নবীনদের খোঁজে শাবিপ্রবিতে সাংস্কৃতিক অঙ্গনগুলোর ‘সাংগঠনিক সপ্তাহ’

হাসান নাঈম, শাবিপ্রবি


সেপ্টেম্বর ০৪, ২০২৩
০২:০৩ পূর্বাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ০৪, ২০২৩
০২:০৩ পূর্বাহ্ন



নবীনদের খোঁজে শাবিপ্রবিতে সাংস্কৃতিক অঙ্গনগুলোর ‘সাংগঠনিক সপ্তাহ’


একজন শিক্ষার্থীর চিন্তা, মননশীলতা বিকাশে এবং পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের বিকল্প নেই। এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নিজেদের যোগ্য করে প্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ পায়। আর সেসব কর্মকাণ্ড নিয়ে সারাবছর সরব থাকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) পঞ্চাশ উর্ধ সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন।

এ লক্ষ্যে নবীন শিক্ষার্থীদের খোঁজ সাংগঠনিক সপ্তাহ-২০২৩ শুরু করেছে সাংস্কৃতিক অঙ্গনগুলো।

আজ রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাভবন- 'ডি' এর সম্মুখে, অর্জুনতলা ও কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পার্শবর্তী জায়গায় নতুন সদস্য সংগ্রহে টেন্ট বসিয়েছে সংগঠনগুলো। 

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫০ এর অধিক সাংস্কৃতিক সংগঠন রয়েছে। সংগঠনগুলো দুই পর্বে (সপ্তাহ) নবীন সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করবে। প্রথম সপ্তাহে নৃত্য বিষয়ক সংগঠন নৃৎ, চলচ্চিত্র বিষয়ক সংগঠন চোখ ফিল্ম সোসাইটি, আবৃত্তি বিষয়ক সংগঠন মাভৈঃ আবৃত্তি সংসদ, নাট্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শিকড়, দিক থিয়েটার ও থিয়েটার সাস্ট, সাস্কৃতিক বিষয়ক সংগঠন আজ মুক্তমঞ্চ, সংগীত বিষয়ক সংগঠন নোঙর ও রিম মিউজিক্যাল ক্লাব।

এছাড়া বিতর্ক বিষয়ক সংগঠন শাহজালাল ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি ও সাস্ট-স্কুল অব ডিবেট, সাহিত্য বিষয়ক সংগঠন সাস্ট সাহিত্য সংসদ ও কার্টুন বিষয়ক সংগঠন কার্টুন ফ্যাক্টরি তাদের সাংগঠনিক সপ্তাহ করবে। এর পরের সপ্তাহে অন্যান্য সংগঠনগুলো তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবে বলে জানায় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সম্বনয়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিব। 

সাংগঠনিক সপ্তাহ নিয়ে তিনি বলেন, সাংগঠনিক সপ্তাহ মূলত একটি সংগঠনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়, আজ (রবিবার) থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত ২টি ধাপে সংগঠনগুলো সাংগঠনিক সপ্তাহ পালন করবে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে ভবিষ্যত নেতৃত্ব তৈরি লক্ষ্যে এবং নিজেদের পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলতে সহ-শিক্ষা কার্যক্রমের বিকল্প নেই।

মাভৈঃ আবৃত্তি সংসদের সভাপতি শাহরিয়া আফরিন প্রকৃতি বলেন, ‘মাভৈঃ আবৃত্তি সংসদ’ কবিতা নিয়ে বিভিন্ন নিরীক্ষাধর্মী কাজ করে থাকে। যার ফলে সংগঠনটি ‘বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ’ এর স্থায়ী সদস্যপদ লাভ করে। যারা কবিতাকে বুকে ধারণ করে সমাজের সকল অসঙ্গতি দূর করতে চায়, সেসকল কবিতাপ্রেমীদের নিয়ে আমাদের পথচলা। তাই সকল কবিতাপ্রেমী শিক্ষার্থীদেরকে সংগঠনটির সদস্য হওয়ার আমন্ত্রণ জানাই।

নৃৎ এর সভাপতি শ্রেয়সী দাশ পুরকায়স্থ বলেন, ক্যাম্পাসের একমাত্র নৃত্য বিষয়ক সংগঠন হিসেবে নৃৎ নৃত্যপ্রেমী ও উৎসুক শিক্ষার্থীদের জন্য এখানে একটি স্বর্ণিম সুযোগ প্রদান করছে। এই সংগঠনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নাচের মাধ্যমে নিজের প্রতিভা দেখাতে এবং পরিচয় করাতে পারবেন। পাশাপাশি ডিজাইনিং, ভিডিওগ্রাফি, এডিটিং, পাবলিসিটি ও পাবলিকেশন, শো ম্যানেজমেন্টসহ বিভিন্ন সেক্টরে কাজ শেখার সুযোগ আছে। 

দিক থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক আর্নিকা দেব বলেন, দিক থিয়েটার ক্যাম্পাসের অন্যতম একটি নাট্যসংগঠন। আমরা গত ২৫ বছর সফলতার সাথে নাট্যচর্চা করে যাচ্ছে। থিয়েটার মানুষের চিন্তা ও মননের বিকাশে পড়াশোনার পাশাপাশি ভালো মানুষ হয়ে উঠার প্রক্রিয়ায় অবদান রাখছে। প্রতিবছর সাংগঠনিক সপ্তাহের মাধ্যমে আমরা নবীন শিক্ষার্থীদেরকে বরণ করে নেওয়া হয় এবং নাট্যচর্চায় তাদেরকে অনুপ্রাণিত করা হয়।

শিক্ষা কার্যক্রমের বাহরে বেশি শিখছে জানিয়ে কয়েক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেন, 'সংগঠনগুলোতে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টি হবার মাধ্যমে নিজেকে নিয়ে ভাবার অনেক সুযোগ হয়। নেতৃত্বের দক্ষতা তৈরি, সাংগঠনিক দক্ষতা ও নিজেকে যোগ্য করে তৈরি করার জন্য কোনো না কোনো সংগঠনের সাথে যুক্ত থাকা উচিৎ। শিক্ষার্থীরা একাডেমিকের বাইরে এসব সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড থেকে অনেক বেশি শিখতে পারে।

উল্লেখ্য, শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে ২৮টি বিভাগের শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে ৫০এর অধিক সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী, বিজ্ঞান ভিত্তিক ও ক্যারিয়ার বিষয়ক সংগঠন রয়েছে। একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি যোগ্য নেতৃত্ব তৈরিতে সহ-শিক্ষা কার্যক্রমের পরিচালনা করে আসছে সংগঠনগুলো। শিক্ষার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অন্যতম শাবিপ্রবি। যার সুনাম রয়েছে দেশব্যাপী।


এএফ-১০