দোয়ারাবাজারে বন্যায় অন্তত ৫ জনের প্রাণহানি

দোয়ারাবাজার প্রতিনিধি


জুন ১৯, ২০২২
০৮:২৫ অপরাহ্ন


আপডেট : জুন ১৯, ২০২২
০৮:২৫ অপরাহ্ন



দোয়ারাবাজারে বন্যায় অন্তত ৫ জনের প্রাণহানি

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে চলছে বানভাসি মানুষের আহাজারি। চরম খাদ্য ও আশ্রয় সংকটে রয়েছেন পানিবন্দী প্রায় দুই লাখ মানুষ। গতকাল শনিবার পর্যন্ত বানের জলে  অন্তত ৫ জনের মারা গেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। বানের তোড়ে ভেসে যাচ্ছে গবাদিপশু। গত তিনদিন ধরে সকল প্রকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন শতশত মানুষ। মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় কোন প্রকার যোগাযোগ নেই স্বজনদের সঙ্গে। উদ্ধার কাজে নৌকা পাওয়া যাচ্ছে না।

গতকাল শনিবার সকালে জীবন বাঁচাতে গিয়ে উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের মহব্বতপুর এলাকার সাদ্দাম হোসেন ও জরিফ হোসেন নামের দুই সহোদর বানের জলে ডুবে নিখোঁজ হন। একজনের লাশ পাওয়া গেলেও জরিফ হোসেন এর লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। জরিফ এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।

এর দুইদিন আগে সমুজ আলী স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্রী তামান্না আক্তার (১৫) ও টিলাগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র সৌরভ হাসান (১১)। উভয়েই উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের রাজনগর গ্রামের ময়না মিয়ার সন্তান। শুক্রবার বজ্রপাতে বাংলাবাজার ইউনিয়নের বাঁশতলা এলাকার এক যুবক নিহত হয়।

গতকাল শনিবার বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে। বাঁচার জন্য অনেক মানুষের আকুতি, সামান্য আশ্রয়ের জন্য সাঁতার কেটে মানুষ ছুটে চলছে দিকবেদিক।

দোয়ারাবাজারে উপজেলার সদর ইউনিয়নের বড়বন্দ, মাইজখলা, লামাসানিয়া, পরমেশ্বীপুর, বিরসিংহ, নৈনগাঁও, মাঝেরগাঁও, মুরাদপুর, মাছিমপুর, দলেরগাঁও, লক্ষীপুর ইউনিয়নের এরুয়াখাই, চকবাজার, তিলোরাকান্দি, বড়কাটা, সুরমা ইউনিয়নের নূরপুর, সোনাপুর, বৈঠাখাই, হাছনবাহার গ্রামের অনেক মানুষ গতকাল থেকে ঘরের মধ্যে আটকা আছে। না খেয়ে আছে। তাদেরকে দ্রুত উদ্ধার করতে আহাজারি করছে মানুষ। ওইসব এলাকা থেকে অনেকেই যোগাযোগ করছেন। বানের জলে ভেসে গেছে খাদ্যসামগ্রী এবং কোটি কোটি টাকার ফিসারির মাছ।

উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামই তলিয়েগেছে। তিনদিন ধরে মোবাইল ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

বোগলাবাজার ইউনিয়নের আলমখালী, ক্যাম্পেরঘাট, ভোলাখালী, উরুরগাও, জিরাগাও বেরীবাধ ভেঙে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। ঘরে ঘরে পানি প্রতিটি গ্রামে।

উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের টেংরাটিলার সবচেয়ে উচু জায়গা টেংরা স্কুলমাঠ এখানেই মাথা সমান পানি। বৈঠাখাই, গিরিশনগর, শরীফপুর, মহব্বতপুর, কৈয়াজুড়ি, গোজাউড়া, টিলাগাঁও সহ সবকটি গ্রাম পানিবন্দী।

উপজেলার পান্ডারগাও ইউনিয়নের সবচেয়ে উচুঁ জায়গা শ্রীপুর বাজারে কোমর সামান পানি। উপজেলার সকল হাটবাজারের দোকানপাটে পানি ঢুকে পড়েছে।

দোয়ারাবাজার সদর, সুরমা, বোগলা, লক্ষীপুর নরসিংপুর, মান্নারগাঁও, পান্ডারগাঁও, দোহালিয়া, বাংলাবাজার ইউনিয়নের সকল গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। খাবার, পানীয় জলের তীব্র সংকটে পড়েছে মানুষ।

বিএ-০৫