ক্যাপ্টেন আছেন, ক্রু নেই, এক সিটে দুই যাত্রী!

নিজস্ব প্রতিবেদক


জুলাই ২৯, ২০২২
০৬:০১ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জুলাই ২৯, ২০২২
০৬:০১ পূর্বাহ্ন



ক্যাপ্টেন আছেন, ক্রু নেই, এক সিটে দুই যাত্রী!
বিমানের অব্যবস্থাপনা

বিমান উড্ডয়নের সময় ছিল রাত নয়টা। ছেড়েছে দুই ঘন্টা বিলম্বে রাত ১১টায়। বিলম্বের কারণ ফ্লাইট ক্যাপ্টেন প্রস্তুত হয়ে বসে থাকলেও কেবিন ক্রুদের খবর নেই। তাদের খুঁজে পেতে এনে তবেই ছাড়ার ব্যবস্থা। এখানেই শেষ নয়। একই নম্বরের বোর্ডিং পাস দেওয়া হয়েছে দুই যাত্রীকে। সমাধান চাইলেও পাত্তা না দিয়ে নানা ভোগান্তির পর-খালি সিট দেখে বসে পড়ার পরামর্শ দিলেন যাত্রীদের।

এটি একটি লোকাল বাসের চিত্র হলেও কথা ছিল। এমন ঘটনা ঘটেয়ে রাষ্ট্রিয় বিমান সংস্থা বাংলাদেশ বিমান। এক বোর্ডিং পাসের দুই যাত্রীদের একজন গোলাম রব্বানী চৌধুরী জানিয়েছেন এমন তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা। তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, ‘সমাধানের জন্য কেবিন ক্রু’র দ্বারস্থ হলেও তারা নূন্যতম সৌজন্যবোধ দেখানো প্রয়োজন বোধ করেননি। সমাধান তো দেনই-নি উল্টো মিথ্যাচার করেছেন।’

বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এমন ঘটনা ঘটে। রাত নয়টায় বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট বিজি-৬০৫ ঢাকা থেকে সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসার কথা থাকলেও কেবিন ক্রু না থাকায় দুই ঘন্টা বিলম্বে সেটি সিলেটের উদ্দেশ্যে ছাড়ে। এসব ঘটনায় বিমানের পেশাদারিত্ব ও ব্যবস্থাপনাকে প্রশ্ন বিদ্ধ করেছে। 

ওই ফ্লাইটের যাত্রী গোলাম রব্বানী চৌধুরী নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘বিমানের ফ্লাই ডিপারচার সিডিউল ছিল রাত ৯টায়। বিলম্ব হচ্ছে দেখে কারণ জানতে দায়িত্বশীলদের দারস্থ হলাম। তারা জানালেন, ফ্লাইট ক্যাপ্টেন প্রস্তুত আছেন কিন্তু ফ্লাইট পরিচালনার জন্য কেবিন ক্রু পাওয়া যাচ্ছে না।’ তারা আমাদের ধৈর্য্য ধরার কথা বলে জানালেন, কেবিন ক্রুদের বাসা থেকে খোঁজে আনার চেষ্টা চলছে।’ 

কর্তৃপক্ষের দুই ঘন্টার চেষ্টার পর কেবিন ক্রুদের খোঁজে আনার পর যাত্রীদের বিমানে আরোহণের আমন্ত্রণ জানানো হয় জানিয়ে গোলাম রব্বানী বলেন, ‘ফ্লাইটে আরোহনের পর সিটে বসতে গিয়ে দেখা গেল আমার সিটে আরেকজন বসে আছেন। ভদ্রলোককে আমার বোর্ডিং পাস দেখিয়ে বললাম, এটা আমার সিট নম্বর-‘সিক্সটিন-এ’। ওই ভদ্রলোকও আমাকে তাঁর সিট নম্বর দেখালেন ‘সিক্সটিন-এ’।’ এমন পরিস্থিতিতে সমাধানের জন্য কেবিন ক্রু’র দ্বারস্থ হলাম। তাঁকে বললাম, ‘বোর্ডিং পাস ইস্যু হয় সফটওয়্যারের মাধ্যমে তাহলে এ ধরণের ভুল হয় কিভাবে।’

কেবিন ক্রু কোনো উত্তর না দিয়ে দুজনের বোর্ডিং পাস নিয়ে যান চেক করে দেখার জন্য। দুই যাত্রী অপেক্ষা করতে থাকলেও তাদের প্রতি নূন্যতম কোনো সৌজন্যতা দেখানোর প্রয়োজন করেননি বলে অভিযোগ করেন তারা। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পরও কোনো সাড়া না পেয়ে পুনরায় ডেকে জিজ্ঞাস করলে তারা যাত্রীদের বলেন, ‘আপনাদের বোর্ডিং পাস লাগবে না। দুটি পাস পরীক্ষার জন্য বিমানবন্দর ডেস্কে পাঠিয়ে দিয়েছি। বিমানের দরজা বন্ধ হয়ে গেছে। ফ্লাইট ছেড়ে দিচ্ছে। আপনারা খালি সিট দেখে বসে পড়ুন।’

কেবিন ক্রুর এমন বক্তব্যে হতভম্ব হয়ে যান তারা। এর প্রতিবাদ করে বলেন, ‘এটি হতে পারে না। আইনগতভাবে ফ্লাইটে আরোহণের সময় যাত্রীর বোর্ডিং পাসের কপি সঙ্গে থাকতেই হবে।’ প্রতিবাদ করলে ফ্লাইটের ভেতর থেকেই একই নম্বরের বোর্ডিং পাস দুটি এনে তাদের হাতে ধরিয়ে দেন কেবিন ক্রু। তাঁর এমন কাণ্ডে হতবাক হয়ে যান যাত্রীরা। 

এ বিষয়ে জানতে ঢাকায় যোগাযোগের চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভভ হয়নি।


এএফ/০২