ত্রাণ দেননি চেয়ারম্যান, কারণ দর্শানোর নির্দেশ জেলা প্রশাসকের

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি


এপ্রিল ১১, ২০২০
১০:০৬ অপরাহ্ন


আপডেট : এপ্রিল ১১, ২০২০
১০:০৬ অপরাহ্ন



ত্রাণ দেননি চেয়ারম্যান, কারণ দর্শানোর নির্দেশ জেলা প্রশাসকের

করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার সুনামগঞ্জ জেলার সব উপজেলার ইউনিয়ন ও পৌরসভায় অসহায় মানুষদের ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার পরও এখনও সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের হতদরিদ্ররা সহায়তা পাননি। এর মধ্যে  সদর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নসহ জেলার সব উপজেলায় দ্বিতীয় দফা সহায়তার বরাদ্দ বণ্টন শেষে তৃতীয় দফা ত্রাণের প্রস্তুতি চলছে। কিন্তু রহস্যজন কারণে জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত মোহনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. নূরুল হক এখনও ইউনিয়নের সাড়ে ৪শ মানুষকে রহস্যজনক কারণে ত্রাণ সহায়তা দেননি।

প্রথম কিস্তির পণ্য কেনার জন্য সরকার যে নগদ বরাদ্দ দিয়েছিল, সেই বরাদ্দও বণ্টন হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে, দ্বিতীয় দফা ত্রাণ বণ্টন হয়েছে মর্মে জেলা প্রশাসক বরাবরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসমিন নাহার রুমা প্রত্যয়ন দিয়েছেন বলে জানা গেছে। ত্রাণ বিতরণ না করেই কিভাবে তিনি বিতরণ হয়েছে মর্মে প্রত্যয়ন দিয়েছেন, এ নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

এদিকে এ ঘটনা অবগত হয়ে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ওই ইউপি চেয়ারম্যানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানোর নির্দেশনা দিয়েছেন।

জানা গেছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে অসহায় মানুষের আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সরকার তাদেরকে প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় ত্রাণ দিয়েছে। তৃতীয় দফা ত্রাণের বরাদ্দও দিয়েছে। এখন সেগুলো বিতরণের প্রস্তুতি চলছে। তৃতীয় দফা ত্রাণের তালিকা করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

ইতোমধ্যে জেলার ৮৮টি ইউনিয়নের মধ্যে সবগুলোতেই দ্বিতীয় দফা ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। সদর উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়ন বাদে সবগুলোতেই ৩-৪ দিন আগে বিতরণ শেষ হয়েছে। কিন্তু মোহনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূরুল হক এখনও গরিবদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেননি। এছাড়া প্রথম দফা ত্রাণের নগদ সহায়তাও বিতরণ হয়নি বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে আজ শনিবার (১১ এপ্রিল) সকালে অবগত হয়ে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসমিন নাহার রুমাকে ওই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানোর নির্দেশনা দিয়েছেন। কেন শহরতলির ইউনিয়ন হওয়ার পরও সেখানে ত্রাণ বিতরণ করেননি, সে বিষয়ে চেয়ারম্যানের ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছেন তিনি।

এ বিষয়ে মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. জাকির হোসেন বলেন, কয়েকদিন আগে আমরা দ্বিতীয় দফা ত্রাণ পেয়েছি। ত্রাণ পাওয়ার পর আমি চেয়ারম্যান মহোদয়কে সেগুলো বিতরণ করার জন্য অনুরোধও করেছি। তিনি কেন বিলম্ব করছেন আমি জানি না। আজ ইউএনও ম্যাডাম আমার কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে আমি বলেছি এখনও ত্রাণ বিতরণ হয়নি।

এ ব্যাপারে জানতে ইউপি চেয়ারম্যান মো. নূরুল হকের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

আর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসমিন নাহার রুমার সরকারি মোবাইল ফোনে কল দিলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, আমি সকালে বিষয়টি অবগত হওয়ার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে বলেছি। অসহায় মানুষের জন্য দেওয়া সরকারি ত্রাণ নিয়ে কোনো অনিয়ম সহ্য করা হবে না।