শামীম আহমেদ, ধর্মপাশা প্রতিনিধি
এপ্রিল ০৪, ২০২২
০২:১১ অপরাহ্ন
আপডেট : এপ্রিল ০৪, ২০২২
০২:১২ অপরাহ্ন
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের ১১টি গ্রামের কৃষকেরা নিজেরা চাঁদা তুলে স্থানীয় জামগড়া খালের প্রায় ৭০মিটার বাঁধে মাটি ফেলে বাঁধ পুননির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছেন। এতে ওই বাঁধ সংলগ্ন ঘাসী নদীর পাড়ে থাকা প্রায় ২৫০একর বোরো জমি ফসলডুবির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। গতকাল রবিবার (৩ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে বাঁধের কাজ শেষ হয় বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।
স্থানীয় এলাকার কয়েকজন কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের ঘাসী নদীর খানিকটা পশ্চিমে জামগড়ার খাল নামক একটি বাঁধ রয়েছে। বাঁধটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৭০মিটার। আর ঘাসী নদীটির দৈর্ঘ প্রায় ৫কিলোমিটার। এই নদীর তীরবর্তী স্থানে রয়েছে এখানকার বীর সিংহপাড়া, সানুয়া, হাতপাটন, নোয়াবন্দ,বাট্টা, দক্ষিণউড়া,বংশীকুন্ডা, বাসউড়া, নোয়াগাঁও,হামিদপুর ও মীর্জাপুর ১১টি গ্রামের ২৫০ একর বোরো জমি। স্থানীয় ঘাসী গাং জলমহালের একটি ডোবার মাছ বিক্রি করে এই টাকা দিয়ে স্থানীয় হামিদপুর গ্রামবাসী প্রতিবছর ফাল্গুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে এই বাঁধটিতে মাটি ফেলে এটি নির্মাণ কাজ করে আসছিলেন। কিন্তু এবার ওই ডোবার মাছ জলমহালটির ইজারাদারেরা গ্রামবাসীদেরকে ধরতে দেয়নি। এ অবস্থায় হামিদপুর গ্রামাবাসী এ বছর এই বাঁধে কোনো কাজ করেননি। সপ্তাহ খানেক আগে ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানি ওই বাঁধের তীরে এসে পড়ে। এতে কৃষকেরা ঘাসী নদীতে থাকা বোরো জমির ফসল নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান। স্থানীয় একদল যুবক এই কাজে এগিয়ে আসেন। তাঁরা এই ১১টি গ্রামের প্রায় একশ জন কৃষকের কাছ থেকে জামগড়া খালের বাঁধ পুনঃনির্মাণ করার জন্য চাঁদা তুলেন।
গত বুধবার (৩০মার্চ) সকাল ১০টা থেকে খননযন্ত্র দিয়ে মাটি উত্তোলন করে বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে ওই বাঁধ পুনঃনির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়। এতে বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের ১১টি গ্রামের ২৫০ একর বোরো জমি ফসল ডুবির হাত থেকে রক্ষা পেল।
বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের দক্ষিণ উড়া গ্রামের বাসিন্দা জামগড়া খালের বাঁধ পুনঃনির্মাণ কাজের অন্যতম সদস্য বিপ্লব বিশ্বাস বলেন, ‘সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অনেক কিছুই করা সম্ভব । এখানকার ১১টি গ্রামের কৃষকেরা সবাই মিলে চাঁদা দিয়েছেন। এই চাঁদার টাকা জামগড়া খালে বাঁধটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এমন একটি ভালো কাজে আমরা যুব সমাজ নিজেদেরকে সম্পৃক্ত করতে পেরে খুবই আনন্দিত ‘
ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) মো.মুনতাসির হাসান বলেন, ‘উপজেলার বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের ১১টি গ্রামের কূষকদের কাছ থেকে চাঁদার টাকা তুলে স্থানীয় যুবকদের বাঁধ পুননির্মাণ কাজে এগিয়ে আসার বিষয়টি অত্যন্ত প্রশংসনীয়।’
এএফ/০৫