মেননের চেয়ে কথিত সহকারীর আয় ৪৬ গুণ বেশি

সিলেট মিরর ডেস্ক


ডিসেম্বর ০৬, ২০২৩
১২:১১ অপরাহ্ন


আপডেট : ডিসেম্বর ০৬, ২০২৩
১২:১১ অপরাহ্ন



মেননের চেয়ে কথিত সহকারীর আয় ৪৬ গুণ বেশি


দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে প্রার্থী হয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। একই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন যুবমৈত্রীর সাবেক সহসভাপতি (বহিষ্কৃত) আতিকুর রহমান এবং ওয়ার্কার্স পার্টির বরিশাল জেলা সাধারণ সম্পাদক টিপু সুলতান।

মনোনয়নপত্রের সঙ্গে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেওয়া এই তিন প্রার্থীর হলফনামা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, রাশেদ খান মেননের বার্ষিক আয় সাত লাখ টাকারও কম। তবে প্রতিদ্বন্দ্বী আতিকুর রহমানের বার্ষিক আয় প্রায় সোয়া তিন কোটি টাকা।

টিপু সুলতানের বার্ষিক আয় প্রায় সোয়া ১০ লাখ টাকা। রাশেদ খান মেনন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী থাকাকালীন আতিকুর নিজেকে তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে পরিচয় দিতেন।

বরিশাল জেলা ওয়ার্কার্স পার্টি সাধারণ সম্পাদক টিপু সুলতান বলেন, ‘আতিকুর রহমান একসময় রাশেদ খান মেননের সঙ্গে সঙ্গে থাকতেন। তাঁকে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের পরিচালকও বানিয়েছিলেন। তবে তিনি রাশেদ খান মেননের ব্যক্তিগত সহকারী কখনোই ছিলেন না। তাঁর যত সম্পদ সব অবৈধভাবে অর্জিত। এ কারণেই তাঁকে যুবমৈত্রীর সহসভাপতি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।’

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে সংগ্রহ করা হলফনামা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, রাশেদ খান মেনন চাকরি থেকে বছরে আয় করেন ছয় লাখ ৬০ হাজার টাকা। বছরে অন্যান্য আয় দেখিয়েছেন ছয় হাজার ৩৪৫ টাকা।

সাবেক যুবমৈত্রী নেতা আতিকুর রহমান ব্যবসা থেকে তাঁর বছরে আয় দেখিয়েছেন তিন কোটি ছয় লাখ ৮৪২ টাকা, বাড়িভাড়া থেকে আয় দেখিয়েছেন পাঁচ লাখ ৪৪ হাজার ৫০০ টাকা। জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক টিপু সুলতান আইন ব্যবসা থেকে আয় দেখিয়েছেন ছয় লাখ ৮৩ হাজার ৪৯ টাকা এবং বাড়িভাড়া থেকে আয় দেখিয়েছেন তিন লাখ ৩৬ হাজার টাকা।

রাশেদ খান মেননের নিজ ও স্ত্রীর নামে শেয়ার ও সঞ্চয়পত্র আছে ৬০ লাখ ৬০ হাজার টাকার; আতিকুর রহমানের শেয়ার ও সঞ্চয়পত্র রয়েছে এক কোটি ৮০ লাখ ১৪ হাজার ২৫৪ টাকার। তবে টিপু সুলতানের শেয়ার অথবা সঞ্চয়পত্র ক্রয় করা নেই।

রাশেদ খান মেননের নিজের নগদ অর্থ আছে এক কোটি ৯ লাখ ৪৯ হাজার ৯৭১ টাকা। তাঁর স্ত্রীর নামে রয়েছে এক লাখ ৭৫ হাজার ৩৭৮ টাকা। অন্যদিকে আতিকুর রহমান ও টিপু সুলতানের নগদ কোনো অর্থ নেই।

রাশেদ খান মেননের ব্যাংকে জমা নিজ নামে ১৪ লাখ ৬০০ টাকা, স্ত্রীর নামে ১৪ লাখ ৩৩ হাজার ৪৭৭ টাকা। আতিকুর রহমানের ব্যাংকে জমা নিজ নামে পাঁচ হাজার টাকা, স্ত্রীর নামে পাঁচ লাখ ২৯ হাজার ৫৪৬ টাকা। টিপু সুলতানের ব্যাংকে জমা নিজ নামে আট লাখ এক হাজার ৭৬৯ টাকা, স্ত্রীর নামে চার লাখ ৭৩ হাজার ৫৮৫ টাকা।

রাশেদ খানের দুটি গাড়ি আছে, যার একটি নিজ নামে, মূল্য ৪৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। অন্যটি স্ত্রীর নামে, মূল্য এক কোটি ১০ লাখ ছয় হাজার ৮০০ টাকা। টিপু সুলতানের দুটি গাড়ি রয়েছে, যার একটি নিজ নামে, মূল্য পাঁচ লাখ ৭২ হাজার ৫০০ টাকা। অন্যটি স্ত্রীর নামে, মূল্য ২৫ লাখ টাকা। তবে আতিকুর রহমানের গাড়ি একটি, মূল্য ২৪ লাখ ৬৪ হাজার টাকা।

রাশেদ খান মেননের নিজ কিংবা স্ত্রীর কোনো স্বর্ণালংকার নেই। তবে আতিকুর রহমানের স্ত্রীর ৩০ ভরি স্বর্ণালংকার এবং টিপু সুলতানের নিজের ২০ তোলা ও স্ত্রীর নামে ৩০ ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে।

রাশেদ খান মেননের স্ত্রীর নামে একটি বাড়ি আছে। মূল্য দেখানো হয়েছে এক কোটি ৪৯ লাখ ৮০ হাজার ২৪০ টাকা। তবে আতিকুর রহমানের যে বাড়ি আছে তার মূল্য দেখানো হয়েছে পাঁচ কোটি ৫৪ লাখ ৫৫ হাজার ৭৯৬ টাকা। টিপু সুলতানের নিজ নামে একটি বাড়ি রয়েছে, যার মূল্য ৩০ লাখ ৭২ হাজার ৬০০ এবং স্ত্রীর নামে সমমূল্যের একটি বাড়ি আছে।


এএফ/০৫