নিজস্ব প্রতিবেদক
জুলাই ২৩, ২০২২
১২:৫৫ পূর্বাহ্ন
আপডেট : জুলাই ২৩, ২০২২
১২:৫৫ পূর্বাহ্ন
সঠিক ও স্বচ্ছপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশের মানুষের সেবা করে যেতে চায় যুক্তরাজ্যের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান লাভদেশ। বৃহস্পতিবার সিলেট প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রত্যয় ব্যক্ত করেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) যুক্তরাজ্য প্রবাসী সিলেটের মেয়ে ইয়াসমিন চৌধুরী।
লিখিত বক্তব্যে ইয়াসমিন চৌধুরী জানান, তাঁর প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান লাভদেশ প্রাইভেট লি. কোম্পানী, আম কারিজা ফাউন্ডেশন (এনজিও) এবং ইয়াসমিন ইজ ইয়াসমিন টিকটক এ কাজ করবে। তাকে সহযোগিতা করছেন তারই মেয়ে আরা ইকো ডিজাইনের প্রতিষ্ঠাতা আম্বার আরা চৌধুরী কেই ও রানা প্লাজা অগ্নিকান্ডের ঘটনায় বেঁচে ফেরা কয়েকজন ভিকটিম।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি, আমরা বিশ্বের যে কোন প্রান্তেই থাকি না কেন সবুজ শ্যামল ছায়া ঘেরা, মায়া ভরা এই বাংলাদেশের মানুষের জন্য সর্বদা আমাদের মন কাঁদে। এদেশের মানুষের দুঃখ দুর্দশা আর কষ্টের কথা শুনলে আমরা ব্যথীত হই। আমরা চাই এদেশের মানুষ কারো কাছে হাত না পেতে স্বীয় কর্মের মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবেন। এবারের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে দাঁড়াতে চাই। আমার লক্ষ অল্প অল্প করে হলেও এদেশের সুবিধা বঞ্চিত অবহেলিত মানুষদের স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার প্রয়াস চালানো। সুখে দুঃখে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের শক্তি ও সাহস যোগাতে আমার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে, এবারের বন্যার সময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দরদী মানুষজন ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। পাশাপাশি প্রবাসী ভাই-বোনেরাও বানভাসী মানুষের সহায্যে এগিয়ে এসেছেন।
তিনি আরও বলেন, গরীব ধনী নির্বিশেষে এবারের বন্যায় বাড়ীঘর হারিয়েছেন অনেকেই। বানের পানিতে ভেসে গেসে মাঠের ফসল, গরু-ছাগল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, খামারের কোটি কোটি টাকার মাছ। কর্মহীন হয়ে পড়েছেন অসংখ্য মানুষ। বানভাসি মানুষের কর্মের অবলম্বন বানের পানিতে বিনষ্ঠ হয়ে গেছে। বর্তমানে বন্যাদূর্গত মানুষের জন্য তিনটি বিষয় অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। তার মধ্যে খাদ্য, ঘরবাড়ি মেরামত এবং কর্মসংস্থান।
লাভদেশ, আম কারিজা ফাউন্ডেশন (এনজিও) এবং ইয়াসমিন ইজ ইয়াসমিন টিকটক এই তিনটি প্রতিষ্ঠান রানা প্লাজার ভিকটিমদেও সাথে নিয়ে এসব মানুষের জন্য কাজ করছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, আমার আহবানে সাড়া দিয়ে রানা প্লাজার ভিকটিমরা সিলেটে ছুটে এসেছেন বন্যার্তদের সাহায্যার্থে, নিজেদের শ্রম ঘাম বিলিয়ে দিতে। কেননা তারা মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছেন তারা জানেন মৃত্যু যন্ত্রনা কত বিভীষিকাময়। তাই ভয়াবহ বনায় সিলেটের মানুষের করুন কাহিনী শুনে তারা লাভদেশের পতাকাতলে সমবেত হয়েছেন। ইতোমধ্যে তারা বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের দুঃখ দুর্দশার কথা সরেজমিনে শুনেছেন এবং ভয়াবহ বন্যার ছোবলে ক্ষতবিক্ষত অঞ্চল ঘুরে দেখেছেন।
তিনি বলেন, আমরা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের খাদ্য, ঘর সংস্কার ও কর্মসংস্থানের জন্য একটি বিশেষ প্রকল্প গ্রহন করেছি। লাভদেশের নিজস্ব অর্থায়নে আমরা টি-শার্ট বিক্রির মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ দিয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের সাহায্য করতে চাই। আমার বাবা মরহুম আলহাজ্ব আব্দুল মুকিত চৌধুরী মাখন মিয়ার সম্পত্তিতে সিলেট নগরীর আম্বরখান, দর্শন দেউরী এবং বিয়ানীবাজারের ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চন্দরপুর আলীনগরে দুটি অফিস খোলা হয়ে গেছে। সেখান থেকে আমি কোন ভাড়া নেই না। সেই অফিসে রানা প্লাজার ভিকটিম ও আমাদের কর্মকর্তারা কাজ করবেন। যেখানে বন্যার্তদের সাহায্যার্থে লাভদেশের মনোগ্রাম ও রিমেম্বার ১৭-৬-২২ লিখা টিশার্ট ও বাংলা ডিজিটাল পপ ম্যাগাজিন সম্পাদনা করে বিক্রি করা হবে। সিলেট এই টি-শার্ট মিনিমাম ১১৩৬ টাকায় এবং লন্ডনে ৬৩.৬৩ পাউন্ড বাংলাদেশী টাকায় ৭,০০০ টাকা মূল্যে বিক্রি করা হবে। এখানে উল্লেখ্য যে, আমার পিতা তার সম্পত্তির তিন ভাগের এক ভাগ গরীবের জন্য দান করেছেন। আমার প্রাপ্যটুকু অসহায় মানুষের কল্যানে ব্যয় করা হবে। তাছাড়া আমার মেয়ে আম্বার আরা চৌধুরী কেই রানা প্লাজার ভিকটিমদের ফ্রি প্রশিক্ষণ প্রদান করবে। তার টিকটক পরিবারে ৩২ হাজার ফলোয়ার আছেন। সেখান থেকে প্রাপ্ত অর্থ মানবতার কল্যানে ব্যয় করা হয়।
এ ছাড়া দুর্গম এলাকায় পানিবন্দী হয়ে পড়া মানুষদের উদ্ধারে নৌকার চরম সংকট দেখা দেয়। তাই প্রাথমিকভাবে বিনামূল্যে কিছু নৌকা এসব এলাকার মানুষদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। এ সময় তিনি লাভদেশের এসব কার্যক্রমে সবাইকে সহযোগিতার আহবান জানান।
এএন/০১