নিজস্ব প্রতিবেদক
সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২১
০৪:০৩ পূর্বাহ্ন
আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২১
০৪:০৩ পূর্বাহ্ন
সিলেট গণপরিবহনের সঙ্কট অনেক দিনের। তবে সম্প্রতি সিএনজিচালিত অটোরিকশার বাধ্যবাধকতায় ও ভাড়া বৃদ্ধির পর সেই সঙ্কট আরও বেড়েছে। নগরবাসী বলছেন, পর্যাপ্ত গণপরিবহন থাকলে তাদের ভোগান্তি কম হতো। এ দিকে ভোগান্তি কমাতে নগর এক্সপ্রেস তাদের রুট বাড়াতে চাইলেও শ্রমিকদের চাপে তা তারা পারছেন না বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের।
জানা যায়, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাস-মিনিবাস গণপরিবহন হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকলেও সিলেটে সিএনজিচালিত অটোরিকশাকেই গণপরিবহন হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। গত ১১ আগস্ট করোনার বিধি-নিষেধ শিথিল হলে সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভাড়া বাড়ে।
শ্রমিক ও মালিকদের দাবি, আগে তারা ৫ জন যাত্রী নিয়ে চলাচল করলেও এখন পুলিশ ৩ জনের অধিক যাত্রী পরিবহণে মামলা দিচ্ছে। তাই যাত্রীদেরকে বেশি ভাড়া দিতে হচ্ছে। ফলে প্রতিদিন চালক ও যাত্রীদের মধ্যে ঘটছে অনাকাঙ্খিত ঘটনা।
এদিকে বাধ্যবাধকতার কারণে রাস্তায় দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়েও সিএনজিচালিত অটোরিকশা পাচ্ছেন না যাত্রীরা। তবে বিআরটিএ বলছে, সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে গণপরিবহণ হিসেবে ব্যবহার অবৈধ।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সিলেট সার্কেলের সহকারী পরিচালক প্রকৌশলী মো. সানাউল হক সিলেট মিররকে বলেন, ‘সিএনজিচালিত অটোরিকশা হল ‘চুক্তি ভিত্তিক পরিবহন’। অর্থাৎ যাত্রী ও চালক চুক্তির ভিত্তিতে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাবেন। কিন্তু গণপরিবহনের মতো রাস্তায় যাত্রী তোলা বা নামানোর কোনো নিয়ম তাদের নেই। গণপরিবহন হিসেবে ব্যবহারের এর কোনো বৈধতাও নেই।’
এদিকে ২০১৯ সালের ২৫ ডিসেম্বর নগরের গণপরিবহন সঙ্কট দূর করতে সিলেটে নগর এক্সপ্রেসের যাত্রা শুরু হয়। ৪১ টি বাস নিয়ে এ সেবার চালুর কথা থাকলেও প্রথম দিকে নগরে বাস নামে ২১টি। আর বর্তমানে নগরে বাস চলাচল করছে ১৪ থেকে ১৫টি। নগর এক্সপ্রেস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বর্তমানে তিনটি রুটে এ বাসগুলো চললেও তারা আরও রুট বাড়ানোর পরিকল্পনা করছেন। তবে রুট বাড়াতে গেলে অটোরিকশা শ্রমিকদের চাপের মুখে তাদের পড়তে হয়।
গতকাল বুধবার দুপুরে বন্দরবাজার এলাকায় দীর্ঘক্ষণ সিএনজিচালিত অটোরিকশার খুঁজছিলেন পার্থ সারথী তালুকদার। এ সময় সিলেট মিররকে তিনি বলেন, ‘শিবগঞ্জ যাওয়ার জন্য অটোরিকশা খুজছি। তবে তিনজন যাত্রী নিয়ে অটোরিকশা চলায় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও গাড়ি পাচ্ছি না। এ দিকে ভাড়াও বেড়েছে। সব মিলিয়ে গণপরিবহন না থাকায় ঝামেলায় পড়েছি।’
নগরের আম্বরখানা এলাকায় আরেক যাত্রী নোমান চৌধুরী বলেন, ‘অফিসের কাজে প্রতিদিন উপশহরে যেতে হয়। আগে ভাড়া ছিল ২০ টাকা কিন্তু এখন ৩০ টাকা দিতে হচ্ছে। বাস হলে ভাড়াও কম হত, গাড়ির জন্য দীর্ঘসময় অপেক্ষাও করতে হত না।’
সিলেট সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও নগর এক্সপ্রেস সিটি বাস মালিক গ্রুপের আহবায়ক মখলিছুর রহমান কামরান সিলেট মিররকে বলেন, ‘আমাদের বেশ কয়েকটি বাস বসিয়ে রাখতে হচ্ছে। রুট বাড়াতে গেলে অটোরিকশা শ্রমিকদের প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হয়। তবে আমরা আরও রুট বাড়ানোর পরিকল্পনা করছি। এ বিষয়ে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করব।’
তবে এ বিষয়ে কথা বলতে সিলেট জেলা সিএনজিচালিত অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের (রেজি. নং-চট্ট-৭০৭) সভাপতি জাকারিয়া আহমদকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি তা ধরেননি।
এর আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর ট্রাফিক পুলিশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকদের নানাভাবে হয়রানি করছে বলে এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন সিএনজিচালিত অটোরিকশা মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ। তাদের ৬ দফা দাবি না মানলে আগামী ৩ অক্টোবর থেকে সিলেট জেলায় অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করা হবে বলেও ঘোষণা দেন তারা।
এনএইচ/বিএ-০১