কমলগঞ্জে গৃহবধূকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি


এপ্রিল ২৬, ২০২০
০৯:১৩ অপরাহ্ন


আপডেট : এপ্রিল ২৬, ২০২০
০৯:১৩ অপরাহ্ন



কমলগঞ্জে গৃহবধূকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের নোয়াগাঁও গ্রামের গৃহবধূ তিন সন্তানের জননী সেলিনা বেগম গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেননি। পরিকল্পিতভাবে শারীরিক নির্যাতনের পর তাকে হত্যা করে তার মরদেহ গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের বড় ভাই আশিক মিয়া।

শনিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৩টায় গৃহবধূর তিন সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে কমলগঞ্জ প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আশিক মিয়া বলেন, আমার ছোট বোন সেলিনা বেগমকে (৩৫) উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের মনু মিয়ার সঙ্গে বিয়ে দেই। বিয়ের পর থেকে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল প্রতিবেশী একটি পরিবারের সঙ্গে। এ বিরোধ চলাবস্থায় বোনের জামাতা মনু মিয়া মারা যান। তার মৃত্যুর পর তিন সন্তান নিয়ে স্বামীর ঘরে বসবাস করছিলেন সেলিনা। গত ১৫ এপ্রিল সকাল ৭টার দিকে তার সন্তানদের নাস্তা করিয়ে একটি ফোন পেয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যান সেলিনা। গ্রামের অনেকেই তাকে যেতে দেখেছেন। পরে সেলিনার বাড়ি ফিরতে দেরি হওয়ায় স্বামীর পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজার জন্য বাড়ি থেকে বের হন। পরে সকাল ৯টার দিকে খবর পাওয়া যায়, পার্শ্ববর্তী পদ্মছড়া রাবার বাগানে ৯৪ নম্বর সেকশনের চা শ্রমিকরা একটি রাবার গাছের সঙ্গে পা মাটিতে লাগানো গলায় ওড়না দ্বারা ফাঁস লাগানো অবস্থায় এক নারীর লাশ দেখতে পেয়েছেন। সংবাদ পেয়ে সরেজমিনে গিয়ে তার লাশ শনাক্ত করেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পরবর্তীতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যসহ এলাকার গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ এবং আমি সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছাই।

সংবাদ সম্মেলনে আশিক বলেন, ঘটনার পর স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল আহাদ ঘটনাটি কমলগঞ্জ থানার পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আমার বোন সেলিনা বেগমের লাশ রাবার গাছ থেকে নামিয়ে লাশের সুরতহাল প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। লাশের ময়নাতদন্ত শেষে লাশ আমাদের বাড়িতে এনে দাফনের জন্য গোসল দেওয়ার সময় তার শরীরের গোপন অঙ্গসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন দেখে পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিদের অবগত করা হয়।

তিনি বলেন, আমার বোন আত্মহত্যা করার প্রশ্নই ওঠে না এবং আত্মহত্যার মতো কোনো ঘটনার পরিস্থিতি সংসার/পরিবারে সৃষ্টি হয়নি। তার এলাকায় একটি পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে আমার বোনের পারিবারিক বিরোধ চলছিল। ঘটনার পরবর্তীতে লাশের গায়ে আঘাতের চিহ্ন এবং এলাকায় এ নিয়ে কানাঘুষা দেখে আমাদের সন্দেহ আরও ঘনীভূত হচ্ছে এবং প্রতীয়মান যে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে প্রতিপক্ষরা আমার বোনকে শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা করেছে বলে অপপ্রচার করছে। আমার বোনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। ফোনের কল লিস্ট যাচাই করা হলে অনেক কিছু বেরিয়ে আসবে।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর পুলিশ ইউডি মামলা দায়েরের পর থেকে স্থানীয় একটি মহল ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে এবং পুলিশি তদন্ত এবং পিএম রির্পোট ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে তৎপরতা চালাচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের জন্য পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান।

 

এসডি/আরআর