করোনার মাঝে মাধবপুরে বেড়েছে মাদক চোরাচালান

মাধবপুর প্রতিনিধি


এপ্রিল ১৪, ২০২০
০২:৩৮ পূর্বাহ্ন


আপডেট : এপ্রিল ১৪, ২০২০
০২:৩৮ পূর্বাহ্ন



করোনার মাঝে মাধবপুরে বেড়েছে মাদক চোরাচালান

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকার মাদক ব্যবসায়ীরা অভিনব কৌশলে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের মাদক চোরাচালান। বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের প্রভাবে সবাই এখন ঘরে অবস্থান করছে, যানবাহন চলাচল সীমিত করা হয়েছে, তাই রাস্তাঘাট ফাঁকা। প্রশাসন ও সচেতন মহল করোনার ঝুঁকি এড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে। আর এই সুযোগে মাদক চোরাকারবারিরা নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করে অনেকটা প্রকাশ্যেই মাদকের চোরাচালান শুরু করেছে।

এ ব্যাপারে সীমান্তবর্তী এলাকায় মাদক নির্মূলের লক্ষ্যে গড়ে তোলা সংগঠন বনগাঁও ইয়ুথ ক্লাবের সভাপতি মো. এনামুল ইসলাম বলেন, বনগাঁও ইয়ুথ ক্লাব শুরু থেকেই মাদকের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে ছিল, এখনও মাদক নির্মুলে বদ্ধপরিকর। আমাদের ক্লাবের আপ্রাণ চেষ্টায় বনগাঁও ও এর আশেপাশের এলাকা থেকে মাদক প্রায় নির্মূল হয়ে গিয়েছিল। বেশ কয়েকজন চিহ্নিত মাদক চোরাকারবারি আত্মসমর্পণ করতে চেয়েছিল। কিন্তু ইদানিং করোনাভাইরাসের বিস্তারে প্রশাসন ও ক্লাব করোনা সচেতনতায় নজর দেওয়ায় মাদক চোরাকারবারিরা আবারও চড়াও হয়েছে। তারা বিভিন্ন কৌশলে আগের চেয়ে বেশি উদ্যমী হয়ে ভারত থেকে বিভিন্ন রকমের অবৈধ মাদক চোরাচালান করছে। করোনাভাইরাসের কারণে আমরা নিজেরাও খুব বেশি কিছু একটা করতে পারছি না। তাছাড়া স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি তাদেরকে পূর্ণ সহায়তা দিচ্ছে। আমরা এক ভাইরাস রোধ করতে গিয়ে মরণঘাতী অন্য ভাইরাস প্রবেশের অবাধে সুযোগ করে দিতে পারি না। এমতাবস্থায় বনগাঁও ইয়ুথ ক্লাবের পক্ষ থেকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। তারা যেন এ বিষয়ে অনতিবিলম্বে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

মাধবপুর উপজেলা আদিবাসী সমিতির সভাপতি সাইমন মুর্মু বলেন, সীমান্তবর্তী তেলিয়াপাড়া চা-বাগানে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে বহিরাগত লোকজনের বাগানে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তারপরও মোটরসাইকেল নিয়ে অপরিচিত লোকজন বাগানে আসছে মাদক পাচার ও সেবন করার জন্য। সবচেয়ে ভয়ের ব্যাপার হচ্ছে, ভারতে করোনার প্রভাবে লকডাউন চলছে। সেখানে অনেকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। ভারত থেকে যে মাদক আসছে, তার সঙ্গে করোনাভাইরাসও চলে আসতে পারে।

জানা গেছে, বাংলাদেশের মাদক চোরাচালানের প্রধান কয়েকটি এলাকার মধ্যে মাধবপুর একটি। টেকনাফসহ অন্যান্য এলাকায় প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থার কারণে মাদক প্রায় নির্মূল হওয়ার পথে, কিন্তু মাধবপুরে মাঝে-মধ্যে কিছু ধরপাকড় করা হলে সাময়িক আত্মগোপনে থেকে পরিস্থিতি বুঝে আবার মাদক পাচার শুরু করে সীমান্তবর্তী এলাকার মাদক ব্যবসায়ীরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তেলিয়াপাড়া ক্রীড়া চক্রের একজন সদস্য জানান, মাদক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা খুব দ্রুত জামিনে মুক্ত হয়ে আবার মাদক চোরাচালান শুরু করে দেয়। পরে টাকা দিয়ে সবকিছু ম্যানেজ করে মামলা থেকে বেঁচে যায়। তাই তারা কোনো কিছুর ভয় পায় না। মাদক নির্মূল করতে হলে প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। সাধারণ মানুষ এসব মাদক চোরাকারবারীর বিরুদ্ধে কিছু বলার সাহস পায় না। কারণ অনেক প্রভাবশালী লোক এদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়।

এসএম/আরআর