নবীগঞ্জে ব্যাংকগুলোতে মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব

আনোয়ার হোসেন মিঠু, নবীগঞ্জ


এপ্রিল ২০, ২০২০
০১:০২ পূর্বাহ্ন


আপডেট : এপ্রিল ২০, ২০২০
০১:০২ পূর্বাহ্ন



নবীগঞ্জে ব্যাংকগুলোতে মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর লক্ষ্যে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিল সরকার। দেশের পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে ৪ এপ্রিল থেকে আবার ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। তবে সাধারণ ছুটির মধ্যেই হবিগঞ্জের নবীগঞ্জের বেসরকারি ব্যাংকগুলো খোলা থাকায় গ্রাহকরা টাকা উত্তোলন করতে ভিড় করছেন। আর এতে মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব।

আজ রবিবার (১৯ এপ্রিল) সকালে টাকা উত্তোলন করতে আসা গ্রাহকরা একে অপরের সঙ্গে ঠেলা-ধাক্কাসহ ভিড় করতে দেখা গেছে। শহরের শেরপুর সড়কেইসলামী ব্যাংক ও ওসমানী সড়কের উত্তরা ব্যাংকের সামনে করোনাভাইরাস সতর্কতায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা তো দূরের কথা, মাস্কও দেখা যায়নি অনেকের মুখে।

এদিকে দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দিনে দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। থেমে নেই মৃতের সংখ্যাও। এরই মধ্যে এমন কঠিন পরিস্থিতিতে ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহকদের গা ঘেঁষে ঠেলাঠেলি ও ধাক্কাধাক্কির বিষয়টির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে নবীগঞ্জ পৌরবাসীর মধ্যে।

এ ঘটনায় নবীগঞ্জ পৌরসভার সচেতন নাগরিকরা মনে করছেন, অসচেতন পরিবেশ এভাবে চলমান থাকলে করোনার প্রভাব থেকে রেহাই পাবে না নবীগঞ্জ পৌরবাসীসহ উপজেলার মানুষ।

বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, সাধারণ ছুটি শুরুর আগেই গ্রাহকরা প্রয়োজনীয় টাকা উত্তোলন করতে এসেছেন। ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়নি। সীমিত আকারে সরকারি ছুটির দিনগুলো ব্যতীত সাধারণ ছুটির দিনগুলোতে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ব্যাংকের লেনদেন চলবে। ব্যাংক বন্ধ হবে বেলা ২টায়। সাধারণ ছুটির আগেই বেশিরভাগ গ্রাহক ২০ হাজার থেকে এক লাখের মধ্যে টাকা উত্তোলন করছেন।

রবিবার নবীগঞ্জ শহরের বিভিন্ন ব্যাংকে দেখা গেছে গ্রাহকদের লম্বা লাইন ও গা ঘেঁষে অবস্থান। প্রত্যেক গ্রাহক একপ্রকার আতঙ্কিত হয়েই ব্যাংকে টাকা তুলতে এসেছেন। সাধারণ ছুটিগুলোতে ব্যাংক খোলা থাকলেও দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে তারা চিন্তিত বলে জানান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন গ্রাহক বলেন, লম্বা ছুটিতে ব্যাংক খোলা থাকলেও বাসা থেকে বের হওয়াটা বড় ঝামেলার। তাই প্রয়োজনীয় কিছু টাকা উত্তোলনের সিদ্ধান্ত নিলাম। এটিএম বুথ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি টাকা উঠানো ঝামেলা। এছাড়া ব্যাংকে টাকা থাকবে কি না এ নিয়েও চিন্তায় আছি। সারাদেশ লকডাউন হয়ে গেলে তখন তো আরও বড় বিপদে পড়ব।

আব্দুল মতিন নামের একজন ব্যবসায়ী জানান, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কম-বেশি সবাই উদ্বিগ্ন। কিছু ব্যবসায়িক লেনদেন আছে। তাই ব্যাংকে টাকা তুলতে এসেছি।

ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক নবীগঞ্জ শাখার ম্যানেজার মুহিত চক্রবর্তী বলেন, গ্রাহকরা হয়তো মনে করছেন, সারাদেশ সামনে লকডাউন হয়ে যাবে, তাই গ্রাহকরা অতিরিক্ত টাকা উত্তোলন করছেন। আমাদের ব্যাংকেও দীর্ঘ সারি ছিল।

ইসলামী ব্যাংক নবীগঞ্জ শাখার ম্যানেজার কায়সার আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে ব্যাংকের অন্যান্য কর্মচারীরা সাংবাদিকদের ব্যাংকে প্রবেশে বাধা দেন এবং গ্রাহকদের ঠেলা-ধাক্কার বিষয়ে কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করেন।

এছাড়াও ইসলামী ব্যাংক নবীগঞ্জ শাখার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 

এএইচ/আরআর