দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়, ইসির বৈঠকে বিশিষ্টজনরা

সিলেট মিরর ডেস্ক


মার্চ ২২, ২০২২
০৬:৪৫ অপরাহ্ন


আপডেট : মার্চ ২২, ২০২২
০৬:৪৫ অপরাহ্ন



দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়, ইসির বৈঠকে বিশিষ্টজনরা

জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের ডাকা সংলাপে অংশ নিয়ে দেশের ১৯ বিশিষ্ট নাগরিক বলেছেন, ‘দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়।’

আজ মঙ্গলবার (২২ মার্চ) দুপুরে এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সংলাপে ৩৯ বিশিষ্ট নাগরিককে আমন্ত্রণ জানানো হলেও অংশ নেন ১৯ জন। 

সংলাপে উপস্থিত বিশিষ্টজনদের মধ্যে ছিলেন- ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, মোস্তাফিজুর রহমান, জাফরুল্লাহ চৌধুরী, খুশি কবির, সঞ্জীব দ্রং, রোবায়েত ফেরদৌস, আলী ইমাম মজুমদার, আবদুল লতিফ মণ্ডল, মহিউদ্দিন আহমেদ, সিনহা এম এ সাঈদ, অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, ফরাস উদ্দিন, আবু আলম শহীদ খান, ইফতেখারুজ্জামান ও শাহীন আনাম।     

সংলাপে বিশিষ্টজনরা জাতীয় নির্বাচনে সবার ঐকমত্য ছাড়া ইভিএম ব্যবহার না করা, ভোটারদের বাধাহীনভাবে ভোটদানের অধিকার নিশ্চিত করা, ভোটের আগে-পরে ভোটারদের বিশেষ করে নারী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, নির্বাচনকালীন প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে আনার পরামর্শ দিয়েছেন।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘নির্বাচনকালীন সরকার নির্বাচনের ফলাফলের ব্যাপারে নিস্পৃহ থাকবে। সে নির্বাচনের ফলাফলকে নিজের পক্ষে নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ধরণের প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করবে না অথবা কোন ধরনের উৎসাহও যোগাবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘এমন সরকার যদি না থাকে, তাহলে নির্বাচন কমিশনের সংবিধান এবং আইনে প্রদত্ত অধিকার কার্যকর করার কোন সুযোগ নাই।’ 

সৎ ও যোগ্য প্রার্থীরাই যেন নির্বাচনে মনোনীত হন, তার জন্য দেশে যেসব আইন আছে তার প্রয়োগ ঘটাতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।   

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘বাংলাদেশে সুষ্ঠু এবং প্রতিযোগিতাপূর্ণ নির্বাচন করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাগুলো কী কী তা সবার মোটামুটি জানা আছে। আজকে সেই বিষয়গুলোই আমরা পুনঃউল্লেখ করেছি।’  

‘ধর্মীয় সংখ্যালঘু, জাতিগত সংখ্যালঘু, নারী এবং দুর্গম অঞ্চলে বসবাসকারীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে’ যোগ করেন তিনি। 

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘আগের নির্বাচন কমিশনারের কাছে আমরা এসেছিলাম। পূর্বে অনুষ্ঠিত দুটি অপ্রিয়, অবাঞ্চিত এবং কুৎসিত নির্বাচনের ভিত্তিতে তিনি আমাদের কাছে জানতে চান, সামনে কী করা যেতে পারে। আমরা বলেছিলাম, নির্বাচন কমিশনের ওপর মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনাই হলো সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’   

ইভিএমের ব্যাপারে পরিষ্কারভাবে জাতীয় ঐক্যমতের প্রয়োজন আছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। নির্বাচনে দেশি এবং বিদেশি পর্যবেক্ষকেরা নির্ভয়ে কাজ করতে পারবেন, তেমন পরিবেশ থাকার ওপর জোর দিয়েছেন দেবপ্রিয়।

সংলাপ শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, তারা বিশিষ্টজনদের প্রস্তাব ও পরামর্শ শুনেছেন। এসব পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।

দায়িত্ব নেওয়ার পর অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ করাটা ইসির একধরনের রেওয়াজ। কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র ১৫ দিনের মাথায় ১৩ মার্চ শিক্ষাবিদদের সঙ্গে প্রথম সংলাপ করে। সেদিন ৩০ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও সংলাপে এসেছিলেন মাত্র ১৩ জন। শিক্ষাবিদদের পর আজ বিশিষ্টজনদের সঙ্গে সংলাপ করল ইসি। 


সূত্র : দৈনিক সমকাল


এএফ/০১