নতুন বছরে তিন লক্ষ্য বিএনপির

সিলেট মিরর ডেস্ক


জানুয়ারি ০১, ২০২২
০৮:১০ অপরাহ্ন


আপডেট : জানুয়ারি ০১, ২০২২
০৮:১০ অপরাহ্ন



নতুন বছরে তিন লক্ষ্য বিএনপির

দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে রাষ্ট্রক্ষমতার বাইরে রয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি। এসময়ে রাজপথে ছোট-বড় প্রায় সব রকম আন্দোলন করে নিজেদের দাবি আদায়েরও চেষ্টা করেছে। কিন্তু প্রতিবারই তারা ব্যর্থতার সম্মুখীন হয়েছে।

এখন পর্যন্ত দলটি সফলতার মুখ দেখেনি। পৌঁছাতে পারেনি তাদের মূল লক্ষ্যে। কিন্তু চলতি বছরে আর ব্যর্থ হতে চায় না দলটি। এ বছরেই তারা দেশে গণতন্ত্র, মানুষের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার এবং খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে চায়। এজন্য দলটি রাজপথে আন্দোলন করছে। এই আন্দোলনকে সামনে আরও বেগবান করতে চায় তারা। আর আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নতুন বছরেই এই তিনটি লক্ষ্যে তারা পৌঁছাতে পারবে বলে মনে করছেন দলটির শীর্ষ নেতারা।

এ বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আশা করছি, এই নববর্ষে ২০২২ সালে জনগণ মুক্ত হবে, গণতন্ত্র মুক্ত হবে এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন। আর দেশে অবশ্যই আমরা একটা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হব।

এদিকে গত ২০ নভেম্বর খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার দাবিতে গণঅনশন করেছে বিএনপি। এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নতুন করে রাজপথে নেমেছে দলটি। একই দাবিতে ঢাকাসহ সারাদেশে বিক্ষোভ, সমাবেশ, মানববন্ধন ও মৌন মিছিলের মতো ৮ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কর্মসূচিগুলো বিএনপিসহ দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ব্যানারে অনুষ্ঠিত হয়।

এরপরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে ৩২ জেলায় সমাবেশ করেছে দলটি। গত ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই কর্মসূচিগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছে।

তবে ঘোষিত এসব কর্মসূচিগুলো থেকে বিএনপি সরকারকে তেমন কোন চাপে ফেলতে পারেনি বলে মনে করছেন দলটির নেতা কর্মীরা। তারা বলছেন, এসব কর্মসূচিগুলোতে শুধু সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। অন্য কিছু অর্জন হয়নি। আর যেসব কর্মসূচি দিলে সরকারকে চাপে ফেলা যাবে, সেসব কর্মসূচিতে যায়নি বিএনপি। আদৌ সেই কর্মসূচিতে বিএনপি যাবে কিনা তা নিয়েও দলটির নেতাকর্মীরা সন্দেহ প্রকাশ করছেন।

এবিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীল বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য বড় বড় লড়াই ও সংগ্রাম করেছি। এই লড়াই আমরা করে চলেছি। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতার আসার পর থেকে ষড়যন্ত্র করে রাজনীতিকে বিতাড়িত করার চেষ্টা করছে, তার বিরুদ্ধে আমরা তো লড়াই করে যাচ্ছি। আমরা এখনো লড়াই করছি। জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে আমাদের এই লড়াই এখন বেগবান হয়েছে। আর আমরা বিশ্বাস করি, এই লড়াই অতি অল্প সময়ে মধ্যে একটা দুর্বার গণআন্দোলনে পরিণত হবে। এই গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে সক্ষম হবো, আমরা আমাদের গণতন্ত্রকে উদ্ধার করতে সক্ষম হবো।

অন্যদিকে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তার বিদেশে চিকিৎসার দাবি এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চলমান আন্দোলনকে নতুন বছরে আরও বেগবান করতে চায় বিএনপি। এজন্য সারাদেশে দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে ঢেলে সাজাচ্ছে দলটি। পাশাপাশি দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও বিবাদ নিরসনেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক সিনিয়র নেতা বলেন, বর্তমানে বিএনপি সাংগঠনিকভাবে আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। এখন দলের হাই কমান্ড নির্দেশ দেয়া মাত্র বিএনপির নেতা কর্মীরা রাজপথে নেমে পড়বে। কিন্তু এর আগে গণঅনশন, সমাবেশ, বিক্ষোভ ও মানববন্ধনের মতো কর্মসূচি করে আমাদের ঐক্যকে আমরা আরো শক্তিশালী করছি।

নতুন বছরে বিএনপির লক্ষ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে দলটির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, লক্ষ্য হচ্ছে, এদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা ও মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়া এবং বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা। এজন্য আমরা আন্দোলন করছি। আর এই আন্দোলন চলবে।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করাই আমাদের লক্ষ্য। আর এটা চলমান প্রক্রিয়া। এটা চলতেই থাকবে।

আরসি-০৫