ঝড়ের কবলে পড়ে ভেঙ্গে গেছে শান্তিগঞ্জের শহীদ তালেবের স্মৃতিস্তম্ভ

শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি


এপ্রিল ২৭, ২০২২
১২:৪১ অপরাহ্ন


আপডেট : এপ্রিল ২৭, ২০২২
১২:৪২ অপরাহ্ন



ঝড়ের কবলে পড়ে ভেঙ্গে গেছে শান্তিগঞ্জের শহীদ তালেবের স্মৃতিস্তম্ভ
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষোভ

বিজয় নিশান হাতে নিয়ে দৌঁড়ে আসছেন যোদ্ধা। সুনামগঞ্জের স্টিলের তৈরি দৃষ্টিনন্দন এই স্মৃতিস্তম্ভটি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তালেব উদ্দিনের স্মৃতিতে ২০১৫ সালে জেলা পরিষদের অর্থায়নে নির্মাণ করা হয়।

এ পর্যন্ত ৩ বার এই স্মৃতিস্তম্ভটি ভেঙে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বার বার স্মৃতিস্তম্ভটি ভেঙে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।

গত শনিবার(২৩ এপ্রিল) কালবৈশাখী ঝড়ে ভেঙ্গে পড়ে।  এতে স্মৃতি স্তম্ভের মুল অংশ থেকে ভেঙ্গে স্টেইনলেস স্টিলের অংশটি ভেঙ্গে মাটিতে পড়ে যায়। শহীদ তালেব উদ্দিন স্মৃতি স্তম্ভটি দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার না করায় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শহীদ তালেব উদ্দিন এ স্মৃতিস্তম্ভটি ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে ১০ লক্ষ টাকা ব্যায়ে বাস্তবায়ন করেছিল সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও বতর্মান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুল কবীর ইমন। জেলায় আগত অনেক পর্যটক এই স্মৃতিস্তম্ভটিতে এসে ছবি তুলেন এবং সময় পার করেন। এছাড়াও জেলায় বাস, প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন যানবাহনে যাওয়া ও আসার সময় মানুষজন দেখে মুগ্ধ হন। কিন্তু গত এক বছরের বেশি সময় ধরে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের ঐতিহাসিক আহসান মারা ব্রিজসংলগ্ন এ স্মৃতিস্তম্ভটিতে বড় ধরনের ফাটল দেখা দিলেও গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশের পর শহীদ তালেব উদ্দিন স্মৃতিস্তম্ভটি গত দুই মাস আগে সংস্কার কাজ শেষ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।  দুই মাস না পেরোতেই আবারও কাল বৈখাশী ঝড়ে স্মৃতিস্তম্ভটি ভেঙ্গে পড়ে। নির্মাণের পর থেকে এ পর্যন্ত ৩ বার স্মৃতিস্তম্ভটি ভেঙে যাওয়ার ঘটনা ঘটে।

শান্তিগঞ্জ উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. আতাউর রহমান জানান, ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধ কালীন সময়ে জয়কলসের আহসানমারা এলাকা একটি ঐতিহাসিক ঘটনার স্বাক্ষী। সেই স্মৃতিকে ধরে রাখতে শহীদ তালেব উদ্দিন স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণ করা হয়েছে।  স্মৃতিস্তম্ভটি বার বার ভেঙ্গে যাওয়া খুবই দুঃখ জনক এবং ক্ষোভ প্রকাশ করছি। স্মৃতিস্তম্ভটিকে দ্রুত সংস্কার করে পূর্বের ন্যায় সুন্দয্যেবর্ধন করা হউক।  

প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের ২৭ নভেম্বর পাকসেনাদের আক্রমণে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মঙ্গলকাটা ধরে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়ে। মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে পাশের গোধীগাঁও, নৈদেরখামার ও মীরেরচর এলাকায় এসে অবস্থান নিয়ে পাকসেনাদের সঙ্গে প্রতিরোধ যুদ্ধ চালিয়ে যান। এক পর্যায়ে তৎকালীন মহকুমা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তালেব উদ্দিন সেখানে আটকা পড়েন। পরে পাকবাহিনী সুনামগঞ্জ ছেড়ে যাবার সময় (৬ ডিসেম্বর ১৯৭১) সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের আহসানমারা এলাকায় তালেব উদ্দিন, দক্ষিণ সুনামগঞ্জের পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের ব্রাহ্মণগাঁও গ্রামের বাসিন্দা কৃপেন্দ্র দাস ও একজন বাগান শ্রমিককে এক রশি দিয়ে বেঁধে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে নদীতে ফেলে যায়। এস টি/বি এন-০৫