করোনাযুদ্ধে সফল্য দেখাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা

সিলেট মিরর ডেস্ক


এপ্রিল ০৫, ২০২০
০৩:১০ পূর্বাহ্ন


আপডেট : এপ্রিল ০৫, ২০২০
০৩:১০ পূর্বাহ্ন



করোনাযুদ্ধে সফল্য দেখাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা
করোনা পরীক্ষায় ৬৭টি ভ্রাম্যমাণ ইউনিট । এমন পরীক্ষা কেন্দ্র আছে যেগুলোতে গাড়ি থেকে বের না হয়েই নমুনা দেয়া সম্ভব

মহামারি করোনা ভাইরাসে নাজেহাল প্রায় পুরা বিশ্ব। ভয়াবহ এই ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে বিশ্বের বাঘা বাঘা দেশগুলোও। এ0 পরিস্থিতিতে করোনা ভাইরাস রোধে দক্ষিণ আফ্রিকার পদক্ষেপ গ্রহণ ও এগুলোর বাস্তবায়ন বিশ্বের অন্যান্য আক্রান্ত দেশে আশার সঞ্চার করেছে।

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে দক্ষিণ আফ্রিকায় লকডাউনের এক সপ্তাহ পার হয়েছে। ইতিমধ্যে সেদেশে ৪৭ হাজার লোককে পরীক্ষার পাশাপাশি ৬৭টি ভ্রাম্যমাণ পরীক্ষা ইউনিট চালু করা হয়েছে। সেখানে এমন কিছু পরীক্ষা কেন্দ্র আছে, যেগুলোতে গাড়ি থেকে বের না হয়েই নমুনা দেয়া সম্ভব। খুব শীঘ্রই দেশটি দৈনিক ত্রিশ হাজার লোকের করোনা পরীক্ষা করানোর সক্ষমতা অর্জনে এগিয়ে যাচ্ছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এসব জানা যায়।

ভাইরাসটির বিস্তাররোধে বিশ্বের বহু দেশের তুলনায় দক্ষিণ আফ্রিকা খুব দক্ষতা ও দ্রুততার সাথে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। কোভিড-১৯ রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা একজন দুর্দান্ত নেতার মত অবদান রেখেছেন। শান্ত, স্থির ও সহানুভূতিসম্পন্ন এই প্রেসিডেন্ট করোনা রোধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে ও বেসরকারী খাতে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তায় কালবিলম্ব করেননি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জিওলি মখিজে তার ঐকান্তিক ও উদ্যমী কার্যক্রম দিয়ে বৈশ্বিক প্রশংসা কুড়িয়েছেন। প্রতিদিনের ব্রিফিংয়েও তার ধৈর্য ও জ্ঞান প্রশংসিত হয়েছে। সব মিলিয়ে বিকাশমান গণতান্ত্রিক দেশটি তাদের বিশাল প্রতিকূলতা বেশ ভালোভাবেই সামাল দিয়ে যাচ্ছে।

তবে দেশটিতে করোনারোধের কার্যক্রমে সবকিছুই যে ইতিবাচক তা নয়। দেশটিতে লকডাউন লঙ্ঘন করলে কারাদণ্ড কিংবা বড় অঙ্কের অর্থ জরিমানা গুণতে হয়েছে লোকজনকে। তিন সপ্তাহের লকডাউন বাস্তবায়নে সেনাবাহিনী হিংস্র হয়ে উঠেছে।

বাণিজ্যিক রাজধানী জোহানেসবার্গসহ অন্যান্য এলাকায় সড়কে বেসামরিক লোকজনের অপমান করা ও পেটানো হচ্ছে। এমনকি কোথাও কোথাও লোকজনকে গুলি করার মতো ঘটনাও ঘটেছে। সর্বোপরি, বিশ্বের কঠোরতম লকডাউনের এক সপ্তাহ পার করে দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জিওলি মখিজে বুধবার বলেন, ‘এখন যে পরিস্থিতিতে আছি, তা হলো ঝড়ের আগে শান্ত অবস্থা। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যাও দ্রুত বাড়বে। বিপর্যয় নেমে আসার আগে আগাম সতর্কতা থাকবে না।’

দক্ষিণ আফ্রিকার দরিদ্র, জনবসতিপূর্ণ গ্রামগুলোতে কার্যকর স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বাস্তবায়নে জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। অনেকেরই আশঙ্কা, ভাইরাসটি এখনও বিপর্যয় নিয়ে আসতে পারে।

দক্ষিণ আফ্রিকায় এই আগাম কঠোর পদক্ষেপগুলোর প্রকৃত লড়াই সামনে পড়ে আছে। দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রতিকূলতা দেশটিকে করোনাযুদ্ধের কোন পক্ষে দাঁড় করিয়ে দেয় সেটাই এখন দেখার বিষয়। কেননা, বিশ্বের সবচেয়ে অসম সমাজ ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে। দরিদ্র মানুষকেই লড়াই করে যেতে হয়। করোনা ভাইরাসে দক্ষিণ আফ্রিকায় এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ৪০০ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন পাঁচজন।

 

এএফ/০৮