সংরক্ষিত আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি হলেন রুমা চক্রবর্তী

সিলেট মিরর ডেস্ক


ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৪
০৬:৩১ অপরাহ্ন


আপডেট : ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৪
০৭:৪৪ অপরাহ্ন



সংরক্ষিত আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি হলেন রুমা চক্রবর্তী


দ্বাদশ জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত ৫০টি আসনে ৫০ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।

আজ রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার সংরক্ষিত ৫০টি আসনের একক প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করেন।

এ ঘোষণার মধ্যদিয়ে সিলেট থেকে সংরক্ষিত আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা রুমা রায় চৌধুরীও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন।

আগামী ১৪ মার্চ এই নির্বাচনে ভোট গ্রহণের তারিখ ছিল। তবে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় ভোটের প্রয়োজন হয়নি। এই নির্বাচনের ভোটার জাতীয় সংসদে সরাসরি ভোটে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা। তবে কখনো ভোট হতে দেখা যায়নি।

এর আগে ১৪ ফেব্রুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে সিলেট থেকে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেয় বীর মুক্তিযোদ্ধা রুমা রায় চৌধুরীকে। যিনি রুমা চক্রবর্তী হিসেবে সর্বাধিক পরিচিত। 

আওয়ামী লীগের এই প্রার্থীর নাম প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই অনেকেই চমক হিসেবে দেখেছিলেন। সিলেটের ১৯টি সংসদীয় আসনে একমাত্র সংরক্ষিত সংসদ সদস্য হয়েছেন তিনি।

জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে বিভিন্ন দল বা জোটের পাওয়া আসনের সংখ্যানুপাতিক হারে নারী আসন বণ্টন করা হয়। ১৪-দলীয় জোটের দুটি আসন এবং স্বতন্ত্র ৬২ জন সদস্যের সমর্থন নিয়ে এবার আওয়ামী লীগ পেয়েছে ৪৮টি আর জাতীয় পার্টি পেয়েছে ২টি সংরক্ষিত আসন। গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পেয়েছে ২২৪টি আসন। জাতীয় পার্টির আসন ১১টি। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোটভুক্ত ওয়ার্কার্স পার্টির আসন ১টি, জাসদ পেয়েছে ১টি আসন। এ ছাড়া বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি পেয়েছে ১টি আসন।

সংরক্ষিত ৫০টি নারী আসনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীরা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন ১৮ ফেব্রুয়ারি। এরপর ১৯ ও ২০ ফেব্রুয়ারি বাছাইয়ে সবার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। 

মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ছিল রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টা পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কেউ মনোনয়ন প্রত্যাহার না করায় ৫০ জনকেই বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী নারী প্রার্থীদের গেজেট আগামী মঙ্গলবার প্রকাশ করা হতে পারে। গেজেট প্রকাশের পর শপথ নেবেন ৫০ নারী সদস্য।

রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার রবিবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, মোট ৫০টি মনোনয়নপত্র পেয়েছিলেন, বাছাইয়ে ৫০টি মনোনয়নপত্রই বৈধ হয়। আজ বিকেল চারটা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সুযোগ ছিল। এই সময়ে কেউ প্রত্যাহারের আবেদন করেননি। সবার মনোনয়নপত্র বৈধ হওয়ায় জাতীয় পার্টি থেকে দুজন ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং তাদের জোট থেকে পাওয়া ৪৮ জনকে বেসরকারিভাবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।

সিলেটের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার বাইরে থাকা রুমা চক্রবর্তী বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের প্রথম মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছিলেন। এছাড়াও কাজ করেছেন একেবারে তৃণমূলে। ১৯৯৭ সালে  ৯নং মুল্লাপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ১ নং ওয়ার্ডের (৭,৮ ও ৯ ওয়ার্ড) সদস্যা হিসেবে নির্বাচিত হোন।

২০১০ সালের নভেম্বর মাসে বিয়ানীবাজার উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৯ সালের জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত মহিলা আওয়ামী লীগের প্রথম কাউন্সিলে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

 ১৯৫৬ সালের ৫ মার্চ সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার কালিগঞ্জের মৌজপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বাবা রবীন্দ্র রায় চৌধুরী ও মাতা সরুজু বালা রায় চৌধুরীর পাঁচ কন্যার মধ্যে চতুর্থ। বাবা বরীন্দ্র রায় চৌধুরী সিলেট পৌরসভায় ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত (আমৃত্যু) এম.বি ডাক্তার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

রুমা চক্রবর্তী একাত্তরে স্কুল ছাত্রী ছিলেন। দেশের টানে ঝাঁপিয়ে পড়েন মুক্তিযুদ্ধে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নেন তিনি। এছাড়া আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য আগে থেকেই নিজেকে তৈরি করেন এই সাহসী নারী।

১৯৭৫ সালে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য রমেন্দ্র চক্রবর্তীর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।



এএফ/০৮