করোনা আতঙ্ক : ঝুঁকিতে ফেঞ্চুগঞ্জের চা শ্রমিকরা

শহীদ আহমদ চৌধুরী, ফেঞ্চুগঞ্জ


মার্চ ৩০, ২০২০
০৩:০৫ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মার্চ ৩০, ২০২০
০৩:০৬ পূর্বাহ্ন



করোনা আতঙ্ক : ঝুঁকিতে ফেঞ্চুগঞ্জের চা শ্রমিকরা

বাংলাদেশ চা বোর্ড কর্তৃক নিবন্ধনকৃত ১৬০টি চা-বাগান রয়েছে দেশে। আর এই বাগানগুলোতে কর্মরত আছেন প্রায় ২ লাখের মতো চা শ্রমিক। করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ এ সময়ে অন্য সব প্রতিষ্ঠানে ছুটি দেওয়া হলেও এখনও ছুটি পাননি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকা চা শ্রমিকরা।

সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার একাধিক চা-বাগানের শ্রমিকদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, উপজেলার অধিকাংশ চা-বাগান এলাকাগুলোতে করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাব নিয়ে তেমন মাতামাতি নেই। কিছু কিছু বাগানে অবশ্য সচেতনামূলক প্রচার চালানো হয়েছে। ব্যবস্হা করা হয়েছে হাত ধোয়ার। এমন অবস্থায় তাদের কাজ-কর্মেও কোনো বিরতি দেয়নি কোম্পানিগুলো। দেশের দুর্যোগপূর্ণ এ সময়ে চা-বাগানগুলো বন্ধ রাখলে তা সবার জন্যই উপকারী হতো বলে জানান তারা।

মনিপুর চা-বাগানের চা শ্রমিক মিলি রায় বলেন, সরকার সারাদেশে নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ১০ দিন ছুটি দিয়েছে। অথচ আমাদের চা-বাগান কর্তৃপক্ষ সেই নির্দেশের বাইরে। আমাদের ছুটিছাটা নেই, নিরাপত্তার ব্যবস্থাও নেই। 

আরেক শ্রমিক সুনিতা বলেন, অনেক বাগানে ছুটি রয়েছে, কিন্তু আমাদের নেই। আমরা এই সময় যে কাজ করছি, তার জন্য বাড়তি কোনো হাজিরাও পাবো না।

কয়েকজন চা শ্রমিক বলেন, আমাদের কাজের জন্য লাইন চৌকিদারের মাধ্যমে বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে চৌকিদার নির্মল বাউরি বলেন, আমরা বড় সাহেবের হুকুম পালন করি। আমাদের যা বলা হয়, তা পালন করতে হয়। সবার ছুটি থাকলেও আমাদের ছুটি নেই।

মনিপুর চা-বাগানের ব্যবস্হাপক জাফর ইকবাল বলেন, চা-বাগান চা সংসদ ও মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ পালন করছে। মন্ত্রণালয় থেকে ছুটি ঘোষণা করা হয়নি, তাই কাজ চলছে।

নিরাপত্তার প্রশ্নে তিনি বলেন, চা শ্রমিকরা এমনিতেই সচেতন নয়। তারপরও আমি উঠান বৈঠক করেছি, মেম্বার ও ইমাম সাহেবের মাধ্যমে প্রচার চালিয়েছি। হাত ধোয়া ও দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করতে বলেছি। 

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরি বলেন, করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সারাদেশের মতো চা শ্রমিকদেরও এই সরকারি ছুটির অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়ে ইতোমধ্যে শ্রম মন্ত্রণালয় ও চা-বাগান মালিকপক্ষের সংগঠন বাংলাদেশের চা সংসদের কাছে লিখিত আবেদন পাঠানো হয়েছে।

করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার চা-বাগানসমূহে থাকা সব দেশীয় মদের পাট্টা (দোকান) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন কিনা তা জানতে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রাখী আহমদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।