সিলেট মিরর ডেস্ক
মার্চ ২৯, ২০২২
০৬:১৪ অপরাহ্ন
আপডেট : মার্চ ২৯, ২০২২
০৬:১৪ অপরাহ্ন
বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের ৪০ বছর উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের সিলেট বিভাগ আয়োজিত তিনদিন ব্যাপি লোক সংস্কৃতি উৎসব শুরু হয়েছে মঙ্গলবার থেকে।
মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) বিকেল ৫টায় ঢাক বাদনের সঙ্গে মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের সভাপতি, দেশবরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব, বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ভারতীয় হাই কমিশন ঢাকার পৃষ্ঠপোষকতায় সিলেটের আলী আমজাদের ঘড়ি সংলগ্ন এলাকা জুড়ে শুরু হওয়া এ উৎসবে সম্মানিত অতিথি ছিলেন ভারতীয় সহকারী হাই কমিশন সিলেটের সহকারী হাই কমিশনার নিরাজ কুমার জয়সওয়াল, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক তৌফিক হাসান ময়না, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের অধ্যাপক ড. রশিদ হারুন, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, গ্রাম থিয়েটারের যুগ্ম সম্পাদক প্রদীপ কুমার আগরওয়ালা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব ভবতোষ রায় বর্মন, ব্যারিস্টার মো. আরশ আলী, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতি মÐলীর সদস্য মোকাদ্দেস বাবুল, বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী হিমাংশু বিশ্বাস, সিলেট মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার ফয়ছল মাহমুদ, নাট্য পরিষদের প্রধান পরিচালক অরিন্দম দত্ত চন্দন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য শামসুল আলম সেলিম, সম্মিলিত নাট্যপরিষদ সিলেটের সভাপতি মিশফাক আহমেদ চৌধুরী মিশু।
বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার সিলেট বিভাগের সমন্বয়কারী রজত কান্তি গুপ্তের সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার এমএজি ওসমানী অঞ্চলের সমন্বয়কারী সৈয়দ সাইমুম আনজুম ইভানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের উদ্বোধক বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন ইউসুফ বলেন, বিগত প্রায় চারদশকের বেশি সময় ধরে দেশবাপী ঐতিহ্যবাহী বাংলা নাট্যের উৎস অনুসন্ধান করে আসছে বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার। আমাদের উদ্দেশ্য বাঙালির হাজার বছরের অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক চেতনাকে সুসংহত করে ভবিষ্যতের অভিসারী করা। তারই অংশ হিসেবে সিলেটের এ আয়োজন শহর অঞ্চলে আমাদের হাজার বছরের লোক সংস্কৃতিকে গণ মানুষের কাছে পৌছে দিবে সেই প্রত্যাশা করি।
সিলেট সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন সিলেট ও সিলেট মহানগর পুলিশের সহযোগিতায় তিনদিন ব্যাপী এ আয়োজনে উদ্বোধনী নৃত্য পরিবেশনা করে নৃত্যশৈলী সিলেট। ১০ জন বাউলের সম্মেলক লোক গানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। এরপরেই দর্শক মাতিয়ে মঞ্চে হাজির হয় বাংলাদেশ পুতুল নাট্য ও গবেষণা উন্নয়ন কেন্দ্র জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশনায় ঐতিহ্যবাহী পুতুল নাট্য।
এরপর মঞ্চে লোকগানের সঙ্গে লোকনৃত্য পরিবেশন করে বন্ধন থিয়েটার সুনামগঞ্জ, সিলেটের লোকগান দলীয় পরিবেশন করে রাধারমণ স্মৃতি তর্পণ, সিলেটের ঐতিহ্যবাহী বিয়ের গীত পরিবেশন করেন মালতী পাল ও তার সঙ্গীরা। এছাড়াও একক লোক গান পরিবেশন বিশিষ্ট লোকশিল্পী হিমাংশু বিশ্বাস, জামাল উদ্দিন হাসান বান্না, বাউল আব্দুর রহমান ও বাউল বশির উদ্দিন সরকার। সবশেষে পরিবেশিত হয় বাউল সূর্য্যলাল দাস ও বাউল সিরাজ উদ্দিনের দৈত্ব পরিবেশনা সিলেটের ঐতিহ্যবাহী মালজোড়া।
প্রতিদিন বিকেল ৫টা থেকে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে আরও থাকছে মণিপুরি নৃত্য, লোকনৃত্য, লোকগীতি, লোকনাট্য, ঢাক-বাদন, ঝুমুর-নৃত্য, কাঠি নৃত্য, পুথিপাঠ, পালানাটক, লাঠি খেলা, আইলামবর ইত্যাদি। উৎসবে সিলেট বিভাগের ৪ জেলা থেকে আগত দল ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোক শিল্পীরা অংশ নিচ্ছেন।
এছাড়াও উৎসব প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয়েছে কুষ্টিয়া থেকে আগত লোক বাদ্যযন্ত্রের স্টল ও লোক বিষয়ক বইয়ের প্রদর্শনী ও বিক্রয় কেন্দ্র।
আরসি-০৪