টাকা সাদা করেছেন ২ হাজার ৩১১ জন

সিলেট মিরর ডেস্ক


আগস্ট ০৮, ২০২২
১২:১২ পূর্বাহ্ন


আপডেট : আগস্ট ০৯, ২০২২
১২:০১ পূর্বাহ্ন



টাকা সাদা করেছেন ২ হাজার ৩১১ জন

গত অর্থ বছরে (২০২১-২২) শেয়ারবাজার, নগদ টাকাসহ বিভিন্ন খাতে অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করতে যে সুযোগ সরকার দিয়েছিল, তাতে খুব কমই সাড়া মিলেছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড–এনবিআরের চূড়ান্ত হিসাবে দেখা গেছে, সব মিলিয়ে ২ হাজার ৩১১ জন সুযোগটি গ্রহণ করে টাকা বৈধ করেছেন। এর বিপরীতে সরকারি কোষাগারে আয়কর জমা পড়েছে ১১৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা।

গত ৩০ জুন কালো টাকা বৈধ করার সুযোগটি শেষ হয়ে যায়। এর মেয়াদ আর বাড়ানো হয়নি।

অপ্রদর্শিত আয় সাধারণভাবে কালো টাকা নামে পরিচিতি পেয়েছে। আর সেটি মানুষের আয়ের হিসাবে আসাকে টাকা সাদা করা বলা হয়ে থাকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআরের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘শর্ত কঠিন থাকায় করদাতারা আগ্রহ দেখাননি। ফলে প্রত্যাশিত ফলাফল আসেনি।’

এর আগের অর্থবছর ১২ হাজারের বেশি করদাতা টাকা সাদা করেন। বিপরীতে সরকার প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা আয়কর পায়। স্বাধীনতার পর ওই বছর সবচেয়ে বেশিসংখ্যক করদাতা এ সুযোগ নেন।

চলতি অর্থবছরে কালো টাকার সুযোগ না দিলেও দেশ থেকে পাচার করা টাকা ফেরত আনতে সুযোগ দিয়েছে সরকার। যদিও প্রকারান্তরে কালো টাকার মালিকদের সুযোগ দেয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, যাদের বৈধ আয় আছে এবং টাকা বিদেশে সঞ্চিত আছে, শুধু তারাই বিশেষ এ সুবিধা পাবেন।

স্বাধীনতা-পরবর্তী সব সরকারই কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছে। তবে গত অর্থবছরে শেষবারের মতো সুযোগটি দেয়ার সময় শর্ত কঠিন করা হয়।

গত জুনে সমাপ্ত অর্থবছরে একজন করদাতাকে সর্বোচ্চ ২৭ শতাংশ পর্যন্ত কর দিতে হয়েছে। এত বেশি কর দিয়ে টাকা বৈধ করতে অনেকেই নিরুৎসাহিত হন বলে মনে করেন এনবিআর কর্মকর্তারা।

সেবার শেয়ারবাজার, ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, নগদ অর্থ, সঞ্চয়পত্র, জমি ও অ্যাপার্টমেন্ট কিনতে টাকা বৈধ করার সুযোগ দেয়া হয়।

সুযোগটি গ্রহণ করার বিষয়ে শর্ত হিসেবে বলা হয়, কেউ উল্লিখিত খাতগুলোতে ২৫ শতাংশ এবং তার সঙ্গে জরিমানা হিসেবে ‘অতিরিক্ত’ ৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার ঘোষণা দিতে পারবেন। এ জন্য এনবিআর, দুদক কিংবা সরকারের অন্য গোয়েন্দা সংস্থা আয়ের উৎস সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন করবে না। এই হিসাবে দেখা গেছে, প্রায় ২৭ শতাংশ কর দিয়ে সুযোগটি নিতে হয়।

এর আগের অর্থবছরে কেবল ১০ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ দেয়া হয়েছিল। এ কারণে অনেকেই এগিয়ে এসেছিল।


কোন খাতে টাকা সাদা

এনবিআরের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত অর্থবছরের সবচেয়ে বেশি টাকা সাদা হয়েছে নগদ অর্থ, ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ ও সঞ্চয়পত্রে।

এসব খাতে ২ হাজার ২৫১ জন কালো টাকা সাদা করার ঘোষণা দেন। এর বিপরীতে কর আহরণ হয় প্রায় ১১৩ কোটি টাকা।

পুঁজিবাজারে টাকা সাদা করেছেন কেবল ৫১ জন। এ খাত থেকে কর আদায় ৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা।

৯ জন উদ্যোক্তা নতুন শিল্প স্থাপনে সাড়া দেন। এর বিপরীতে কর পরিশোধ করেন ৯ লাখ টাকা।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কালো টাকা সাদা করার সযোগ দিয়ে সৎ করদাতাদের প্রতি অবিচার করছে সরকার। তাছাড়া এটি ন্যায়বিচারের পরিপন্থি।’

এনবিআরের সাবেক সদস্য আমিনুর রহমান বলেন, ‘বর্তমান আইনে ভলান্টারি ডিসক্লোজার বা স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে কালো টাকা বৈধ করার যে সুযোগ আছে, এটি প্রায় অকার্যকর। গতবার যে সুযোগ দেয়া হয়েছে, তা একই ধরনের। ফলে ভালো ফলাফল আসেনি।’

সূত্র : নিউজবাংলা


এএফ/০১