হাওরে চলছে দ্রুত ধান কাটা, এ পর্যন্ত বৃষ্টি আশির্বাদই

বিশেষ প্রতিনিধি


এপ্রিল ২৬, ২০২০
০৭:২৫ অপরাহ্ন


আপডেট : এপ্রিল ২৬, ২০২০
১০:০০ অপরাহ্ন



হাওরে চলছে দ্রুত ধান কাটা, এ পর্যন্ত বৃষ্টি আশির্বাদই

ছবি- বিশেষ প্রতিনিধি

সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলের নিচু জমিতে কিছুটা জলাবদ্ধাতা সৃষ্টি হয়েছে সম্প্রতি সময়ের বৃষ্টিপাতে। তবে বৃষ্টির এই পানি এখন পর্যন্ত আশির্বাদ হয়ে আছে হাওরাঞ্চলের কৃষকদের জন্য। হাওরের কাটা ধান সহজে পরিবহনের সুযোগ করে দিয়েছে এই বৃষ্টি বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। তারা এখন নৌকা যোগে কাটা ধান জাঙ্গালে নিয়ে আসতে পারছেন সহজে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের আবহাওয়া পূর্বাভাস ও বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, ২৪ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত মেঘালয়, বরাক ও আসামে ভারী বৃষ্টিপাতের যে আশঙ্কা করা হয়েছিল তার গতি অন্যদিকে চলে গেছে। তাই হাওরাঞ্চলের বদলে পার্বত্য এলাকায় বৃষ্টিপাত হতে পারে। অন্যদিকে সুনামগঞ্জের প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি এখনও বিপৎ সীমার অনেক নিচে রয়েছে। শনিবার সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ১.২৮ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ২২ মিলিমিটার। 

সুনামগঞ্জে গতকাল শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত থেমে থেমে হাল্কা বৃষ্টির সঙ্গে দমকা বাতাস ছিল। তবে আজ রবিবার এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত বৃষ্টি না থাকলেও আকাশে মেঘের উপস্থিতি রয়েছে। গতকাল ধান কাটা, মাড়াই ও শুকানো কিছুটা বিঘিœত হলেও আজ পুরোদমে কাজ চলছে। ধান কাটার সঙ্গে মাড়াই ও শুকানোর কাজও চলে সমানে। জেলা প্রশাসনের মনিটরিং টিম ১১ উপজেলায় ধান কাটা পর্যবেক্ষণ করে কৃষক ও শ্রমিকদের ধানকাটায় উৎসাহ জুগিয়েছে। 

সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে শনিবার জেলায় গড়ে ৪৩ ভাগ জমির ধান কাটা হয়ে গেছে। এর মধ্যে হাওরে ৫৪ ভাগ এবং হাওরের বাইরে ১১ ভাগ। বাইরের জেলার ১০ হাজার ৭০০ শ শ্রমিকের পাশাপাশি স্থানীয় শ্রমিক, স্বেচ্ছাসেবীরা ধান কাটছেন হাওরে। তাছাড়া সরকার প্রদত্ত ১১৪টি কম্বাইন হার্ভেস্টর এবং ১১৭টি রিপার মেশিনও হাওরের উঁচু এলাকার ধান কাটছে। আগামী ৩ মে’র মধ্যে হাওরের সম্পূর্ণ বোরো ফসল কাটা শেষ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইর রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমানুর রাজা চৌধুরী বলেন, আমাদের ধর্মপাশা উপজেলায় ৫০ ভাগেরও বেশি ধান কাটা হয়ে গেছে। তবে এখন কিছু বৃষ্টিপাতে হাওরের নিচু এলাকায় পানি জমেছে। সেই পানিতে কাটা ধান সহজে নৌকা করে পরিবন করা যাচ্ছে। এতে কৃষকের কষ্ট কিছুটা কমেছে। তবে বৃষ্টিপাত বেশি হলে অবশিষ্ট ফসল ঝূকির মুখে পড়বে।

সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. সফর উদ্দিন বলেন, হাওরের ধান কাটা থেমে নেই। পাহাড়ি ঢলের ঝূকির মুখে বাইরের শ্রমিক, স্থানীয় শ্রমিক, স্বেচ্ছাসেবী এবং মেশিনে ধান কাটা চলছে। আগামী ৩ এপ্রিলের মধ্যেই হাওরের পুরো ফসল কাটা হয়ে যাবে।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সবিবুর রহমান বলেন, বৃষ্টির গতি অন্যদিকে ঘুরে গেছে। তাই সুনামগঞ্জের বদলে পার্বত্য এলাকায় বৃষ্টিপাত হতে পারে। তবে বৃষ্টির পানি বা ঢলের পানিতে যাতে বাধগুলো সুরক্ষিত থাকে সেজন্য পিআইসিগুলোকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

 

এসএস-০১/এএফ-০২