাবি করে বলা হয়, ‘কৈলাশটিলা গ্যাসক্ষেত্র নিয়ে ষড়যন্ত্র নতুন নয়। পাইপ লাইনের মাধ্যমে তেল-গ্যাস নিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদে আশির দশকে গোলাপগঞ্জ তথা সিলেটবাসীর গণআন্দোলন ষড়যন্ত্রকারীদের নিশ্চয়ই মনে আছে।’
এতে আরও বলা হয়, ‘গোলাপগঞ্জ এলপিজি প্ল্যান্ট ও আরপিজিসিএল প্ল্যান্ট কারো দয়ায় হয়নি। এলাকার গণমানুষের তীব্র গণআন্দোলনে প্ল্যান্ট দুটি গোলাপগঞ্জ স্থাপন করতে তৎকালীন সরকার বাধ্য হয়েছে।’
পরে, গণতান্ত্রিক সরকারের দুই প্রধানমন্ত্রীই ৮ বছরের ব্যবধানে প্ল্যান্ট দুটি ভিত্তিপ্রস্তর ও উদ্বোধন করেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘প্রায় ২২ বছরের বেশি সময় ধরে অত্যন্ত মানসম্মত উৎপাদন ও লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্ল্যান্ট দুটি পরিচালিত হয়ে আসছে। এমনি অবস্থায় দেশীয় একটি বেনিয়া লুটেরা গোষ্ঠির চোখ পড়েছে প্ল্যান্ট দুটির দিকে। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পেট্রোবাংলা ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন-বিপিসির কতিপয় অসাধু শীর্ষ কর্মকর্তা।’
তারা আরও বলেন, ‘প্রায় বছরখানেক আগে করোনায় যখন মানুষ বিপর্যস্ত তখন এই লুটেরা মহল তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বহুমুখী ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে প্ল্যান্ট দুটির উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে প্ল্যান্ট দুটিকে অলাভজনক দেখিয়ে লে-অফ ঘোষণা করে একটি বেসরকারি লুটেরা বেনিয়া গোষ্ঠির হাতে লিজ দেওয়ার পরিকল্পনা পাকাপোক্ত করেছে।’
সুশীল সমাজের নেতারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘এ গোষ্ঠির দোসর পেট্টোবাংলা ও বিপিসির কতিপয় কর্মকর্তা এলজিপি প্ল্যান্টের উৎপাদন বন্ধ রেখে প্রতিষ্ঠানটি রুগ্ন দেখিয়ে ইতোমধ্যে কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চট্টগ্রামে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। প্ল্যান্টটি বেসরকারি লুটেরা মহলের হাতে তুলে দিতে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব কষছে।’
পেট্রোবাংলা ও বিপিসির প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বিবৃতিতে বলেন, ‘প্ল্যান্ট দুটি নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র সিলেটবাসী বরদাশত করবে না। যে কোনো মূল্যে এই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা হবে।’
আগুন নিয়ে খেলা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, ‘সরকারকে প্ল্যান্ট দুটি অবিলম্বে পূর্ণাঙ্গরূপে চালু করার উদ্যোগ নিতে হবে। কোনো বেসরকারি লুটেরা গোষ্ঠি নয়; রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় প্ল্যান্ট দুটি চালু রাখতে হবে।’
এ ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় দলমত নির্বিশেষে গোলাপগঞ্জ তথা সিলেটবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন গণতন্ত্রী পার্টির কেন্দ্রীয় সভাপতি ব্যারিস্টার মো. আরশ আলী, সিলেট জেলা সিপিবির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট বেদানন্দ ভট্টাচার্য, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও সিলেট জেলা জাসদের সভাপতি লোকমান আহমদ, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আবুল কাশেম, আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট এমাদ উল্ল্যাহ শহিদুল ইসলাম, সুজন সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী, আইডিয়া’র নির্বাহী নজমুল হক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অম্বরিষ দত্ত, সাম্যবাদী দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক ধীরেণ সিংহ, ন্যাপ ঐক্য সিলেট জেলা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবল চন্দ্র পাল, সিপিবি জেলা সভাপতি হাবিবুল ইসলাম খোকা, বাসদ, সিলেট জেলার (মার্কসবাদী) আহ্বায়ক উজ্জল রায়, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সিকান্দর আলী, বাসদ সমন্বয়ক আবু জাফর, ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্ক্সবাদী) জেলা সভাপতি সিরাজ আহমদ, ন্যাপ ঐক্য সাধারণ সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস বাবুল, গণতন্ত্রী পার্টি সাধারণ সম্পাদক জুনেদুর রহমান চৌধুরী, সাম্যবাদী আন্দোলনের সমন্বয়ক সুশান্ত সিনহা সুমন, জাসদ সাধারণ সম্পাদক কে.এ কিবরিয়া চৌধুরী, সিপিবি সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন সুমন, জাসদ মহানগর সাধারণ সম্পাদক গিয়াস আহমদ, ওয়ার্কার্স পার্টি জেলা সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রানী সেন শম্পা, বাসদ (মার্ক্সবাদী) জেলা সদস্য অ্যাডভোকেট হুমায়ুন রশীদ শোয়েব, বাসদ জেলা সদস্য প্রণব জ্যোতি পাল, সাম্যবাদী আন্দোলনের অ্যাডভোকেট রণেন সরকার প্রমুখ।
বিএ-১৬