করোনার থাবায় বিপর্যস্ত হবিগঞ্জের স্বাস্থ্যসেবা

সাইফুর রহমান তারেক, হবিগঞ্জ


এপ্রিল ২৭, ২০২০
০৯:৫৬ অপরাহ্ন


আপডেট : এপ্রিল ২৭, ২০২০
০৯:৫৬ অপরাহ্ন



করোনার থাবায় বিপর্যস্ত হবিগঞ্জের স্বাস্থ্যসেবা

করোনার থাবায় হবিগঞ্জের চিত্র এখন ভয়াবহ। এরই মাঝে জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৮ জন। এর মধ্যে ১৭ জনই স্বাস্থ্য বিভাগের। তিন ডাক্তার আর সুই নার্সসহ স্বাস্থ্য বিভাগের রয়েছেন আরও ১২ জন। এরই মাঝে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে হবিগঞ্জ আড়াইশ শয্যার আধুনিক জেলা সদর হাসপাতাল। স্থগিত রয়েছে উপজেলা পর্যায়ের আরও দু'টি হাসপাতালের কার্যক্রম।

ডাক্তার-নার্সসহ ১৭ কর্মকর্তা-কর্মচারী আক্রান্ত হওয়ার পর গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১০টায় জেলা সদর হাসপাতালটি লকডাউন ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। যে কারণে জেলার ৩৩ লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসাসেবা গ্রহণে দেখা দিয়েছে বিশাল বিপর্যয়ের আশঙ্কা।

এর আগে চিকিৎসক ও নার্স করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় গত ২১ এপ্রিল লাখাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ২৫ এপ্রিল চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। একদিকে করোনাভাইরাসের আতঙ্ক, অন্যদিকে চিকিৎসাসেবায় বিপর্যয়। দুই মিলিয়ে আতঙ্কে সাধারণ মানুষ।

হবিগঞ্জের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুখলেছুর রহমান উজ্জ্বল জানান, বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে জীবাণুমুক্তকরণ ও অন্যান্য আনুসাঙ্গিক কারণে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে। তবে করোনা ট্রায়াজ কর্ণার ও আইসোলেশন ইউনিটের সেবা চালু থাকবে। জনস্বার্থ বিবেচনায় জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমাদের হাসপাতালের স্টাফ কম থাকার কারণে চিকিৎসার জন্য বিকল্প কোনো স্থান নির্ধারণ করা হয়নি। তবে শিগগির তা করা হবে।

জানা গেছে, গত ১১ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ থেকে হবিগঞ্জে আসা এক ব্যক্তির নমুনায় করোনা পজেটিভ আসে। এরপর ২০ এপ্রিল এক চিকিৎসক ও এক নার্সসহ ১০ জন, ২১ এপ্রিল একজন নার্সসহ ২ জন, ২২ এপ্রিল ৫ জন, ২৩ এপ্রিল স্বাস্থ্যকর্মীসহ ৩ জন, ২৪ এপ্রিল চিকিৎসকসহ ৫ জন, ২৫ এপ্রিল চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও ৪ ম্যাজিস্ট্রেটসহ ২১ জন এবং ২৬ এপ্রিল এক এ্যাসিল্যান্ড এর করোনা পজেটিভ এসেছে। সব মিলিয়ে হবিগঞ্জে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৮ জনে।

অন্যদিকে হবিগঞ্জ আড়াইশ শয্যার আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালের প্যাথোলজি বিভাগে কর্মরত ৩ জনের মধ্যে ২ জন আক্রান্ত হওয়ায় করোনার নমুনা সংগ্রহের কাজ করবেন এখন থেকে মাত্র একজন। স্টাফ কম থাকার কারণে ডেপুটেশনে আনাও সম্ভব হচ্ছে না। যে কারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই কাজটিতে ব্যাঘাত ঘটবে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান।

তিনি জানান, করোনা ইউনিটে ১২ জন ডাক্তার, ১৬ জন নার্স ও ৪ জন সহকারী দিয়ে চলছে চিকিৎসাসেবা। তাদের মধ্য থেকে কেউ যদি করোনায় আক্রান্ত হয়ে যান, তাহলে পড়তে হবে বিপাকে।

 

এসআর/আরআর