দোয়ারাবাজারে কিশোরীর অনশন, সালিশের নামে লোকসমাগম

দোয়ারাবাজার প্রতিনিধি


এপ্রিল ২২, ২০২০
১১:০৮ অপরাহ্ন


আপডেট : এপ্রিল ২২, ২০২০
১১:০৮ অপরাহ্ন



দোয়ারাবাজারে কিশোরীর অনশন, সালিশের নামে লোকসমাগম

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে ধর্ষণের অভিযোগে ছেলের বাড়িতে কিশোরীর অনশনের ঘটনায় সালিশের নামে গ্রাম্য মাতব্বররা তুলকালাম কাণ্ড ঘটিয়েছেন। আজ বুধবার (২২ এপ্রিল) সকালে অভিযুক্ত ছেলের বাড়িতে সামাজিক দূরত্ব উপেক্ষা করে ব্যাপক লোকসমাগম ঘটিয়ে সালিশের আয়োজন করা হয়। তবে প্রায় দুই ঘন্টাব্যাপী সালিশে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের কোনো সুরাহা দিতে পারেননি গ্রাম্য মাতব্বরা। এ নিয়ে এলাকাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

ঘটনা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের জুমগাঁও (ইসলামপুর) গ্রামের প্রবাসী আবদুল মান্নানের পুত্র আবু তালেব (১৮) সম্প্রতি একই গ্রামের ১২ বছর বয়সী এক কিশোরীকে ডেকে তার বসতঘরের বাথরুমে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক নারী গ্রামবাসীর কাছে সাক্ষী দিতে চাইলে অভিযুক্তের পক্ষের লোকজন ওইদিন সন্ধ্যায় তাকে মারধর করতে উদ্যত হন এবং সাক্ষ্য না দিতে তাকে হমকি প্রদান করেন। পরে ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলে গতকাল মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) বিকেলে কিশোরী ছেলের বাড়িতে অবস্থান নেয়।

এ ঘটনায় আজ বুধবার সকালে বিষয়টি আপস নিষ্পত্তি করে দেওয়ার লক্ষ্যে সালিশে বসেন গ্রাম্য মাতব্বররা। ওইদিন সকালে সালিশের নামে শত শত লোক জড়ো হলে উপেক্ষিত হয় স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারি নির্দেশনা।

স্থানীয় ইউপি সদস্য খোরশেদ আলম বলেন, মেয়েটি ধর্ষণের অভিযোগ এনে ছেলের বাড়িতে আশ্রয় নিলে এলাকাজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ছেলের পক্ষ মেয়েকে মেনে নিতে রাজি না হওয়ায় বিষয়টি আরও জটিল হয়। আমরা সালিশ বিচারের মাধ্যমে সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করেছি। বিষয়টি আপসে নিষ্পত্তির মাধ্যমে সমাধানের জন্য বসলে গ্রামের লোকজন এমনিতেই জড়ো হয়ে যায়।

গ্রাম্য মাতব্বর আলা উদ্দিন, সাবেক ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম, আবদুল হাই ও মনসুর আলী জানান, তারা সমাধানের চেষ্টা করেছেন, কিন্তু ছেলের পক্ষ কোনোভাবেই মেনে নিচ্ছে না। অপরদিকে মেয়েও ছেলের বাড়ি থেকে বের হতে রাজি হচ্ছে না। 

তবে আরেক সূত্র জানিয়েছে, মেয়ে ও ছেলের বয়স কম হওয়ায় অতি গোপনে মাতব্বরদের যোগসাজসে বিয়ের প্রস্তুতি চলছে।

বাংলাবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জসিম মাস্টার এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ছেলে-মেয়ের অভিভাবককে ডেকে এনে বাল্য বয়ের কোনো প্রস্তুতি যাতে না নেওয়া হয়, এ ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছি। তবে আজকে সালিশ বিচারের নামে জনসমাগমের বিষয়টি কেউ আমাকে জানায়নি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোনিয়া সুলতানা বলেন, সালিশ বিচারের নামে এত লোকসমাগম হওয়া উচিত নয়। আমি বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলব।

 

এইচএইচ/আরআর