সাকিবের নৈপুণ্যে ইংলিশ পরীক্ষায় পাস করল বাংলাদেশ

খেলা ডেস্ক


মার্চ ০৬, ২০২৩
১০:১৫ অপরাহ্ন


আপডেট : মার্চ ০৬, ২০২৩
১০:১৬ অপরাহ্ন



সাকিবের নৈপুণ্যে ইংলিশ পরীক্ষায় পাস করল বাংলাদেশ


দীর্ঘ ৯ বছর পর ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার মুখে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশ। টানা সাত সিরিজ জয়ে দেশের মাটিতে অপ্রতিরোধ্য টাইগারদের মাটিতে নামিয়ে আনে ইংল্যান্ড। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম দুইটিতে হেরে সাগরিকায় লজ্জার রেকর্ডের সামনে অবতীর্ণ হয় তামিম ইকবালের দল। কিন্তু সিরিজের শেষ ম্যাচে ব্যাট-বল হাতে জ্বলে উঠে সাকিব আল হাসান। হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর ম্যাচে নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডারের ব্যাটিংয়ে অনবদ্য ৭৫ রান ও বল হাতে ৪ উইকেটের অসাধারণ পারফরম্যান্সে ইংলিশদের বিপক্ষে চট্টগ্রামে ৫০ রানে জয় তুলে নিয়েছে টাইগাররা।


২৪৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতে উড়ন্ত সূচনা আনে ইংলিশ দুই ওপেনার। এ জুটি মিলে গড়েন ৫৪ রান। তবে ইংল্যান্ডের দলীয় ৫৪ রানে প্রথম আঘাত হানে সাকিব আল হাসান। পাওয়ার প্লের আগের ওভারে সাকিবের বলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হয়ে সাজঘরে ফেরেন ফিল সল্ট। দলীয় ৫৪ রানে আউট হন এই ইংলিশ ব্যাটার। ২৫ বলে ৩৫ রান করেন তিনি।।


অপরদিকে পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে ইংলিশ শিবিরে আবার আঘাত হানেন পেসার এবাদত হোসেন। তার শিকার হয়ে ফেরেন ডেভিড ম্যালান। ১১ তম ওভারে ফের বোলিংয়ে এসে টাইগার অলরাউন্ডার ফেরান ৩৩ বলে ১৯ করা ওপেনার জেসন রয়কে। ফলে ১ রানে দ্রুত তিন উইকেট হারিয়ে চাপের মুখে ইংলিশরা। 


এরপর পাঁচে ব্যাট করেতে আসা স্যাম কারানকে সঙ্গে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখে জেমস ভিন্সি। এ জুটি মিলে গড়েন ৪৯ রান। তবে ভয়ংকর হয়ে ওঠা এ জুটি বিচ্ছেদ করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দলীয় ১০৪ রানে মিরাজের বলে লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ২৩ করে সাজঘরে ফেরেন কারান। এরপর আবারও সাকিব ও এবাদত জোড়া আঘাতে হেনেছে ইংল্যান্ড শিবিরে।


অপরদিকে দলীয় ১৫৮ রানে বাটলারকে আউট করেন তাইজুল। ২৪ বলে ২৬ রান করে আউট হন বাটলার। বাটলারের বিদায়ের পর ক্রিজে এসে সাজঘরে ফিরে যান আদিল রশিদ। রশিদকেও আউট করেন তাইজুল। ১৪ বলে ৮ রান করে আউট হন রশিদ। দলীয় ১৮২ রানে রেহান আহমেদকে সাজঘরে ফেরান সাকিব। ৭ বলে ২ রান করে আউট হন রেহান আহমেদ। শেষ ব্যাটার হিসেবে ক্রিস ওকেস আউট হলে ১৯৬ রানে অলআউট হয় ইংল্যান্ড। শেষ পর্যন্ত ৫০ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে টাইগাররা। বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন সাকিব আল হাসান। 


টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে স্বাগতিকরা। জয়ের ধারায় ফেরার লক্ষ্যে এই ম্যাচে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের পঞ্চম বলেই শূন্য রানে সাজঘরে ফিরেছেন লিটন কুমার দাস। স্যাম কারানের বলে জস বাটলারের হাতে ক্যাচ তুলে দেন এই ডানহাতি ব্যাটার। এরপর কারানের দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে জেমস ভিন্সির হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে ফিরেছেন তামিম ইকবাল। সাজঘরের পথ ধরার আগে ৬ বলে ১১ রান এসেছে টাইগার অধিনায়কের ব্যাট থেকে।


এরপর বাংলাদেশের সেই চাপ সামলে ইনিংস মেরামতের গুরুদায়িত্ব নেন নাজমুল শান্ত-মুশফিক। তারা দুজনে মিলে ৯৮ রানের জুটি গড়েন। ফলে ইংলিশ বোলারদের সামলে নাজমুল-মুশফিক জুটিটা বেশ জমেও উঠেছিল। তবে শান্তর রান আউটের ফাঁদে পড়ে বিদায়ে ভেঙে যায় এ জুটি। সাজঘরে ফেরার আগে ৭১ বলে পাঁচ বাউন্ডারিতে ৫৩ রান করেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। নাজমুলের ফিরে যাওয়ার দুই বল পর ফিফটির দেখা পান মুশফিক। 


এরপর উইকেটে আসা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে সঙ্গে নিয়ে খেলতে থাকেন টাইগার উইকেটরক্ষক মুশফিক। তবে দলীয় ১৫৩ ও ১৬৩ রানে ফের জোড়া উইকেট হারায় বাংলাদেশ। মুশফিক ৯৩ বলে ৭০ ও রিয়াদ ৯ বলে ৮ রান করে সাজঘরে ফিরে যান। এরপর সাকিব ও আফিফ মিলে রানের চাকা সচল রাখেন। চড়া ব্যাটিংয়ে নিজের অর্ধশতক পূরণ করেন সাকিব। তবে দলীয় ২১২ ও ২১৯ রানে আবারো জোড়া উইকেট হারায় টাইগাররা। 


আফিফ ২৪ বলে ১৫ ও মিরাজ ৬ বলে ৫ রান করে আউট হন। এরপর দলীয় ২২৭ রানে ৬ বলে ২ রান করে সাজঘরে ফিরে যান তাইজুল ইসলাম। এরপর মারমুখি ভঙ্গিতে ব্যাট করতে থাকেন সাকিব। তবে দলীয় ২৪৬ রানে ৭১ বলে ৭৫ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে আউট হন সাকিব। শেষ পর্যন্ত সব উইকেট হারিয়ে ২৪৬ রানের সংগ্রহ পায় টাইগাররা। এদিন ইংলিশদের হয়ে বল হাতে জোফরা আর্চার নেন ৩টি উইকেট। এছাড়া ২টি করে উইকেট নেন স্যাম কারান ও আদিল রশিদ।


এসই / ১৩